প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি) শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ বাড়িতে অবস্থান করায় মেস বা বাসা ভাড়া নিয়ে বিপাকে পড়েছে অসহায় শিক্ষার্থীরা। মেস বাসায় না থাকলেও নিয়মিত মাসিক ভাড়া পরিশোধ করতে হচ্ছে তাদের। তবে মাভাবিপ্রবির অসহায় ও দুস্থ শিক্ষার্থীদের মেস-বাসা ভাড়া মওকুফের জন্য উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসন।
বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা দাবি জানায়, পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭০ থেকে ৮০ ভাগ শিক্ষার্থী নিম্নবিত্ত বা নিম্নমধ্যবিত্ত। বেশির ভাগ শিক্ষার্থী টিউশন বা কোচিং এ ক্লাস নিয়ে নিজেদের পড়ালেখার খরচ চালায়। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ রোধে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী নিজ নিজ বাসায় অবস্থান করছে। দেশের এই ক্রান্তিকালে সকল শিক্ষার্থীদের টিউশন নেই, যার ফলে বাড়ি ভাড়া দেয়া অসম্ভব।
বিশ্ববিদ্যালয়ের এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স এন্ড রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা মানিক শীল জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারন শিক্ষার্থীদের পক্ষ হয়ে আমরা কয়েক শিক্ষার্থী কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করেছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশ্বস্ত করেছে আমাদের। আর্থিকভাবে অসচ্ছল তাদের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ও টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসন সুপারিশ করবে ভাড়া মওকুফের জন্য। বাড়িওয়ালা মওকুফ না করলেও বিশ্ববিদ্যালয় ও টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসন আর্থিকভাবে সহায়তা প্রদান করবে বলে জানানো হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুড টেকনোলজি এন্ড নিউট্রিশনার সাউন্স বিভাগের শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নিবির পাল জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী কোচিং বা টিউশনি করে টাকা উপার্জন করে শুধু নিজের খরচই নয় বাড়িতেও পাঠাতে হয়। তাদের পক্ষে এই সময়ে মেস-বাসা ভাড়া দেয়া সম্ভব নয়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর প্রফেসর ড. মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন অসচ্ছল শিক্ষার্থী যদি বাসা বা মেস ভাড়া দিতে না পারে তাহলে স্ব স্ব বিভাগের চেয়ারম্যানের মাধ্যমে আবেদন করলে সেটার বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ভাড়া বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্থানীয় এমপিসহ প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করেছে। তিনি আরো বলেন, যারা শিক্ষার্থীদের মেস বা বাসা ভাড়া দিয়েছেন তারা অনেকেই ভাড়ার টাকা দিয়ে সংসার চালাতে হয়। সুতরাং তাদের বিষয়টিও বিবেচনা করতে হবে। যদি বাসার মালিকরা ভাড়া মওকুফ না করেন তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, শিক্ষক ও প্রশাসনের অর্থ সহায়তায় ভাড়া পরিশোধ করার উদ্যোগ নেয়া হবে।
মাভাবিপ্রবির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মোঃ আলাউদ্দিন বলেন, শিক্ষার্থীদের মেস-বাসা ভাড়ার বিষয়টি স্থানীয় এমপি ও প্রশাসনকে অবহিত করেছি। এছাড়া মেস ও বাসার মালিকদের অনুরোধও করা হয়েছে যাতে তারা ভাড়া মওকুফ করেন। তারপরও অসহায় অসচ্ছল শিক্ষার্থীরা যদি আবেদন করে তাহলে সেই আবেদন টাঙ্গাইল জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠিয়ে দেয়া হবে ভাড়ার বিষয়টি সমাধানের জন্য।