ভারত সীমান্ত নদী ইছামতি নদীতে বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ শুরু করেছেন স্থানীয় প্রভাবশালী মহল। এ নদীটি এলাকার মানুষ মাছ ধরা থেকে শুরু করে নানা কাজে ব্যবহার করেন। হালদার সম্প্রদায়ের মানুষগুলো এই নদী থেকে মাছ ধরে বিক্রি করে তাদের জীবন চালান। সেই নদীতে হঠাৎ করে স্থানীয় এক প্রভাবশালী আওয়ামীলীগ কর্মী বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ শুরু করেছেন। ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার শ্রীনাথপুর গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে গেছে ইছামতি নদী। স্থানীয়রা বলছেন, বছরের পর বছর এই নদীর সরকারি জায়গা জনসাধারণের জন্য উন্মক্ত ছিল । এখন বাঁধ দিয়ে মাছ চাষ করার কারণে কাউকে সেখানে নামতে দেওয়া হচ্ছে না। হালদারদের মাছ ধরারও কোনো সুযোগ নেই।
ভারত সীমান্তবর্তী শ্রীনাথপুর গ্রামের একাধিক ব্যক্তি জানান, তাদের গ্রামের পাশ দিয়ে ইছামতি নদী বয়ে গেছে। নদীটি ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করে আবার ভারতে চলে গেছে। এই গ্রামেই রয়েছে মহেশপুর বিজিবি’র শ্রীনাথপুর ক্যাম্প। ক্যাম্পের পাশে বাঁধ দেওয়া হয়েছে। বাঁধটি দিয়েছেন শ্রীনাথপুর গ্রামের তোফাজ্জেল হোসেনের পুত্র আওয়ামীলীগ কর্মী শরিফুল ইসলাম। গত ১৫ দিন হলো তিনি হঠাৎ করে ওই নদীর মাঠপাড়া ও হালদারপাড়া এলাকায় দুইটি বাঁধ দেন। মাঝে আনুমানিক ৫০ থেকে ৬০ বিঘা জলাকার এই বাঁধ দিয়ে আটকে ফেলেন। আর ২ সপ্তাহ হলো সেই আটকে ফেলা জলাশয়ে তিনি মাছ ছেড়েছেন।
শ্রীনাথপুর ছাড়াও পাশ^বর্তী শ্যামকুড় গ্রামের মানুষ এই নদী নানা প্রয়োজনে ব্যবহার করেন। তাই দখলকারীকে বাঁধ না দেওয়ার জন্য তারা অনুরোধ করেছেন। হালদারপাড়ার সাধন হালদার জানান, প্রায় ২০টি পরিবারে শতাধিক মানুষ এই নদীর পাড়েই বসবাস করেন। এছাড়াও গ্রামে আরো হালদার সম্প্রদায় রয়েছে। যারা এই নদীতে মাছ ধরে বিক্রি করে সংসার চালান। তিনি বলেন, শরিফুল ইসলামের এক ভাই স্থানীয় ইউপি সদস্য। যে কারণে শরিফুল কোনো কিছুই মানতে চান না। বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন হালদার সম্প্রদায়ের মানুষগুলো। হালদাররা জানান, ‘জাল যার-জল তার’ এটা সরকারের শ্লোগান। সেখানে জেলেদের বঞ্চিত করে নদী দখল করে প্রভাবশালী মাছ চাষ করছেন।
এ বিষয়ে দখলকারি শরিফুল ইসলামের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, নদীতে এখন পানি কম। তিনি খাবার জন্য কিছু মাছ ছেড়ে বড় করছেন। নদীতে মানুষের নামতে নিষেধ এটা ঠিক নয় বলে জানান।
শ্যামকুড় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আমান উল্লাহ জানান, তিনি ঘটনাটি শুনেছেন। তবে দ্রæতই খোজ নিয়ে দেখবেন বলে জানান।
মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) সুজন সরকার জানান, বিষয়টি তিনি অবগত নন। তবে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান।