বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার অলংকারী ইউনিয়নের পেছি খুরমা গ্রামে ঈদের পূর্বের দিন বিকেলে ভাংচুর-লুটপাট হওয়া ব্যবসায়ী বেলাল মিয়া ও তার আতœীয়-স্বজনদের বাড়িগুলো পরিদর্শন করেছেন স্থানীয় এমপি মোকাব্বির খান। বৃহস্পতিবার দুপুরে তিনি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা হাবিবুর রহমান, অলংকারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম রুহেল, স্থানীয় মেম্বার রিয়াজ আলীসহ স্থানীয় সাংবাদিক ও গন্যমান্য ব্যক্তিদের সাথে নিয়ে বাড়িটি পরিদর্শন করেন।এসময় ব্যবসায়ী হাজী বেলাল মিয়ার স্ত্রী আম্বিয়া বেগম বলেন, একাধিক মামলার কারণে বাড়ির পুরুষ মানুষরা বাড়িতে না থাকার কারণে বাড়িতে আমাদেরকে এক অজানা আতংঙ্কের মধ্যেও বসবাস করতে হচ্ছে। রাতে ও দিনের বেলা মোটর সাইকেল কিংবা সিএনজিতে গ্রামের ভিতরের বিভিন্ন সড়কে হেমলেট পরিহিত বহিরাগতরা মহড়া দিচ্ছে। যাকে তাকে মারধর করছে। আবার রাতে আমাদের ঘরের দরজায়ও কারা জানি ধাক্কা দেয়। ওরা কারা আমরা জানি না। আমরা প্রশাসনসহ সরকারের কাছে আমাদের নিরাপত্তা যাচ্ছি।অলংকারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাজমুল ইসলাম রুহেল ও স্থানীয় মেম্বার রিয়াজ আলী বলেন, এলাকায় বহিরাগতদের আনাগুনা বেড়েছে। তাই কারা আইন-শৃংখলা বাহিনীর সদস্য আর কারা বহিরাগত ক্যাডার, তা গ্রামবাসী বুঝতে পারেন না। গতকাল (বুধবার) বিকেলেও মোটর সাইকেল ও সিএনজিতে আসা সাধারণ পোষাকের ১০/২০ জনের একদল ব্যক্তি গ্রামের নিরীহ ৪/৫ জনকে মানুষকে মারধর করেছেন। আমরা বুঝতে পারছিনা এটা কেন হচ্ছে, আর কারাই বা করছে। এলাকার শান্তির জন্য এব্যাপারে আমরা আইন-শৃংখলা বাহিনীর সু-দৃষ্টি কামনা করছি।বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মাওলানা হাবিবুর রহমান বলেন, এলাকার শান্তি-শৃংখলা বজার রাখার জন্য আমাদের সবাইকে বিনয়ী হতে হবে। আর এলাকায় অপরাধমূলক কিছু দেখলে সাথে সাথে স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়টি অবহিত করতে উচিত। আইন-শৃংখলা বাহিনীর ব্যবহার করা সাদা পোষাকের সুযোগ নিয়ে কোন অপরাধী যাতে অপরাধ করতে না পারে সেজন্য আইন-শৃংখলা বাহিনীকে আরো সচেষ্ট হতে হবে।পরিদর্শন শেষে এমপি মোকাব্বির খান স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, ঈদের পূর্বের দিন সাদা পোষাকে আসা র্যা ব সদস্যদের সাথে যে ঘটনা ঘটেছে তা অনাকাঙ্খিত। র্যা বের সদস্যরা নিজেদের পরিচয় দিয়ে দিলে এমনটি হতো না। আর এঘটনাকে পুঁজি করে তৃতীয় পক্ষ কর্তৃক ব্যবসায়ী বেলাল মিয়াসহ তার আতœীয় স্বজনদের বাড়িতে ভাংচুর-লুটপাটের সাথে যারা জড়িত আছেন তাদেরকে সুষ্ট তদন্ত সাপেক্ষে আইনের আওতায় আনা জরুরী। কারণ এখানে কিছু অসাধু ব্যক্তি স্বার্থের জন্য এলিট ফোর্স র্যা ব দায়ী হচ্ছে। তা কোন ক্রমেই আমাদের কাম্য নয়। কারণ র্যা ব নিজস্ব গতিতে দেশের আইন-শৃংখলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখার জন্য ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছে। এছাড়া