পাবনার চাটমোহর উপজেলার মুলগ্রাম ইউনিয়নের কুবিরদিয়ার গ্রামের একটি ভাড়া বাড়িতে বসবাস কয়েকজন হিজরার। যানবাহন ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে কর্মহীন তারা। করোনাভাইরাস নিয়ে সতর্কতায় কারো বাড়িতে না গিয়ে নিজেরাই রয়েছেন হোম কোয়ারেন্টিনে। দিন কাটছে নিদারুণ অর্থ ও খাদ্য কষ্টে।
ঠিক সেই সেময় তাদের কথা ভেবে বুধবার সকালে ওই গ্রামে গিয়ে কর্মহীন হিজরাদের হাতে খাদ্য সামগ্রী তুলে দিলেন চাটমোহর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব আব্দুল হামিদ মাস্টার। তিনি উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার মোট দেড় হাজার ভ্যানচালক, চা-ষ্টল মালিক, নরসুন্দর (নাপিত) প্রত্যেককে চাল, ডাল, আলু, সাবান, হ্যান্ড স্যানিটাইজার ও নগদ ৫শ’ করে টাকা দেন।
আকস্মিকভাবে খাদ্য সহায়তা পেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন হিজরারা। বাসন্তী হিজরা, রত্না হিজরাসহ অন্যরা জানান, করোনাভাইরাস নিয়ে সরকারের নির্দেশার পর কোথাও যেতে পারছেন না তারা। ঘরে খাবারও ফুরিয়ে গেছে। সরকারি বেসরকারি কেউ হিজরাদের খোঁজও নিচ্ছে না। ঠিক এমন সময় উপজেলা চেয়ারম্যান হামিদ মাস্টার যে পাশে এসে দাঁড়ালেন। এর মাধমে কয়েকদিন তো খাবারের ব্যবস্থা হলো। এতে আমরা খুব খুশি।
শুধু হিজরাদেরই নয়। চাটমোহর উপজেলার ফৈলজানা, হরিপুর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে দিনভর ঘুরে ঘুরে অসহায় মানুষের হাতে খাদ্য সহায়তা তুলে দেন। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে উপজেলার এগারোটি ইউনিয়নের ১ হাজার দেড় হাজার হতদরিদ্র মানুষকে ব্যক্তিগত অর্থায়নে এই খাদ্য সহায়তা দেবেন উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল হামিদ মাস্টার। খাদ্য সামগ্রীর মধ্যে রয়েছে ৫ কেজি চাল, ২ কেজি আলু, ৫০০ গ্রাম ডাল, একটি সাবান ও একটি হ্যান্ড স্যানিটাইজার।
এ বিষয়ে আলহাজ্ব আব্দুল হামিদ মাস্টার বলেন, আমরা সাধারণ মানুষদের ভোটে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি। তাদের সুখ-দু:খ দেখার দায়িত্ব আমাদের। দেশের দূর্যোগের সময় ঘরে বসে থাকা যায় না। অনেক অসহায় দিনমজুর পরিবারের আজ খাবার নেই। তাই মানবিক দিক বিবেচনা করে সাধ্যমতো অসহায় মানুষদের পাশে দাঁড়ালাম। আরো যারা জনপ্রতিনিধি-রাজনীতিবিদ আছেন তাদেরও এগিয়ে আসা উচিত।
চাটমোহরের ভ্যানচালক, চায়ের দোকানদার, সেলুন কর্মচারী, দিনমজুর এমন মানুষদের এই খাদ্য সহায়তা দেয়া হচ্ছে। এসব খাদ্য সহায়তা বিতরণকালে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) ইকতেখারুল ইসলাম, রাজশাহী জুট মিল্স এর পাট বিভাগীয় প্রধান ও উপ-ব্যবস্থাপক (পাট) মোঃ জিয়াউর রহমান, ফৈলজানা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান হানিফ উদ্দিন, হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মকবুল হোসেন উপস্থিত ছিলেন।