মো. আখলাকুজ্জামান, গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি.
শ্রেণিকক্ষে নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের পাঠদান করছেন শিক্ষক। সব শিক্ষার্থীই স্কুল ড্রেস পড়া। হঠাৎ বিদ্যালয়ের পিছনের ফটক দিয়ে প্রবেশ করলেন আরো এক শিক্ষার্থী। পড়নে সাদা শার্ট-কালো প্যান্ট। শিক্ষকের অনুমতি নিয়ে শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করলেন তিনি। শেষ বেঞ্চে বসা এই শিক্ষার্থীর বয়স একটু বেশী হওয়ায় বেশ কৌতুহলী হয়ে পড়ে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষকও রিতিমত হতাশ।
এই শিক্ষার্থীকে নিয়েই শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করালেন শিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিক। সময় তখন বেলা ১১টা। এরই মধ্যে বিদ্যালয় জুড়ে হৈ চৈ। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম মিঠু এসে দেখলেন ওই শিক্ষার্থী গুরুদাসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তমাল হোসেন।
জানা যায়, এই কর্মকর্তা মঙ্গলবার প্রথমে নাটোরের গুরুদাসপুর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয় ও পরে বেগম রোকেয়া গার্লস স্কুল এন্ড কলেজ এবং চাঁচকৈড় মধ্যমপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ছদ্মবেশে ঝটিকা অভিযান চালান। তার উপস্থিতি বদলে দিয়েছে বিদ্যালয়গুলোর পরিবেশ।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তমাল হোসেন বলেন, অভিযোগ পেয়েছি- বিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক শিক্ষার্থীদের পাঠদানে অমনযোগী হয়ে পড়েছেন। অথচ একই শিক্ষার্থীদের কোচিং করান ঠিকই। এতে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ব্যহত হচ্ছে। মূলত এসব বিষয় পর্যবেক্ষণের জন্য ছদ্মবেশী ঝটিকা অভিযান চালানো হয়েছে।
তিনি আরো জানান, গুরুদাসপুর সরকারি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে ক্লাস করেছেন। এ সময় শ্রেণিকক্ষের শিক্ষকদের সাথে পাঠদানের কৌশল নিয়ে আলোচনা করেন। এছাড়া বেগম রোকেয়া স্কুল এন্ড কলেজে গিয়ে দেখেন, সড়কে চলাচলকারী যানবাহনের বিকট শব্দে পাশের অষ্টম, নবম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা ক্লাস চলাকালিন সময় শিক্ষকের বক্তব্য শুনতে পায় না। এতে শিক্ষার্থীদের মনোযোগে বিঘœ ঘটে। বিষয়টি তিনি সমাধানের আশ্বাস দেন। এ সময় বিদ্যালয়গুলোতে বাল্যবিয়ে ও উত্ত্যাক্ত রোধে আলোচনা করা হয়। আগামীতে এ অভিযান অব্যহত রাখার অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি।