নাজিম হাসান,রাজশাহী থেকে:
রাজশাগীর বাগমারা উপজেলার সদর ভবানীগঞ্জ বাজারের একজন ব্যবসায়ী ইউসুফ আলী বাদল। প্রায় তিন দশক ধরে তিনি এই বাজারে স্বল্প পরিসরে ছিট কাপড় ও টেইলালিং ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন। গত দেড় মাস ধরে তার দোকানটি বন্ধ রয়েছে। এরই মধ্যে তার হাতের জমানো টাকাও শেষ হয়েগেছে। ডায়বেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও কিডনীসহ কয়েকটি জটিল রোগে আক্রান্ত ইউসুফ পড়েছেন চরম বিপাকে। না পারছেন ওষধ কিনতে না পারছেন সাত সদদ্যের সংসার চালাতে । তাই তিনি বাধ্য হয়ে পেশা পরিবর্তন করে এখন করোনা সামগ্রী বিক্রিতে নেমে পড়েছেন। দিনভর দোকানের সামনে তিনি মাস্ক, হ্যান্ড গ্লোবস, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাথার টুপি সহ বিভিন্ন করোনা বসেছেন। তবে বেচা বিক্রি খুবই কম। স্থানীয় কয়েকটি হাটবাজার ঘুরে ও ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শুধু ইউসুফ আলী নয় । তার মত আরো শতশত ব্যবসায়ীরা এখন কর্মহীন বেকার হয়ে চরম মানবেতন জীবন যাপন করেছন। তারা না পারছেন সরকারি বা কোন দানশীল ব্যক্তির সাহায্য নিতে না পারছেন জীবনের বোঝা বইতে। এই বাজারের আরেক কাপড় ব্যবসায়ী রহিদুল প্রায় একই কষ্টের কথা ব্যক্ত করে বলেন, ভাইরে প্রায় দেড় মাস হল ব্যবসা বন্ধ । ঘর মালিক এসে বার বার ভাড়ার জন্য তাগাদা দিচ্ছে । রহিদুলের মত ভবানীগঞ্জ সহ তাহেরপুর ও মচমইল বাজারের ২০/২২ জন ব্যবসায়ী একই কষ্টের কথা ব্যক্ত করে বলেন, আমরা কেউ ছিট কাপড়, প্লাষ্টিক, হার্ডওয়ার সহ বিভিন্ন সামগ্রীর ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। দুই একজন বাদে অধিকাংশই আমরা অন্যের ঘর ভাড়া নিয়ে ব্যবসা করে থাকি। এখন ব্যবস্ াবন্ধ থাকায় আমরা ঘর ভাড়া ও বিদ্যুত বিল দিতে হিমসিম খাচ্ছি। এ দিকে সরকার বিভিন্ন মানের ব্যবসায়ীদের অল্প সুদে ঋন দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও মফস্বল এলাকার এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়দের কোন লাইসেন্স বা কাগজপত্র না থাকায় তারা এই তারা ওই সুবিধার আওতায় যাবেন কিনা তা নিয়ে সন্দিহান রয়েছেন। তারা জানান এই মহামারীকালীন সময়ে বিকল্প কোন ব্যবসা করার পথও আমাদের বন্ধ। তাদের আক্ষেপ এই এলাকায় চা স্টল ব্যবসায়ী, ভ্যান চালক সহ বিভিন্ন শ্রমজীবি মানুষের তালিকা করে তাদের মাঝে সাহায্য সহযোগিতা দেওয়া হলেও তাদের মত ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের এখনও কোন কিছুই করা হয়নি।