নাম তার পালোয়ান। খাওয়া, চলাফেরা আর গর্জন সবকিছুতেই যেন তারই ছাপ।
এমনিতে শান্ত স্বভাবের হলেও অপরিচিত মানুষ দেখলেই গর্জন শুরু করে বলে তার নাম ‘পালোয়ান’ রেখেছেন খামার মালিক। পাবনার চাটমোহর উপজেলার পার্শ্বডাঙ্গা ইউনিয়নের মহেলা দক্ষিণপাড়া গ্রামের আব্দুল্লাহ আল মাসুদ তার খামারে লালন পালন করছেন এই পালোয়ানকে। ৩০ মণ ওজনের পালোয়ানের দাম হাঁকা হয়েছে ১৫ লাখ টাকা।
পুরো শরীর চকচকে কালো রঙের। পেটের দিকে, লেজের গোছা ও পেছনের দুই পায়ের ক্ষুর সাদা রঙের। ইতিমধ্যে সাধারণ মানুষের নজর কেড়েছে এই ‘পালোয়ান’ গরু।
আসন্ন কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে গরুটিকে দেশীয় পদ্ধতিতে মোটাতাজা করেছেন খামারী মাসুদ।
সোমবার দুপুরে সরেজমিনে খামারে গিয়ে কথা হয় খামার মালিক আব্দুল্লাহ আল মাসুদের সাথে। তিনি জানান, ছয় বছর ধরে গরুর খামার করেছেন। দুই বছর আগে উপজেলার বোঁথড় গ্রামের একটি খামার থেকে এক লাখ ২০ হাজার টাকায় গরুটি কেনেন তিনি। তারপর থেকে গত দুই বছর ধরে গরুটি লালন পালন ও দেশীয় খাবার খাইয়ে মোটাতাজা করেন। খামারী মাসুদের দাবি, বর্তমানে চার বছর বয়সী গরুটির ওজন বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০ মণ। কোরবানী উপলক্ষ্যে গরুটি বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। ইতিমধ্যে কয়েকজন ব্যাপারী বাড়িতে এসে পালোয়ানকে দেখে ৯ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম বলেছেন। ১৫ লাখ টাকায় বিক্রি করতে পারলে কিছু লাভ হবে বলে জানান মাসুদ।
খামারী মাসুদ আরো জানান, প্রতিদিন দুই বেলা প্রায় ১২ কেজি খাবার খায় তার পালোয়ান। এর মধ্যে রয়েছে গমের ভূষি, ধানের গুড়া, খেসারী, জব, ভুট্টা, শুকনো খড়, কাঁচা ঘাস। প্রায় সাড়ে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকার খাদ্য লাগে পালোয়ানের। কোনো ধরনের অসাধু মেডিসিন ব্যবহার করা হয়নি। মাসুদ, তার স্ত্রী ও এক ভাই মিলে পালোয়ানকে লালন পালনের কাজে ব্যস্ত থাকতে হয়।
এদিকে, পালোয়ানের খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
আশপাশের এলাকা থেকে অনেকেই গরুটি দেখতে যাচ্ছেন। কেউ পালোয়ানের সাথে ছবি তুলে ফেসবুকে দিচ্ছেন। গরু দেখতে আসা সাইদ আলী ও আবীর হোসেন জানান, বড় আকৃতির গরুর কথা শুনে দেখার আগ্রহ হয়েছিল। তাই দেখতে আসছি। দেখে মনে হচ্ছে চাটমোহরে এত বড় সাইজের গরু আর নেই। আমরা ছবি তুলে ফেসবুকে দিয়েছি, অনেকে নানারকম মন্তব্য করছে দেখে ভালই লাগছে।
চাটমোহর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ মহির উদ্দিন জানান, আমরা খামারীদের উৎসাহিত করি মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে গরু মোটাতাজা করতে। কারণ বেশি বড় আকৃতির গরু সবাই কিনতে পারেন না। অনেক সময় বিক্রি না হলে খামারীরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। তারপরও প্রাণী সম্পদ বিভাগ সবসময় খামারীদের পাশে আছে। বিভিন্নভাবে পরামর্শ, ভ্যাকসিন দেয়া হয়। খামারী মাসুদের গরুটিও আমরা
দেখেছি সুস্থ্য, সবল আছে।