প্রায় সাড়ে চার দশক আগে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যায় সরাসরি অংশগ্রহণের দায়ে ক্যাপ্টেন (চাকরিচ্যূত) আব্দুল মাজেদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। শনিবার (১১ এপ্রিল) দিবাগত রাত ১২ টা ১ মিনিটে কেরানীগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে এই ফাঁসি কার্যকর করা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
শনিবার দুপুরে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসির রেকি করেছে জল্লাদরা। জল্লাদ শাজাহানের নেতৃত্বে এই জল্লাদ টিমটিতে রয়েছেন মনির ও সিরাজ। ফাঁসির প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার আগেই শুক্রবার রাতে তার স্বজনরা কারাগারে শেষ দেখা করেছেন।
এদিকে, নতুন স্থাপিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে এটিই প্রথম ফাঁসি। এই প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যা মামলায় মোট ৬ জনের ফাঁসি কার্যকর হলো। ২০১০ সালের ২৭ জানুয়ারি দিবাগত রাতে সৈয়দ ফারুক রহমান, বজলুল হুদা, এ কে এম মহিউদ্দিন আহমেদ, সুলতান শাহরিয়ার রশীদ খান ও মহিউদ্দিন আহমেদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। রায় কার্যকরের আগেই ২০০১ সালের জুনে জিম্বাবুয়েতে মারা যান আজিজ পাশা। পলাতক রয়েছেন খন্দকার আব্দুর রশিদ, নূর চৌধুরী, রাশেদ চৌধুরী, শরিফুল হক ডালিম ও মোসলেহ উদ্দিন।
এর আগে শুক্রবার বিকালে কারা কর্তৃপক্ষ মাজেদের পরিবারের সদস্যদের কাছে মোবাইলে ফোন করে শেষ দেখা করার তথ্য জানায়। শুক্রবার সন্ধ্যার পর মাজেদের স্ত্রী ডা. সালেহা বেগম, মাজেদের এক ভাই, এক বোন ও একজন ভাতিজাসহ ৫ জন কারাগারে দেখা করেন।
ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, শনিবার সন্ধ্যার পর কারাগারের বন্দী সেলগুলো লক করে দেওয়া হয়েছে। কারাগারের আশেপাশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। করোনা ভাইরাসের কারণে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা হিসাবে যতটুকু সীমাবদ্ধতা আরোপ করা যায়-তাই করা হয়েছে।
গত ৮ এপ্রিল মৃত্যর পরোয়ানা পড়ে শোনানোর পর সব দোষ স্বীকার করে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চান আব্দুল মাজেদ। প্রাণভিক্ষার আবেদনটি নাকচ করে দেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ। প্রাণভিক্ষার আবেদন রাষ্ট্রপতি বাতিল করে দেয়ার পর সেই চিঠিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে পৌঁছায়।