এলাকার শান্তি ও সমাজের সুন্দরের জন্য পেছি খুরমা গ্রামে চলমান বিরুধ নিস্পত্তি করার জন্য আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। আর চলমান পরিস্থিতিতে গ্রামের নারী-শিশুরা নিজেদের নিরাপত্তায় যাতে নিরাপদে থাকে ও বহিরাগত কেউ যাতে গ্রামে এসে প্রভাব বিস্তার বা বিশৃংঙ্খলা সৃষ্টি করতে না পরে সেজন্য আইন-শৃংখলা বাহিনীকে আরো স্বজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে।
করোনার জের বিশ্বনাথের কাদিপুরেদু’পক্ষের সংঘর্ষে নারীসহ আহত ৪০
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: ‘বাড়িতে করোনা রোগী আছে, তাই ওই বাড়িতে বৈঠক করা যাবে না’ একথার জের ধরে সিলেটের বিশ্বনাথে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের কাদিপুর গ্রামের গয়াছ আলী গং ও রফিক আলীর গংদের মধ্যে এ সংঘষের্র ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষের খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।ইট-পাটকেল ও দেশীয় অস্ত্র-সস্ত্রে সজ্জিত হয়ে দু’পক্ষের মধ্যে চলা সংঘর্ষে পথচারী ও সালিশী ব্যক্তিত্বসহ উভয় পক্ষে অনন্ত ৪০ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে গুরুত্বর আহত দু’জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এলাকাবাসী বিষয়টি আপোষ-মিমাংসার শেষ করার জন্য চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন রামপাশা ইউনিয়নের স্থানীয় মেম্বার নাসির উদ্দিন।সংঘর্ষে রফিক আলীর গংদের পক্ষের আহতরা হলেন- কাদিপুর গ্রামের মৃত হারুনুর রশিদের পুত্র আঙ্গুর আলী (৬০), আশরাফ আলী (১৮), মা নূরুন্নেছা পাতারুন (৫৫), মৃত উস্তার আলীর পুত্র আক্তার হোসেন (২২), মৃত ফজর আলীর পুত্র মুহিব উদ্দিন (২৬) এবং গয়াছ আলী গংদের পক্ষের আহতরা হলেন- একই গ্রামের মৃত রজব আলীর পুত্র বিলাল উদ্দিন (৫০), মৃত ইর্শ্বাদ আলীর পুত্র গয়াছ আলী (৫০), মৃত ফিরোজ আলীর পুত্র ফরিদ আলী (৩০), ইলিয়াছ আলীর পুত্র ইকবাল হেসেন (২০), কামিল আহমদ (১৭), মৃত আরজান আলীর পুত্র গৌছ আলী (৩০)। এদের মধ্যে গুরুতর আহত অবস্থায় ফরিদ আলী ও বিলাল উদ্দিনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আর বাকীরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা গ্রহন করেছেন।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ২০ রমজান রফিক আলীর স্ত্রী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন বলে এলাকায় গুজব ছড়িয়ে পড়ে। পরবর্তিতে নমুনা পরীক্ষা করলে রফিক আলীর স্ত্রীর করোনা রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। কিন্তু ২১ রমজান রফিক আলীর ভাই প্রবাসী আইয়ুব আলী নিজ বাড়িতে একটি বিষয়ে আলোচনা করার জন্য গয়াস গংদের পক্ষের আঙ্গুর আলীকে ডাকেন। কিন্তু আঙ্গুর আলীসহ গ্রামের অন্যরা জানান করোনা রোগীর বাড়িতে বৈঠক করা যাবে না। আর একথা বলার জের ধরে পরের দিন দু’পক্ষের কথা কাটাকাটি সংঘর্ষে রূপ নেয়। এরই জের ধরে গত বুধবার ফের দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এলাকাবাসী বিষয়টি আপোষ-মিমাংশার সমাধান করার জন্য উদ্যোগ গ্রহন করে আজ (বৃহস্পতিবার বাদ যোহর) বৈঠকের তারিখও নির্ধারণ করেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে বৈঠকে বসার পূর্বেই সকালে উভয় পক্ষ আবারও সংঘর্ষে জড়িয়ে পরেন। এতে পথচারী, সালিশী ব্যক্তিত্বসহ উভয় পক্ষের অন্তত ৪০ জন ব্যক্তি আহত হয়েছেন।
