মো. আখলাকুজ্জামান, গুরুদাসপুর প্রতিনিধি.
দেশের ৫১টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত নাটোর জেলার শিক্ষার্থীদের নিয়ে গঠিত সংগঠন “পাবলিক ইউনিভার্সিটি স্টুডেন্টস এ্যাসোসিয়েশন অব নাটোর-বাংলাদেশ (চটঝঅঘ)। নাটোর জেলার যে সকল শিক্ষার্থীরা বাংলাদেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করছেন তাদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২০১৭ সালে চটঝঅঘ নামে একটি সংগঠনের পথচলা শুরু হয়।
সম্প্রতি ওই সংগঠনের আয়োজনে নাটোরের গুরুদাসপুর পৌর সদরের বিলচলন শহীদ সামসুজ্জোহা সরকারি কলেজ ক্যাম্পাসে ‘মেধাবী মুখ মিলনমেলা-২০১৯’ নামে একটি অনুষ্ঠান হয়। এসময় পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি চবি’র তানভীর আনোয়ারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নাটোর-৪ (গুরুদাসপুর-বড়াইগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য ও সাবেক প্রতিমন্ত্রী আলহাজ্ব অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, পরবর্তীতে সাবেক প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস এমপিসহ চারজন উপদেষ্টার স্বাক্ষরে এবং ৫১টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে ৮৩ সদস্য বিশিষ্ট কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক কমিটি অনুমোদিত হয়। উক্ত কমিটিতে সভাপতি হিসেবে মনোনীত হন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের তানভীর আনোয়ার এবং সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মনোনীত হন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলাম রাব্বানী রঞ্জু। সভাপতি তানভীর আনোয়ারের বাসা নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলায় এবং সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী রঞ্জুর বাসা নাটোরের সিংড়া উপজেলায়। এছাড়াও সিনিয়র সহ-সভাপতি ঢাবি’র মজনু আলম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাবি’র রুবাইয়া বিনতে রেজাউল, সাংগঠনিক সম্পাদক পদে জবি’র নাহিদ নয়ন, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক ইবি’র মাসুদ রানা, অর্থ সম্পাদক রাবি’র শাকিল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ইবি’র মোহাম্মদ জিহাদ হোসেন, প্রচার সম্পাদক হাবিপ্রবি’র শিবাব উদ্দিন সুবর্ণ, শিক্ষার্থী বিষয়ক সম্পাদক জবি’র সুমাইয়া সুমি, আইসিটি বিষয়ক সম্পাদক কুয়েটের রোকুনুজ্জামান রাকিব, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বচ্ছ সাহা ও জবির সোহান সায়েফকে পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক মনোনীত করা হয়।
অনুষ্ঠানে সংগঠনের সম্মানিত উপদেষ্টাম-লীদের মধ্যে বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সহ-সভাপতি এ্যাডভোকেট কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি, বিলচলন শহীদ শামসুজ্জোহা সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. রেজাউল করিম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ি শেখ আব্দুস সোবহান, রাবি’র সহকারী অধ্যাপক মো. আমিরুল ইসলাম, কুড়িগ্রাম সরকারি মহিলা কলেজের প্রভাষক মো. সুশান্ত শাহীন রনি, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের এ্যাডভোকেট মো. এসএম শহীদুল ইসলাম সোহেল, প্রকৌশলী জুনায়েদ আহমেদ সৈকত, অডিটর আইনুর রহমান, গুরুদাসপুর উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষক-শিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে কুরআন তেলায়াতের মধ্যদিয়ে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ই আগস্টে নিহত সকলের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে ১মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরে ১২৭ জন ১ম বর্ষের শিক্ষার্থীকে ক্রেস্ট দিয়ে বরণ করে নেয়া হয় এবং কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা ও দরিদ্র শিক্ষার্থীদের মাঝে সংগঠনের পক্ষ থেকে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান করা হয়।
পরিশেষে সভাপতি তানভির আনোয়ার সংগঠনটির উদ্দেশ্যসমূহ তুলে ধরেন- ১. নাটোরের সাবেক-বর্তমান সকল পাবলিকিয়ানদের এক প্লাটফর্মে নিয়ে আসার একটি ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা। ২. দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে নাটোর জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতি গঠনে উদ্বুদ্ধ করা। ৩.সকল বিশ্ববিদ্যালয়ে নাটোর জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতির পরিচয় তুলে ধরা এবং সেই সাথে সুসম্পর্ক বজায় রাখা। ৪. বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স প্রাপ্ত নবীনদের বরণ ও প্রাক্তনদের মধ্যে যারা তাদের পছন্দের জব পাবেন তাদের সংবর্ধনা দেওয়া ও তাদের অনুভূতি শোনা। ৫. এ্যাডমিশনের সময় নাটোর থেকে আগত পরীক্ষার্থীদেরকে প্রত্যেক বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটোর জেলা ছাত্র কল্যাণ সমিতির সাথে পরিচয় করে দেওয়া। ৬. নাটোর জেলায় যে সকল সামাজিক সংগঠন দরিদ্র মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীদের কল্যাণে কাজ করে; সেই সকল সংগঠনের পরিচয় তুলে ধরা। যাতে যাদের সমস্যা তারা যেনো সেখান থেকে সেই সহায়তা নিতে পারে। ৭. গ্রুপের কেউ তার বিশ্ববিদ্যালয় বা অন্য কোথাও থেকে উল্লেখযোগ্য কোনো স্বীকৃতি পেলে বা কেউ তার পছন্দের জব পেলে তাকে অভিনন্দন জানানো। ৮. বিভিন্ন সামাজিক কাজ করার উদ্যোগ নেওয়া; হতে পারে সেটা নাটোরের কোথাও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচী, (পিএসসি, জিএসসি, এসএসসিতে জিপিএ-৫ প্রাপ্তদের সংবর্ধনার আয়োজন, রক্তদান কর্মসূচী, একদিনের জন্য নাটোর শহর পরিষ্কার কর্মসূচী, নিজেরা চাঁদা তুলে পথশিশুদের এক বেলা খাবারের ব্যবস্থা করা, যেকোনো ধরণের জনসচেতনতামূলক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা। ৯. প্রতি বছর পর্যায়ক্রমে প্রতি উপজেলায় “মেধাবী মুখ মিলনমেলা” অনুষ্ঠানের আয়োজন করে সেখানে নাটোরের বিশিষ্ট ব্যক্তিদের আমন্ত্রণ জানানো। ১০. ভবিষ্যতে সংগঠনের একটি স্থায়ী অফিস থাকবে ঢাকাতে। যেখানে নাটোর জেলার বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়ারা একে অপরের সাথে সাক্ষাৎ, বিনোদন ও বিভিন্ন বিষয়ে নিয়ে আলোচনা মাধ্যমে সময় কাটাবে। (আমাদের মধ্য থেকেই একদিন কেউ সচিব, পুলিশ, ডিসি, ডাক্তার, প্রকৌশলী, ব্যাংকার, সাংসদ, বড় কোনো প্রতিষ্ঠানের প্রধান ইত্যাদি হবে)। ১১. সংগঠনের পক্ষ থেকে দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তির ব্যবস্থা করা ইত্যাদি।#