গোলাপগঞ্জে স্বামীর সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ এনে স্ত্রীর সংবাদ সম্মেলন

গোলাপগঞ্জ(সিলেট) প্রতিনিধি: গোলাপগঞ্জের ঢাকাদক্ষিণ ইউপির দক্ষিণ নগর গ্রামের মরহুম সফিক উদ্দিনের দ্বিতীয় স্ত্রী নুরেছা বেগম স্বামীর সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ার অভিযোগ এনে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) দুপুর ২টায় ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ সম্মেলন কক্ষে নুরেছা বেগমের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তাহার বড় মেয়ে ফাহিমা বেগম।

লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ্য করা হয়, নুরেছা বেগমের স্বামী মরহুম মোঃ সফিক উদ্দিন ঢাকাদক্ষিণ বাজারের একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি গত ১৭ই সেপ্টেম্বর, ২০১৯ইং তারিখে মৃত্যুবরণ করেন। মো: সফিক উদ্দিন মারা যাওয়ার পর তার প্রথম স্ত্রী সুফিয়া বেগম ও তার সন্তানেরা তার স্বামীর সম্পত্তি থেকে তার সন্তানদের বঞ্চিত করতে বিভিন্ন ভাবে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছেন।

তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যে তারা পূবালী ব্যাংক লিঃ ঢাকাদক্ষিণ শাখার ম্যানেজার ইয়াসিন উদ্দিন সোহেলের যোগসাজসে তার স্বামী মরহুম মোঃ সফিক উদ্দিন এর নামীয় চারটি এফ.ডি.আর (এফ.ডি.আর নং- ৩৩৬৯, ৩৩৯০, ৩৩৮১ ও snd ১২) হইতে মোট- ১ কোটি ১৩লক্ষ ৯৪ হাজার ৪শত ৫৩ টাকা তার প্রথম স্ত্রীর সন্তান রুমন আহমদ উত্তোলন করেছেন। এই টাকা উত্তোলনের সময় অত্র ঢাকাদক্ষিণ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুর রহিম সাহেব, ঢাকাদক্ষিণ ইউ,পি ৫নং ওয়ার্ড সদস্য সেলিম আহমদ ও ঢাকাদক্ষিণ বাজার বণিক সমিতির সভাপতি বদরুল ইসলাম জামাল ও ঢাকাদক্ষিণ বাজার বণিক সমিতির ২নং ওয়ার্ড সদস্য সুহেল আহমদ সহ আরো কয়েকজন মুরব্বী পূবালী ব্যাংক লিঃ ঢাকাদক্ষিণ শাখার ম্যানেজারের সাথে সাক্ষাত করেন। তারা ম্যানেজারকে মরহুম সফিক উদ্দিন এর উত্তরাধিকারী শুধুমাত্র প্রথম স্ত্রী ও সন্তানদের মধ্যে প্রাপ্য টাকা বন্টন না করে মরহুম সফিক উদ্দিনরে দুই স্ত্রীর ও ১১ সন্তানের মধ্যে ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক টাকা বন্টন করে দিতে অনুরোধ করেন। এর আগে দ্বিতীয় পক্ষের ছেলে মিহাদ আহমদ গত ২৬সেপ্টেম্বর পূবালী ব্যাংক লিঃ ঢাকাদক্ষিণ শাখার ম্যানেজার বরাবর তার মৃত পিতার এফ.ডি.আর এর টাকা লেনদেন না করতে দরখাস্ত দেন। তাতেও ম্যানেজার কর্নপাত করেন নি। এ টাকা দুই স্ত্রী ও সন্তানদের প্রাপ্যতা অনুসারে বন্টন করতে ব্যাংক ম্যানেজার পরবর্তীতে তাদের কাছে দশ লক্ষ টাকা দাবি করেছেন বলেও তারা লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন।

এছাড়াও ঢাকাদক্ষিণ বাজারে থাকা নুরেছা বেগমের স্বামীর মালিকানাধীন সফিক ট্রেডার্স নামে দুইটি চাউলের দোকান ও তিনটি গোদামে আনুমানিক ৭০-৮০ লক্ষ টাকার মালামাল ছিল। সফিক উদ্দিনের মৃত্যুর পর তার প্রথম স্ত্রীর ছেলে রুমন আহমদ দখল করে রেখেছেন ও মৃত্যুর পর থেকে দোকানের যত আয় তাদের দেয়া হচ্ছে না বলে জানান। এসব বিষয়ে তারা এলাকার মুরব্বিদের জানালে তারাও সমাধান করতে ব্যর্থ হয়। এরপর ঢাকাদক্ষিণ বাজার বণিক সমিতি বরাবরে একটি লিখিত অভিযোগ দিলে ঐ দিন রাতে প্রথম স্ত্রীর ছেলে রুমন আহমদ প্রায় ২হাজার ২শ বস্তা চাউল অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছেন বলে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়। এছাড়াও বাড়ীতে থাকা শফিক উদ্দিনের স্বামীর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি তার প্রথম স্ত্রী ও তার সন্তানরা জোর করে দখল করে রেখেছে।

নুরেছা বেগম আরো বলেন, তার সন্তানদেরকে পিতার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করতে প্রথম স্ত্রী বিভিন্ন ভাবে চক্রান্ত চালিয়ে যাচ্ছে। এমতাবস্থায় তারা স্বামীর স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির ন্যায্য হক পেতে সকলের সহযোগীতা কামনা করেছেন।

সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সফিক উদ্দিনের মেয়ে ফাতিমা বেগম, ফারজানা জান্নাত জিতু, ছেলে মিহাদ আহমদ, আলাবির আহমদ সাইম। ঢাকাদক্ষিণ ইউপি’র চেয়ারম্যান এস এম আব্দুর রহিম, ঢাকা দক্ষিণ বাজার বণিক সমিতির সভাপতি বদরুল ইসলাম জামাল, সেক্রেটারি ও ইউপি সদস্য সেলিম আহমদ, ইউপি সদস্য সেলিম আহমদ, ঢাকাদক্ষিণ বাজার বণিক সমিতির সাবেক সাহাবাজারের ব্যবসায়ী আবুল হাসনাত হাছনু মিয়া প্রমুখ।