রূপপুর পারমাণবিকে আন্তর্জাতিক ‘স্মৃতি উদ্যান’ ইভেন্ট অনুষ্ঠিত

// ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
ঈশ্বরদীতে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের আবাসিক গ্রীন সিটিতে রসাটম প্রকৌশল বিভাগের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয়েছে আন্তর্জাতিক পরিবেশ ও দেশপ্রেম ইভেন্ট ‘স্মৃতি উদ্যান’। বাংলাদেশ এবং হাঙ্গেরীতে প্রথমবারের মতো এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মঙ্গলবার ( ১৪ মে) রসাটমের গণমাধ্যম জানায়, যেসব দেশে পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মান করছে সেখানে তাদের প্রকৌশল বিভাগ নিয়মিতভাবে এই ইভেন্টের আয়োজন করে।

জানা যায়, রসাটম প্রকৌশল বিভাগের এমপ্লয়ী ও স্বেচ্ছাসেবকরা গ্রীন সিটি এলাকায় ২৮টি ফার গাছের চারা রোপণ করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালে যেসকল রুশ এবং বাঙ্গালী আত্মত্যাগ করেন, তাদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে এসব গাছের চারা রোপণ করা হয়।

এতমস্ত্রয়এক্সপোর্টের ভাইস-প্রেসিডেন্ট ও রূপপুর এনপিপি’র রাশিয়ান প্রকল্প পরিচালক আলেক্সি দেইরী মঙ্গলবার জানান, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী হিরোদের আমরা এই ইভেন্ট আয়োজনের মাধ্যমে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করছি। আজকে রোপণকৃত এই বৃক্ষগুলো শুধুমাত্র আমাদের পূর্বপূরুষদের বীরোচিত কাজকেই স্মরণ করিয়ে দেবে না, একই সঙ্গে পরিবেশের উন্নয়নেও ভূমিকা রাখবে। পরিবেশ সুরক্ষার ব্যাপারে রসাটম সর্বদাই যত্নশীল। তাই আমরা বিভিন্ন পরিবেশ উদ্যোগের সঙ্গে নিয়মিতভাবে সহযোগিতা করে আসছি।

তিনি আরও জানান, ভূতপূর্ব সোভিয়েত ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের একটি দীর্ঘ ঐতিহাসিক সম্পর্ক বিদ্যমান। ১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে ধ্বংসপ্রাপ্ত অর্থনীতির পুনঃনির্মানে সোভিয়েত ইউনিয়ন এগিয়ে এসেছিল। স্বাধীনতা পরবর্তীকালে সোভিয়েত নাবিকরা চট্রগ্রাম বন্দরে মাইন অপসারণে কাজ করে এবং বিদ্ধস্থ জাহাজগুলোকে পানির নীচ থেকেও উদ্ধার করে। এটি ছিল বিদেশে পরিচালিত সোভিয়েত ইউনিয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন, যার সম্পর্কে অনেকেরই খুব একটা জানা নেই।

রুশ ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে স্মৃতি উদ্যান ইভেন্ট আয়োজনের সূচনা ঘটে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে আত্মত্যাগকারী যোদ্ধাদের স্মৃতিকে স্মরণ করতে আয়োজিত এই উদ্যোগে সহায়তা করছে রুশ প্রাকৃতিক সম্পদ মন্ত্রণালয় এবং ফেডারেল বন এজেন্সী।

এই উদ্যোগের অধীনে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে শহীদদের প্রত্যেকের উদ্দেশ্যে একটি করে মোট ২ কোটি সত্তর লাখ গাছের চারা রোপণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। প্রত্যেক শহীদের সবুজ স্মৃতিফলক হিসেবে প্রতিটি গাছকে বিবেচনা করা হচ্ছে। এই উদ্যোগের আরেকটি অন্যতম লক্ষ্য হলো, বন সম্পদের রক্ষা এবং পুনরুদ্ধার, যা বিশ্বে কার্বন নিঃসরণ হ্রাসে সহায়তা করবে। রাশিয়াসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রতি বছর এই ইভেন্টের আয়োজন করা হয়। সারাবিশ্বের ৫০টির অধিক দেশের স্বেচ্ছাসেবকরা এই কাজের সাথে জড়িত।