নাটোরে অটোরিক্সা চুরির ঘটনায় সালিসের নামে এক ব্যক্তিকে আটকে রেখে ৩০ হাজার টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে আওয়ামীলীগ ও যুবলীগ নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। গ্রেফতারকৃতরা হলোনাটোর পৌর আওয়ামী লীগের ৮নং ওয়ার্ডের সাধারণ স¤পাদক নাজমুল ইসলাম ও তেবাড়িয়া ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি সাইফুল ইসলাম।
বুধবার বিকালে তাদের তেবাড়িয়া এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়। অপরদিকে এছাড়া অটোরিক্সা চুরির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে বাগাতিপাড়া উপজেলার মাছিমপুর গ্রামের মৃুত আসাদুল ইসলামের ছেলে স্বপন ইসলাম ওরফে আশিককেও গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানায়, নাটোর সদর উপজেলার পাইকপাড়া (পুটিয়াপাড়া এলাকার) এলাকার আলীমুদ্দিনের ছেলে আফজাল হোসেন সোমবার (১৫ জুন) বিকেল ৫টার দিকে আটোরিক্সায় যাত্রি নিয়ে পুঠিয়া বাজারে যায়। যাত্রি নামিয়ে চা দোকানে বসে চা খেয়ে ফিরে এসে দেখে তার অটোরিক্সা যথাস্থানে নেই। অফজাল বুঝতে পারে তার অটোরিক্সাটি চুরি হয়ে গেছে।
এদিকে বুধবার বাগাতিপাড়া উপজেলার দয়ারামপুর বাজার এলাকা থেকে একটি ব্যাটারি বিহীন অটোরিক্সা নিজের অটোর পিছনে বেধে নিয়ে নাটোর শহরের দিকে আসছিল আশিক। আফজাল হোসেল খবর পেয়ে তার লোকজন নিয়ে নাটোর শহরতলির জংলি এলাকায় অবস্থান করে। আশিক ওই অটোরিক্সা নিয়ে জংলী এলাকায় পৌঁছিলে আফজাল ও তার লোকজন তাকে আটক
করে।
এসময় আওয়ামীলীগ নেতা নাজমুল ও যুবলীগ নেতা সাইফুল বিষয়টি নিয়ে সালিস করেন। সালিসে কাগজ পত্র দেখে তার অটোরিক্সাটি আফজালের বলে প্রমানিত হলে তাকে অটোরিক্সা ফেরত দেন। এসময় আফজাল তার ওই অটোরিক্সার ব্যাটারী অথবা ব্যাটারীর মুল্য হিসেবে টাকার দাবি করে। কিন্তুু আশিক কোন টাকা না দিলে তাকে পুলিশে দেয়ার কথা বলে আফজালকে বিদায় করা হয়।
পরে আওয়ামী লীগ নেতা নাজমুল ও যুবলীগ নেতা সাইফূল মিলে আশিককে ধরে তেবাড়িয়া এলাকায় নিয়ে আসে। এক পর্যায়ে তারা মোবাইল ফোনে আশিকের মা শেফা খাতুনের কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবী করে । তারা শেফা খাতুনকে টাকা দিয়ে ছেলে আশিককে ছাড়িয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন। কিন্তুু শেফা খাতুন টাকার যোগার করতে না পেরে বিষয়টি নাটোর থানা পুলিশকে জানান। পুলিশ বুধবার বিকালে তেবাড়িয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে আশিককে উদ্ধার করে এবং নাজমুল ও সাইফুল কে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে আসিকের মা শেফা খাতুন বাদী হয়ে নাজমুল ও সাইফুল সহ আরো কয়েকজনকে অভিযুক্ত করে চাঁদাবাজীর অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। অপরদিকে অটো চুরির অভিযোগে আফজাল হাসেন বাদী হয়ে আশিককে অভিযুক্ত করে অপর একটি মামলা দায়ের করেন।
আশিক জানায়, দুইদিন ধরে দয়ারামপুর বাজারের পাশে ব্যাটারী বিহীন অটোরিক্সাটি পড়ে থাকতে দেখে সে ওই অটোরিক্সা তার অটোর পিছনে বেধে টেনে নিয়ে নাটোর শহরে আসছিল। পথে তারা চুরির অভিযোগ তুলে তাকে আটকে টাকা দাবী করে।
নাটোর থানার ওসি জাহাঙ্গীর আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, দুটি পৃথক মামলায় তিনজনেকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে।