করোনা পরিস্থিতিতেও রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের নির্মাণ কাজ স্বাভাবিক নিয়মে সিডিউল অনুযায়ী এগিয়ে চলেছে। শুক্রবার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বিষযটি নিশ্চিত করে আরো বলেন, প্রতিটি বিষয়ে স্বাস্থ্য বিধি মেনে কাজ হচ্ছে। এরমধ্যেই কাজের যথেষ্ঠ অগ্রগতি হয়েছে। দেশি-বিদেশি প্রায় ৮ হাজার ইঞ্জিনিয়ার, বিশেষজ্ঞ, কর্মকর্তা-কর্মচারী বর্তমানে এই প্রকল্পে নিরলসভাবে কাজ করছেন। গত ৪ঠা জুন আরো ১৯৬ জনের একটি রাশিয়ান দল বাংলাদেশে এসেছে। স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী এদের ১৪ দিন কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। রাশিযায় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বাংলাদেশের ৭০ জনের একটি দল প্রশিক্ষণ শেষ করে এদের সাথেই দেশে ফিরেছেন। এরাও কোয়ারেন্টিন শেষ করার পর কাজে যুক্ত হবেন। ডিসেম্বরের শেষ দিকে প্রকল্পের মূল যন্ত্র রিয়্যাক্টর প্রেসার ভ্যাসেল স্থাপনের টার্গেট করেই কর্মযজ্ঞ পরিচালনা হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর জানান, নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করার চ্যালেঞ্জ নিয়ে প্রকল্পের কাজ অব্যাহত রয়েছে। গত ৬ই জুন থেকে প্রথম ইউনিটের রিয়্যাক্টর ভবনের ইনার কন্টেইনমেন্ট (আইসিডাব্লিউ) এর ঢালাইয়ের কাজ শুরু হয়েছে। ইনার কন্টেইনমেন্টের (অভ্যন্তরীণ কন্টেইনমেন্ট) এটা তৃতীয় ধাপ। জুনের মধ্যে এই ধাপের কাজ শেষ হবে। এরপর চতুর্থ অর্থাৎ শেষ ধাপ ৩৪.৫ মিটার থেকে ৩৮.৫ মিটারের কাজ শুরু হবে। এই ইনার কন্টেইনমেন্টের কাজ শেষ হওয়ার পর এরই উপরে ডুমস স্ট্যাকচার স্থাপন করা হবে। ২০শে ডিসেম্বরের মধ্যে ডুমস স্ট্যাকচার স্থাপনের কাজ শেষ করার টার্গেট রয়েছে। তাই ডিসেম্বরের মধ্যে প্রথম ইউনিটের মূল যন্ত্র রিয়্যাক্টর প্রেসার ভ্যাসেল স্থাপন করা হবে। পাশাপাশি দ্বিতীয় ইউনিটের কাজও সিডিউল অনুযায়ী এগিয়ে চলেছে। বর্তমানে এই প্রকল্পে রাশিয়াসহ দুই সহস্রাধিক বিদেশী ইঞ্জিনিয়র, কর্মকর্তা ও কর্মচারী কাজ করছেন বলে তিনি জানিয়েছেন।
প্রকল্প পরিচালক আরো জানান, এই প্রকল্পের যন্ত্রপাতি নির্মাণ কাজও রাশিয়ায় দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। রুশ রাষ্ট্রীয় পরমাণু শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) যন্ত্র নির্মাণ শাখা এটমএনার্গোমাশ’তে রূপপুরের যন্ত্রপাতি নির্মাণ হচ্ছে। রাশিয়ায় নির্মিত ভারী যন্ত্রপাতি সমুদ্র পথে আসার পর রূপপুরে নদী ও রেলপথে আনা হবে। এজন্য নতুন রেললাইন স্থাপন ও নদী বন্দর নির্মাণের কাজ প্রায় শেষের দিকে।
রাশিয়ার সর্বাধুনিক প্রযুক্তির থার্ড প্লাস জেনারেশনের ভিভিইআর ১২০০ মডেলের দু’টি রিয়্যাক্টর রূপপুর প্রকল্পে স্থাপন করা হবে। সিডিউল অনুযায়ী ২০২৩ সালে প্রথম ইউনিট এবং এবং ২০২৪ সালে দ্বিতীয় ইউনিট থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়ে জাতীয় গ্রীডে সংযুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে।