পাবনার ভাঙ্গুড়ায় শিল্পী খাতুন (৪৫) নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছে। রবিবার রাতে পরিবারের সকলের অজান্তে নিজ ঘরে সে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে। রাতেই পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ভাঙ্গুড়া থানা হেফাজতে নেয়। এ ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে। শিল্পী খাতুন উপজেলার মুন্ডুতোষ ইউনিয়নের মেন্দা খালপাট গ্রামের নজরুল ইসলামের স্ত্রী।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, নিহত শিল্পীর স্বামী নজরুল ইসলাম কৃষি কাজ করে পরিবারের ভরণ-পোষণ চালান। তার নিজস্ব তেমন কোনো জমিজমা নেই। অন্যের জমি বর্গা ও ইজারা নিয়ে চাষাবাদ করেন। দুই পুত্র সন্তান ও এক কন্যাকে নিয়ে তাদের অভাব-অনটনের সংসার। অভাবের কারণে গত এক বছর আগে একাধিক এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে ছোট ছেলে বিজু আহমেদকে মালয়েশিয়া পাঠান। সে দেশ থেকে ছেলের পাঠানো টাকা দিয়ে ঋণ পরিশোধ করবেন এমনই ভাবনা ছিল মা-বাবার। কিন্তু সেখানে তেমন ভালো কাজ জোটেনি বিজুর। এতে বাড়িতে টাকা পাঠাতে পারছিলোনা সে। অপরদিকে বড় ছেলে রাজু ট্রলি চালিয়ে নিজের স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কোনমতে সংসার চালানোয় মা-বাবাকে কোনো সাহায্য করতে পারেনি। এ অবস্থায় এনজিওর কাছ থেকে নেয়া ঋণ পরিশোধ করতে ব্যর্থ হয় নজরুল ও শিল্পী দম্পতি। এভাবে এনজিও কর্মীদের চাপে অতিষ্ঠ হয়ে ওঠে তাদের জীবন। এক পর্যায়ে রবিবার বিকালে বাড়িতে এসে শিল্পী খাতুনকে টাকা পরিশোধের জন্য চাপ দেয় এক এনজিও কর্মী। এ কয়েক ঘন্টা পরে শিল্পী খাতুন সকলের অজান্তে নিজের ঘরে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে।
নিহতের ভাতিজা জামাল উদ্দিন বলেন, অভাব অনটনের সংসারে অনেক কষ্টে টাকা জোগাড় করে ছেলেকে বিদেশ পাঠিয়েছিল তার চাচা-চাচি। কিন্তু সেখানে ছেলের ভালো কাজ জোটেনি। এতে সে তার বাবা-মাকে টাকা পাঠাতে পারেনি। ফলে ঋণ শোধ করতে না পেরে এনজিও কর্মীদের চাপে তার চাচি আত্মহত্যা করে।
ভাঙ্গুড়া থানার ওসি (তদন্ত) নাজমুল হক বলেন, আত্মহত্যার ঘটনায় থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের হয়েছে। নিহতের মরদেহ সোমবার সকালে ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা সদর হাসপাতালে পাঠানো হবে।