রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ প্রকৌশলী ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে টেনেহিঁচড়ে পুকুরের পানিতে নিক্ষেপ করার ঘটনায় বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরে তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন দাখিল হয়েছে। অধিদপ্তরের মহাপরিচালক রওনক মাহমুদ বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সরেজমিন তদন্ত শেষে শুক্রবার বিকালে কমিটির প্রধান প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। এটি এখন সরকারের উচ্চপর্যায়ে পাঠানো হবে। সেখান থেকেই এ ব্যাপারে পরবর্তী করণীয় ঠিক করে দেয়া হবে। তদন্ত কমিটি কোনো সুপারিশ করেছে কি না জানতে চাইলে মহাপরিচালক বলেন, সুপারিশ তো অবশ্যই করেছে। তবে এটা আমার পর্যায় থেকে প্রকাশ করা যাবে না। সরকারের আরও উচ্চপর্যায় প্রকাশ করবে। এর আগে গত ২ নভেম্বর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষকে টেনেহিঁচড়ে ক্যাম্পাসের ভেতরের একটি পুকুরের পানিতে ফেলে দেয় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। পলিটেকনিক ছাত্রলীগের সদ্য বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা কামাল হোসেন সৌরভকে নিয়মের বাইরে গিয়ে পরীক্ষায় বসার সুযোগ না দেয়ার কারণে এই কাÐ ঘটানো হয়। এ ঘটনায় সেদিনই তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে কারিগারি শিক্ষা অধিদপ্তর। কমিটির প্রধান হিসেবে ছিলেন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পিআইডবিøউ) এসএম ফেরদৌস আলম। অন্য দুই সদস্য হলেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের পরিচালক (কারিকুলাম) ড. নুরুল ইসলাম এবং রাজশাহী মহিলা পলিকেনিক ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ওমর ফারুক। তারা দুই দিন ক্যাম্পাসে অবস্থান করে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলেন,ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং পুকুরের পানির গভীরতা পরীক্ষা করেন। তদন্ত কমিটি ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের একটি টর্চার সেলেরও সন্ধান পায়। তদন্ত কমিটির প্রধান এসএম ফেরদৌস আলম বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন তিন দিনের মধ্যে জমা দেয়ার জন্য আমাদের নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। কিন্তু তিন দিনের মধ্যে সেটা সম্ভব হয়নি। তাই একদিন সময় বৃদ্ধি করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার বিকালেই আমরা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। তবে প্রতিবেদন সম্পর্কে কোনো তথ্য জানাতে চাইন কারিগরি শিক্ষা অধিদপ্তরের এই কর্মকর্তা। এদিকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের হাতে লাঞ্ছনার ঘটনায় অধ্যক্ষ ফরিদ উদ্দিন আহমেদ সাতজনের নাম উল্লেখসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে থানায় হত্যাচেষ্টার মামলা করেছেন। এ পর্যন্ত পুলিশ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তবে মূল অভিযুক্তরা এখনও অধরা। আর এ ঘটনায় ছাত্রলীগ নেতা কামাল হোসেন সৌরভকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে। স্থগিত রয়েছে পলিটেকনিকে ছাত্রলীগের কার্যক্রম। আর ছয় সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের পক্ষ থেকেও ঘটনাটি তদন্ত করা হচ্ছে।