যুবলীগের কার্যালয়ে পিয়ন হিসেবে চাকরি পেয়েছিলেন কাজী আনিসুর রহমান। এটি ২০০৫ সালের কথা। সংগঠনের সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরীর ঘনিষ্টজন হওয়ায় ২০১২ সালের কাউন্সিলে তিনি উপ দপ্তর সম্পাদকের পদ বাগিয়ে নেন। কাউন্সিলে দপ্তর সম্পাদকের পদ পূরণ না করায় ছয় মাসের মাথায় পুরো দপ্তরের দায়িত্ব পান আনিস। এরপর আর তাকে পিছনে তাকাতে হয়নি। অবৈধভাবে অঢেল সম্পত্তির মালিক হয়ে যান তিনি। তার বিত্ত বৈভবের বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা। সাংগঠনিকভাবেও তার বিষয়ে খোঁজ নেয়া হচ্ছে।
এই কয়েক বছরে তিনি বিত্ত বৈভবের মালিক হয়েছেন পদ বাণিজ্য ও সরকারি কাজের টেন্ডারের কমিশন নিয়ে। সংগঠনের একাধিক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, আনিস যুবলীগের কার্যালয়ে আসার আগে একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। যুবলীগের দপ্তরের দায়িত্ব নেয়ার পর তিনি প্রথমে ধানমন্ডিতে একটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কেনেন। আড়াই হাজার বর্গফুটের ওই ফ্ল্যাটে থাকা শুরু করেন। পরে ধানমন্ডির ১০/এ সড়কের একটি ফ্ল্যাট কিনে সেখানে থাকা শুরু করেন আনিছ। সূত্র জানায় গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার ভাবড়াসুর ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামে আলিশান বাড়ি, পেট্রোল পাম্পসহ অনেক কৃষি জমি করেছেন আনিস। তার বাবা ফায়েকুজ্জামান সেনাবাহিনীর সৈনিক পদ থেকে অবসরে যান। তিনি অবসরে যাওয়ার পর পেনশনের টাকায় কিছু জমি কিনলেও পরে তা আবার বিক্রি করে দেন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, যুবলীগের পদ পাওয়ার পর থেকেই তাদের ভাগ্য খোলে। এদিকে, অফিস পিয়ন থেকে নেতা, এবং কোটি হওয়া আনিসের বিষয়ে নজরদারি শুরু করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী। একাধিক সূত্র জানায়, তার সম্পদের খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে তার অর্থের উৎস নিয়েও অনুসন্ধান চলছে। যুবলীগের একটি সূত্র জানিয়েছে, ক্যাসিনো কাণ্ড ও সংগঠনের নেতা পরিচয় দেয়া টেন্ডার মুগল শামীমের গ্রেপ্তারের পর কেন্দ্রীয় নেতারা অস্বস্থিতে আছেন। আনিসের বিষয়ে আসা অভিযোগ নিয়ে তারা ক্ষুব্ধ। নেতাকর্মীদের দাবি অনেক ত্যাগী নেতা সারা জীবন সংগঠন করে সাধারণ জীবন যাপন করেন। কিন্তু কিছু সুবিধাভোগীর কারণে শেখ ফজলুল হক মনির হাতে গড়া সংগঠনটি এখন নানা সমালোচনার মুখে পড়েছে।