নির্মল বড়ুয়া মিলন, রাঙামাটি জেলা প্রতিনিধি :: পার্বত্য চট্টগ্রাম বৈচিত্র্যপূর্ণ একটি অঞ্চল। এখানে পাহাড়, ঝর্ণা, ও সবুজ অরণ্য এ যেন প্রকৃতির বিস্ময়কর লীলাক্ষেত্র। এখানে ভিন্ন ভিন্ন ভাষা-ভাষীর ১৬টি জনগোষ্ঠীর মানুষের বসবাস। পার্বত্য অঞ্চলে বসবাসকারিদের মধ্যে মুসলিম, হিন্দু, বড়–য়া, চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা, তঞ্চঙ্গ্যা, ¤্রাে, পাংখোয়া, লুসাই, চাক, খুমি, গুরখা, অহমিয়া, সাওতাল ও বম্ বেশীরভাগের বসবাস রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলায়।
প্রতিটি জনগোষ্ঠীর ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতি ও ভাষা যেমন আলাদা তেমনি খাওয়া বা রান্না আলাদা আলাদা।
পার্বত্য অঞ্চলে সাপ্তাহিক বাজার বসে, আবার কোথাও কোথাও সপ্তাহে ২ বার বাজার বসে এছাড়া সমতলের ন্যায় শহর এলাকায় প্রতিদিন সকালে এবং বিকালে বাজার বসে। পার্বত্য অঞ্চলে বেশীর ভাগ সাপ্তাহিক বাজারে প্রত্যন্ত এলাকা থেকে পাহাড়ি অধিবাসীরা পাহাড় থেকে সংগ্রহের মাধ্যমে এবং তাদের উৎপাদিত বিভিন্ন মৌসমী ফল, নিজেদের চাষ করা কৃষিপণ্য নৌকায়, ইঞ্জিন বোট, চাদের গাড়ি, ভিন্ন যানবাহনে করে এবং পায়ে হেটে মাথায় করে পাহাড়ি নারী-পুরুষরা ভোর বেলায় সাপ্তাহিক বাজারে বিক্রয়ের জন্য নিয়ে আসে।
বৈচিত্র্যপূর্ণ পার্বত্য অঞ্চলে বৈচিত্র রকমের পণ্যে বা খাওয়ার বিক্রয় করা হয় যেমন : হুয়েং আলু, তিতা বেগুল বিজি, সাবারাং, জুরো আলু, উল (মাশরুম), ফুজি, চালতা, শামুক, বণ্যে ও পালিত শুকরের মাংস, হরিণের মাংস, সেকা মুরগীর মাংস, ব্যাঙ, ছড়া থেকে সংগ্রহ করে আনা কাকড়া ও চিংড়ি মাছ, সিলোন, কুচ্ছা, খাদোয়া, সজারুর মাংস, গুমুরো, কচ্ছপ, বেল, থানকুনী পাতা, কচি কাঁঠাল, ভুট্টো, অড়ল, বিভিন্ন ধরনের পাহাড়ি কচু, মুলার বিচি, শুকনা মাছ, বাঁশ করোল, সেমাই আলু, কলার থোর, রায় শাকের আগা, বাঁশের চুংঙ্গ্যা, আমিলা বিজি, মুলা শাকের ডেক, বাঁশের দাবা, মিষ্টি কুমড়া ফুল, বিভিন্ন রকমের চাকমা পিঠা, ঢেকিতে গুড়া করা হলুদ, হাঙ্গর শুটকি, ধুন্ধা, শুকানো তামাক পাতা, কলকি, ফুলের ঝাড়–, কাঠাঁলের মুচি, ভিন্নী চাউল, গাথো আলু, জুম্ম শুট মরিচ, জুম্ম কাঁচা মরিচ, তিতা করলার শাক, রেঙ্গুনিয়া বাহর পাতা, শুকনা তেতুল, কাচা আমলকি, শুকনা আমলকি, তারা, আমিলা পাতা, ঘলে তাক, বাঁশের চুঙ্গ্যায় তৈরী করা দই, দুধ কচু, ছোট কইটা, মোটর বিজি, কচু শাক, কচুর লথি, ডেঙ্গি শাক, গন্ধবাদালী, সেমাই আলু শাক, কলা গাছে বকলি, মিডা বেগুল বিজি, গন্ধবাদালী, হিলেয়ে শাক, ম্যয়ে শাক, খনাগুলো ও লেলম পাতা ইত্যাদি সহ নাম না জানা বিভিন্ন প্রজাতির বেজালমুক্ত পুষ্টিকর এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্য বাজারে বিক্রয় করে থাকেন পাহাড়ি জনগোষ্ঠীর অধিবাসীরা।