নাটোর প্রতিনিধি
নাটোরের সিংড়ায় লেবু চাষে সফলতার মুখ দেখেছে সানোয়ার। এক সময় হতাশার আধার কাঁটিয়ে আলোর সঁন্ধান পেয়েছে সে। সানোয়ার জানান, ১৯৯৬ সালে মায়ের চিকিৎসার অর্থ ছিলো না, অনেক কষ্টের মধ্য দিয়ে মামার বাড়িতে জাগির থেকে ১৯৯৮ সালে এসএসসি পাশ করি। পরিবারের অভাব অনটনের দিকে তাকিয়ে সংসারের হাল ধরার জন্য বাড়িতে আসি ২০০০ সালে এইচএসসির ফরম ফিলাপের টাকা বাবা দিতে ব্যর্থ হয়। এমতাবস্থায় সংসারের জন্য কিছু করার দায়িত্ববোধ জাগ্রত হয়। অন্যের জমিতে কাজ শুরু করি, তারপর লোনের টাকায় মাড়াই মেশিন কিনে কাজ শুরু করি, কিন্তুু সংসারের বোঝার কারণে হতাশা কাটছিলো না। সানোয়ারের বাড়ি উপজেলার শেরকোল ইউনিয়নের পমগ্রামে। তার পিতা আবুল কাসেম একজন দরিদ্র কৃষক ছিলেন। জানা যায়, ২০১৪ সালে পার্টনারে রাইচ মিল দেন। এভাবে সংসার নিজ কাঁধে নেন। এরই মধ্যে ২০১৬ সালে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে শুরু করেন চায়না লেবু চাষ। প্রায় দেড় বিঘা জমিতে ৬০ হাজার টাকার চাষ শুরু করেন। তারপর থেকে আর তাকে পিছনে তাকাতে হয়নি, সফলতার যাত্রা শুরু সেখান থেকেই। ২০০টি লেবু গাছ থেকে প্রতি বছর প্রায় দুই লক্ষ টাকার লেবু বিক্রি করেন। ২০১৮ সালের শেষের দিকে লেবু গাছে কলম কাটা শুরু করেন। এ বছর প্রায় ২ হাজার কলম কাটেন। ইতোমধ্যে ১৯’শ কলম বিক্রি করেছেন ৫০ টাকা দরে। লেবু চাষ এবং কলম কেটে বিক্রি করে এখন স্বাবলম্বী সানোয়ার। এখন তার সংসারে স্ত্রী, ১ ছেলে, ১ মেয়ে এবং বাবা-মা নিয়ে সুখের সংসার। সংসারে আর কোনো অভাব অনটন নাই। বর্তমানে তার নিজস্ব রাইচ মিল হয়েছে, ৩ বিঘা জমির মালিক হয়েছেন। আগে অন্যের জমিতে কাজ করতে হতো, এখন তাঁর লেবু বাগানে ও শ্রমিক কাজ করে। সানোয়ারের জীবনের হতাশা দূর হয়েছে। তার দেখে পমগ্রামের জহুরুল, আব্দুল আজিজ, আলিম, রাজশাহীর আব্দুল মান্নান, পুঠিমারী গ্রামের মনতাজ, জামাল সহ ২০ জন লেবু চাষে ঝুকে পড়েছে।
উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হারুন জানান, সানোয়ার খুব ভালো চাষী, তার পরিশ্রম তাকে সফলতা এনে দিয়েছে। উপজেলা কৃষি বিভাগ তার পাশে আছে। এই লেবু বারো মাস চাষ হয়, একটা বাগানে শত শত লেবু ধরে, এজন্য চাষ করে লাভবান হওয়া যায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাজ্জাদ হোসেন জানান, চায়না লেবু চাষে স্বাবলম্বী সানোয়ার, তার চাষ দেখে এলাকার অনেকে আগ্রহী হয়েছে। তারাও লেবু চাষ শুরু করেছে।