নাটোর প্রতিনিধি
লুঙ্গি আর ফতুয়া পড়ে ডিসি অফিসের নীচতলার বারান্দায় এবং বিকেলে নাটোর ষ্টেডিয়াম পার্কে নিয়মিত ওজন মাপা যন্ত্র নিয়ে চুপ করে বসে থাকেন অশীতিপর বৃদ্ধ আবুল কাশেম। কোন হাক-ডাক নেই তার। আবুল কাশেম যেখানে বসে থাকেন, সে পথে আইনজীবী এবং মক্কেলদের যাতায়াত বেশি। কারও মনে চাইলে ওজন মেপে পাঁচ টাকা দিয়ে চলে যান। আর এভাবেই সপ্তাহে ৫ দিন চলে তার কার্যক্রম।
তবে আবুল কাশেমের ওজন মাপা মেশিন অনেক সময় ঠিক মত রিডিং দেয় না। যার কারনে অনেকে ওজন পরিমাপ করাতে চায় না তার কাছে। আর নতুন আধুনিক যন্ত্র কেনার সামর্থও নেই আবুল কাশেমের।অবশেষে আবুল কাশেমের পাশে দাঁড়ালেন নাটোরের জেলা প্রশাসক মো: শাহরিয়াজ। জেলা প্রশাসনের সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা মনিমুল হক এ নিয়ে তার ফেসবুকে একটি পোস্ট দিলে বিষয়টি তার নজরে আসে। মঙ্গলবার আবুল কাশেম কে আধুনিক ওজন মাপা যন্ত্র জেলা প্রশাসক তার হাতে তুলে দেন। এসময় নাটোর পৌরসভার মেয়র উমা চৌধুরি জলি, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আশরাফুল ইসলাম, সাবেক প্রশাসনিক কর্মকর্তা মনিমুল হক, জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা গোলাম ফারুক সহ অন্যান্যেরা।
জানা যায়, আবুল কাশেমের বাড়ি শহরের বড় হরিশপুর এলাকার। বাড়ীতে স্ত্রী, ছেলে মেয়ে রয়েছে তার। বয়সের ভারে বৃদ্ধ হলেও দীর্ঘদিন ধরে ডিসি অফিসের নীচতলার বারান্দার একটি কনায় ওজন মাপা যন্ত্র নিয়ে চুপ করে বসে থাকে। সপ্তাহে ৫ দিন দিনে সেখানে বসেন। সারাদিন ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় আয় দিয়েই সংসার চলে তার।তবুও শেষ বয়সে ভিক্ষাবৃত্তি বা কারও কাছে হাত পাতেন নি তিনি। ৫টাকায় ওজন মেপে যা আয় আসে সেটাই সংসারের কাজে ব্যায় করেন আবুল কাশেম।
এত কম রোজগারে সংসার কিভাবে চলে এমন প্রশ্নে তাঁর উত্তর ”আ্ল্লায় চালায়”। বেশি কিছু বলতে চান না। সংসারে অন্য সদস্যদের কথা জিজ্ঞেসে করতেই মুখ ঘুরিয়ে চুপ করে থাকেন। মনে হয় অনেক কিছু বলার আছে, না বলার মাঝে।
তবে বৃদ্ধ আবুল কাশেম অনেকের কাছে অনুকরনীয় হতে পারে। শেষ বয়সে অন্য কোন পেশায় না গিয়ে পরিশ্রম করে সংসার চালান। তবে জেলা প্রশাসকের দেওয়া আধুনিক ওজন মাপা যন্ত্র হয়তো তার আয়-রোজগার বাড়িয়ে দিবে। একটু স্বচ্ছল ভাবে চলবে আবুল কাশেম।