পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার পাটুলীপাড়া গ্রামে সড়কের ভাঙ্গন রোধে ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা আরসিসি গাইড ওয়াল চার মাস পরেই ধ্বসে পড়েছে। গাইড ওয়ালের সাথে সড়কও ধ্বসে পড়ায় ওই রাস্তায় যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। সড়কের পাশের পুকুরের দীর্ঘ গভীরতা ও ঠিকাদারের নিম্নমানের কাজের কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। সম্প্রতি এলাকাবাসীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে উপজেলা চেয়ারম্যান বাকি বিল্লাহ ও পৌর মেয়র গোলাম হাসনাইন রাসেল সড়কের ভাঙ্গন এলাকা পরিদর্শন করেন।
উপজেলা প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা যায়, গত অর্থবছরে ২২ লাখ টাকা ব্যয়ে উপজেলার সারুটিয়া থেকে পাটুলীপাড়া বাজার পর্যন্ত ৮০০ মিটার সড়ক সংস্কার করা হয়। স্থানীয় ঠিকাদার একরাম হোসেন সংস্কার কাজটি করেন। ওই কাজ শেষ হওয়ার মাস খানেক পরেই পুকুর পাড় সংলগ্ন সড়কের বিভিন্ন স্থানে কার্পেটিংয়ে ফাটল ধরে। তখন ওই অর্থ বছরেই সড়কের ওইসব স্থানে ভাঙ্গন রোধে উপজেলা প্রকৌশল অফিস ১০ লাখ টাকা ব্যয়ে একশ মিটার আরসিসি গাইড ওয়াল নির্মাণের দরপত্র আহŸান করে। পাবনার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আঁখি ট্রেডার্স কাজটি পায়। কিন্তু পরে মোশাররফ হোসেন নামে পাবনার আরেকজন ঠিকাদারের কাছে কাজটি বিক্রি করে দেয় আঁখি ট্রেডার্স। এবছরের মে মাসে গাইড ওয়াল নির্মাণ কাজটি শেষ হয়। কাজটি দেখভাল করেন উপজেলা প্রকৌশল অফিসের উপ-সহকারী প্রকৌশলী আফরোজা পারভীন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, আরসিসি গাইড ওয়ালের ভিত নির্মাণ কাজ নিম্নমানের হওয়ায় কাজ শেষের পর থেকেই গাইড ওয়াল হেলে পড়তে শুরু করে। একপর্যায়ে পুকুরের বেশি গভীর স্থানগুলোতে গাইড ওয়ালের বেশির ভাগ অংশ ধ্বসে পড়ে। এরপর ওইসব স্থানে সড়কও পুকুরে ধ্বসে যায়।
শুক্রবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, গত বছর সংস্কার করা ওই ৮০০ মিটার সড়কের একপাশে অন্তত ১০টি পুকুর রয়েছে। এসব পুকুরের পাড় হিসেবে সড়ক ব্যবহার করছে মালিকরা। বৃষ্টিতে দিনে দিনে সড়কের পাশের মাটি ধুয়ে পুকুরে গিয়ে সড়ক সংকীর্ণ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় সড়ক রক্ষা করতে এ বছর আরসিসি গাইড ওয়াল নির্মাণ করা হয়। কিন্তু নির্মাণের পর থেকেই গাইড ওয়াল হেলে পড়তে শুরু করে। একপর্যায়ে গাইড ওয়াল সহ ১২ ফুট প্রশস্ত সড়কের ছয় ফুট জুড়ে ভেঙ্গে পুকুরে ধ্বসে পড়ে।
পাটুলীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা ও যুবলীগ নেতা মজনুর রহমান বলেন, সড়কের পাশে গভীর গর্ত থাকায় এবং গাইড ওয়ালের ভিত নির্মাণে নিম্নমানের কাজ করায় এই ধ্বসে পড়ার ঘটনা ঘটেছে।
সড়ক নির্মাণের ঠিকাদার একরাম হোসেন বলেন, যত উন্নত মানের কাজই করা হোক পুকুরের কারণে তা টিকবে না। সড়ক টিকাতে চাইলে মালিকদের আগে পুকুরের পাড় নির্মাণ করতে হবে।
এ বিষয়ে কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপজেলা প্রকৌশল অফিসের সদ্য বদলি হওয়া উপ-সহকারী প্রকৌশলী আফরোজা পারভীন বলেন, সড়ক ও গাইড ওয়াল নির্মাণে কোনো অনিয়ম হয়নি। পুকুরের গভীরতার কারণে সড়ক ও গাইড ওয়াল ধ্বসে পড়েছে।