ইবি প্রতিনিধি-জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যাকান্ডের বিচার নিয়ে বাজে মন্তব্য করার অভিযোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এ ঘটনার ২৪ ঘন্টা না পেরোতেই একই বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য এক ছাত্রের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারকে নিয়ে ফের কটুক্তির অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত ঐ ছাত্রের নাম আশিক পাটোয়ারী। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী।
বুধবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের একটি স্ট্যাটাসে তিনি বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচারকে ব্যবসা এবং বঙ্গবন্ধুকে ফেরেস্তারূপে হাজির করা হয়েছে বলে ব্যাঙ্গ বিদ্রূপ করেন। এ ঘটনায় ঐ শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমান নেতারা।
পাঠকদের উদ্যেশ্যে আশিক পাটোয়ারীর স্ট্যাটাস হুবহু তুলে ধরা হলো, “বঙ্গবন্ধুকে ফেরেশতারূপে হাজির করা হইতেছে সর্বত্র, ভালো। তো আপনাদের এখন কর্তব্য হইলো- এই ফেরেশতার আদর্শ অনুসরণ করা। যেহেতু দাবী করেন, আপনারা ফেরেশতার আদর্শের দল, গঠনে-গাঠনে। আদর্শ অনুসরণ মানে হইলো- ফেরেশতার দ্বারা দুর্নীতি, মিথ্যা দূরে থাক কোন পাপ কাজ হওয়াই সম্ভব না, আপনার মধ্যেও এগুলা ফুটে উঠা। অথচ, আপনি হইতেছেন তার পুরা উল্টো! আপনি দুনিয়ার বেবাক পাপ কাজগুলা কইরা ফেরেশতা দ্বারা পাপমুক্তি নিতেছেন। যেন খ্রিষ্টধর্মের ওই বিশ্বাস অনুযায়ী যে, যিশু নিজে মরে তার সকল অনুসারীদের পাপমুক্তির সত্যায়ন করে গেছেন।তো, এখন অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, ফেরেশতার এই সিলটাই সকল দুর্নীতি, অন্যায়, জুলুমের আখড়ায় পরিগণিত হইতেছে। অথচ, হওয়ার কথা ছিল তার পুরো উল্টা! তো এখন যতই বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার নিয়ে হৈহৈ দেখতেছেন, তার অধিকাংশই ব্যবসা, নিজের চলতি কিংবা ভবিতব্য পাপকাজগুলারে বৈধ করা করার প্রচেষ্টা।
তো এখন আমাগো কী করবার আছে? আমরা যারা ফেরেশতা না, স্রেফ বঙ্গবন্ধুরে ভালোবাসি, বঙ্গবন্ধুর হত্যার বিচার চাইতেছি সুদীর্ঘকাল ধইরা- মননে-মানসে, চিন্তায়-স্লোগানে, তারার।’’
এদিকে ওই শিক্ষার্থী ছাত্র মৈত্রীর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য। এ ঘটনার পরে তাকে বহিষ্কার করেছে ছাত্র মৈত্রী। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি আব্দুর রউফ।
এ বিষয়ে ভিসি প্রফেসর ড. হারুন-উর-রশিদ আসকারী বলেন, ‘বিষয়টি অবগত হয়েছি। কটুক্তিকারীর বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুযায়ী দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
উল্লেখ্য, গতকাল মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের বিচারকে ‘কাসুন্দি ঘাটা’ বলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্রী তানজিদা সুলতানা ছন্দকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। একই সাথে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠিত হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ৭ কার্যদিবসের মধ্যে ঐ শিক্ষার্থীকে কারণ দর্শাতেও বলা হয়েছে।