নাটোরে র‌্যাব ক্যাম্পের সামনে অটোরিকশা, হুইমান হলার, মাহিন্দ্র থেকে যুবলীগ নেতার চাঁদা আদায়ের অভিযোগ

নাটোর প্রতিনিধি- নাটোরে র‌্যাব ক্যাম্পের সামনে প্রকাশ্যে অটোরিকশা ও লেগুনা থেকে যুবলীগ নেতা মিঠুন আলীও তার
লোকজনের বিরুদ্ধে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। নাটোরের বগুড়া বাসষ্ট্যান্ড এলাকা থেকে নলডাঙ্গার পাটুল, বাশিলা ,সিংড়ার কালীগঞ্জ ,বিলদহর, হাতিয়ান্দহ ,নওগাঁর আত্রাই পর্যন্ত চলাচলরত অটোরিকশা থেকে দৈনিক ৫০ টাকা করে চাঁদা আদায় করা হয়। এছাড়া লেগুনা, ও মাহিন্দ্র থেকেও ৫০-১০০ টাকা পর্যন্ত চাঁদা আদায় করা হয়।

অটোচালক মনির ও আব্দুল্লাহ বলেন, যুবলীগ নেতার লোকজনকে টাকা দিলে তারা অটোরিকশায় সিরিয়াল দেয় । টাকা না দিলে তারা কেউ নাটোর -সিংড়া সড়কে অটো চালাতে পারে না। এছাড়াও টাকা না দিলে তাদের অটোরিকশা আটকে রাখা হয় বলেও অভিযোগ করেন।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নাটোর শহরের বগুড়া বাসস্ট্যান্ড থেকে বিভিন্ন সড়কে দুুই শতাধিক অটোরিকশা চলাচল করে। প্রতিদিন এসব রিকশা থেকে ৫০ টাকা ১০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে নাটোর পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মিঠুন আলীর লোকজন। এমনকি রুটপারমিটবিহীন হুইমান হলারকে প্রতিদিন ১০০টাকা করে চাঁদা দিতে হয়। এ হিসাবে, অটোরিকশা, মাহিন্দ্র, হইমান হলার ও লেগুনা থেকে মাসে প্রায় ১৫ লাখ টাকা চাঁদা তোলা হয়।

এই প্রতিবেদকের সঙ্গে কথা হয় অটো থেকে টাকা আদায়ের দায়িত্বে থাকা লাইন ম্যান তোতা,বকুল এবং আলমের সঙ্গে।
তিনি বলেন, প্রতিটি অটো থেকে দূরত্ব ভেদে ৫০ থেকে ১০০ টাকা করে আদায় করা হয়। দিন শেষে ওই টাকা যুবলীগ
নেতা মিঠুন আলরি হাতে হাতে তুলে দেই। এছাড়াও প্রতিটি হইম্যান হুলার থেকে প্রতিদিন ২০০ থেকে ১০০টাকা চাঁদা তোলা হয় ।

হান্নান নামের এক লেগুনা চালক বলেন, তিনি নাটোর থেকে সিংড়ার বিলদহর এলাকা পর্যন্ত লেগুনা চালান। তিনি প্রায় পাঁচ বছর ধরে এই রুটে লেগুনা চালান।শহরের বগুড়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তাকে প্রতিদিন ৫০ টাকা চাঁদা দিতে হয়। যুবলীগ নেতার লোক সোহেল এই টাকা নিয়ে যায়।

মমিন আলী ও করিম মিয়া নামের দুই অটোরিকশা চালকের অভিযোগ, তারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অনেক কষ্টে টাকা আয় করেন। প্রতিদিন অটোরিকশা চালিয়ে যা আয় হয় তা দিয়ে তাদের সংসার চালাতে অনেক সময় হিমশিম খেতে হয়। অথচ যুবলীগ নেতার লোকজন প্রতিদিন তাদের কাছ থেকে ৫০টাকা ও প্রতিমাসে ১০০ টাকা করে চাঁদা আদায় করে বলে অভিযোগ করেন তারা।

একাধিক অটোরিকশা চালকরা অভিযোগ করে আরও বলেন, যুবলীগ নেতার লোকজন স্থানীয় প্রভাবশালী। তাদেরকে নিয়মিত চাঁদা না দিলে অটোরিকশা চালানোই বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর তাদের বিরুদ্ধে র‌্যাব ক্যাম্পে বা থানায় লিখিত অভিযোগ দিলে তো এলাকায় থাকতে দিবে না।

এলাকাবাসী জানান, নাটোর শহরেরর বলারীপাড়া এলাকার মৃত সাহাবুদ্দিনের ছেলে মিঠুন আলী এক সময় শ্রমিকদল নেতাা কামাল হোসেনের পেটুয়া বাহিনীর সদস্য ছিলেন । বিগত বিএনপি -জামাত জোট সরকারের অমলে তাঁর হাতে আওয়ামী লীগ, াত্র ও যবলীগের নেতাকর্মী নির্যাতনের শিকার হয়েছে । ওয়ান ইলেভেনের পর রাতারাতি সে আওয়ামী লীগ বনে যান । পরে সে নাটোর পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড যুবলেিগর সাধারণ সম্পাদক পদটি বাগিয়ে নেন । আওয়ামী লীগ সরকার মাত্র ১০ বছরে শূন্য থেকে কোটিপতি হয়েছেন । বিয়ে করেছেন দুটি ।দুই বউকে নিয়ে তিনি ভাড়া ফ্ল্যাট বাসায় বিলাসী জীবন যাপন করেন । আলাদিনের চেরাগ হাতে পাওয়া এ নেতার মূল ব্যবসা হচ্ছে মাহিন্দ্র, হুইমান হলার ও ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় চাঁদাবাজি। এই খাত থেকে বছরে চাঁদা আদায়ের পরিমাণ ৩ কোটি টাকারও বেশি।

এ বিষয়ে নাটোর পৌরসভার ৩ নংওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মিঠুন আলী বলেন , তিনি কোনভাবেই চাঁদা তোলার সাথে জড়িত নয় । এটা অটোচালকদের নিয়োজিত মাষ্টাররা টাকাটা তুলে থাকে ।

নাটোর পৌর যুবলীগের আহবায়ক এডভোকেট সায়েম হোসেন উজ্জ্বল জানান,এ ধরনের বিষয় তার জানা নেই। তবে তার দলের কেউ চাঁদা আদায়ের সঙ্গে স¤পৃক্ত থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ট্রাফিক পুলিশ নাটোরের টি,আই (পরিদর্শক) বিকর্ণ চৌধুরী বলেন, কোথাও চাঁদাবাজি হয় না। হলে পুলিশ তাদের অবশ্যই গ্রেপ্তার করবে ।
নাটোরের সদ্যযোগদানকারী পুলিশ সুপার লিটন কুমার সাহা জানান,নাটোরে কোন চাঁদাবাজি চলবে না । কেউ চাঁদাবাজি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে । বিষয়টি স¤পর্কে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।