বিশ্বনাথে কর্মস্থলে আসার পথিমধ্যে মৃত্যুরকোলে ঢলে পড়লেন মাদ্রাসা শিক্ষক
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: সিলেটের বিশ্বনাথে নিজ কর্মস্থলে আসার পথিমধ্যে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছেন মাওলানা মিজান আহমদ নামের এক মাদ্রাসা শিক্ষক। তিনি উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের তেলিকোনা আলীম মাদ্রাসার প্রবীন শিক্ষক ও স্থানীয় বিলপার (গোবিন্দনগর) জামে মসজিদের ইমাম। বৃহস্পতিবার (২৮ মে) দুপুর আনুমানিক দুইটার দিকে ইউনিয়নের খাজাঞ্চী রেলওয়ে ব্রীজের অদূরে কান্দিগ্রাম-উত্তর বিশ্বনাথ উচ্চ বিদ্যালয় সড়কের পাশে তার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন এলাকাবাসী। জানা গেছে, মাওলানা মিজান আহমদ ওই সময় তার পূর্বের কর্মস্থল বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়নের পাকিছিরি গ্রাম থেকে বর্তমান কর্মস্থল একই ইউনিয়নের বিলপার (গোবিন্দনগর) গ্রামে ফির ছিলেন। সড়কের পাশে মাওলানা মিজান আহমদের লাশ পড়ে থাকার সত্যতা স্বীকার করে বিশ্বনাথ উপজেলার খাজাঞ্চী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যন তালুকদার গিয়াস উদ্দিন বলেন, হুজুরের বাড়ী যেহেতু কুমিল্লায়, তাই উনার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ করায় বিশ্বনাথে সৎ ভাইয়ের উপর হামলা
বিশ্বনাথ প্রতিনিধি :: ‘পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ করায় ও দাবীকৃত চাঁদা না দেওয়ায়’ সিলেটের বিশ্বনাথে সৎ ভাইয়ের হামলায় আহত হয়েছেন আবুল কালাম (২৮) নামের এক রাজমিস্ত্রী। আহত আবুল কালাম উপজেলার সদর ইউনিয়নের জানাইয়া (উত্তর মসুলা) গ্রামের তৈমুছ আলীর পুত্র। বৃহস্পতিবার দুপুরে আবুল কালামের উপর হামলা করে তারই সৎ ভাই আল-আমিন (২৫)। গুরুতর আহত অবস্থায় রাজমিস্ত্রী আবুল কালামকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যান স্থানীয়রা। এদিকে হামলার পর পরই স্থানীয় জনতা হামলাকারী আল-আমিনকে আটক করে থানা পুলিশে সোপর্দ করেছেন। এঘটনায় বৃহস্পতিবার বিকেলে আবুল কালাম বাদি হয়ে ৩ জনকে অভিযুক্ত করে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। জানা গেছে, পিতা-মাতার ভরণ-পোষণ করার কথা বলা হলেও মূলত পৈত্রিক সম্পদ ভাগ-বাটোয়ারা ও দাবীকৃত চাঁদা না দেওয়ার জের ধরে রাজমিস্ত্রী আবুল কালামের উপর হামলা করেছে তার সৎ ভাই আল-আমিন। থানা পুলিশের কাছে এলাকাবাসী কর্তৃক আবুল কালামের উপর হামলাকারী সৎ ভাই আল-আমিনকে সোর্পদ করার সত্যতা স্বীকার করেছেন বিশ্বনাথ থানার অফিসার ইন-চার্জ (ওসি) শামীম মুসা।