মাহমুদ হাসান রনির জন্য অসাধু ব্যবসায়ীর ঘুম হারাম & সাধু ব্যবসায়ীর আশ্রয়স্থল

// বিশেষ প্রতিনিধিঃ 

গত রোববার ২৮ এপ্রিল জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর পাবনার বর্তমান সহকারী পরিচালক মাহমুদ হাসান রনি’র সাক্ষাৎকার নিতে সিএনএফ টিভি’র চেয়ারম্যান খালেদ আহমেদ সকাল ১০টায় লাইব্রেরি বাজার ডিসি রোডে তার দপ্তরে যান। দেড় বছর তিনি পাবনাতে বদলি হয়ে এসেছেন। এই দীর্ঘ সময় তিনি কি কি অভিযান করেছেন এবং ভোক্তার অধিকার কতখানি সংরক্ষণ করতে পেরেছেন সে বিষয়ে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন 

ওষুধ কোম্পানিগুলো অনেক আগের পুরাতন কাগজপত্র সংরক্ষণ করতো, মালিকগন কাগজ রেনিউ করতেননা, সেক্ষেত্রে ঠিকানা ঠিক থাকতোনা। কোম্পানির সামনে কোন সাইনবোর্ড থাকতোনা। যার দরুন ঠিকানা খুঁজে পাওয়া কষ্টসাধ্য হয়ে যেত। তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক কোন ব্যবস্থা নেয়া যেত না। বিএসটিআইয়ের আওতাভুক্ত কোম্পানিগুলো কাগজ করত না। অভিযান চালিয়ে অনেক অবৈধ স্যালাইন কোম্পানিগুলো সিলগালা করেছি।

বিসিক শিল্প নগরীর ভিতরে যে অবৈধ কোম্পানিগুলো গড়ে উঠেছিল সবকটি এখন বন্ধ। বিএসটিআই ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের অনুমতি নিয়ে, মাত্র দুটি কোম্পানি এখন টিকে আছে। বিসিকের বাইরে যেগুলো আছে তাদেরকে বড় বড় জরিমানার আওতায় এনে বেশিরভাগ নষ্ট স্যালাইন গুলো ধ্বংস ও কোম্পানি সিলগালা করা হয়েছে।   

তিনি আরও জানান বড় বড় কোম্পানি যেমন প্রাণ ও ব্র্যান্ডেড কোম্পানির জুস, আইসক্রীম, শহরতলীসহ বিভিন্ন গ্রাম গঞ্জে অবস্থিত  নকল প্রস্তুতকারক অবৈধ কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে কিছু সিলগালা ও বাকিগুলো বন্ধ করা হয়েছে। বড় বড় অনেক বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে সেবামূলক তালিকা ছিল না।  আইন না মেনে চলার দরুন তাদেরকে আইনের আওতায় নিয়ে আসার পরে তাদের মধ্যে ভীতিসঞ্চার হয় এবং আইন মানা শুরু করে। এখন আপনি শহরের ভেতরে বা বাইরে যে হাসপাতালগুলো আছে সেখানে দেখতে পাবেন কোন টেস্টে কত টাকা চার্জ, কোন ডাক্তারের কত টাকা ভিজিট সেই সেবামূলক তালিকা প্রদর্শন করছে। ঈদের মধ্যে দূরপাল্লার বাস গুলো টিকিটের মূল্য বেশি রাখার জন্য অনেকগুলো বাসকে মোটা জরিমানা করায় এখন সেটা নিয়ন্ত্রণে। শহরে বিভিন্ন প্রান্তে রাস্তার পাশে রেস্তোরাঁ গুলোতে বারবিকিউ যে পদ্ধতিটা চালু আছে দেখা যায় যে রাস্তায় ধোঁয়া ছোরা হচ্ছে। ধুলাবালি গিয়ে খাবারের উপর পড়ছে। তখন তাদেরকে পরামর্শ দেই কিভাবে এই রান্না করতে হবে এবং কখনও কখনও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করি। এখন সেখানে দেখবেন যে পাইপ দিয়ে ধোঁয়াগুলো উপরে উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে এবং খাবারগুলোকে কাঁচের বলয় তৈরি করে নিরাপদে রাখা হচ্ছে। যারা ফুটপাতে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের আইন না মেনে মাংস ঘন্টার পর ঘন্টা খোলা বাজারে বিক্রি করতেন, যেগুলো দুর্গন্ধ হয়ে যেত এবং মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। তাদেরকে প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রশিক্ষিত করাতে এখন সেগুলো নিয়ন্ত্রণ। ঈদের আগে পোশাক ও জুতার বাজারে ইচ্ছেমতো দাম হাঁকানোর একটা প্রবণতা ছিল। তাদের অনেকগুলো দোকানে বড় বড় জরিমানা করে এখন অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছি। রোজার মধ্যে তরমুজের মূল্য সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরে ছিল। সে ক্ষেত্রে ঘন্টার পর ঘন্টা আমি নিজে দোকানে দাঁড়িয়ে থেকে ন্যায্য মূল্যে তাদেরকে বিক্রি করিয়েছি। পাবনার বিভিন্ন অঞ্চলে তার প্রভাব পড়ে পরবর্তীতে দাম নিয়ন্ত্রণে এসেছিল। এই দুর্দান্ত গরমের মধ্যে ফ্যানের বাজারে উল্টাপাল্টা হচ্ছে। যে সকল দোকানদাররা ক্রয়মূল্য তালিকা দেখাতে পারছেন না তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছি এবং সুফলও পাচ্ছি। এয়ার প্লাজা বা এয়ার কর্ণারে যে ফ্যানের দোকানগুলো আছে তারা এখন ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করছে। এছাড়াও সবজির বাজার মাছের বাজারসহ বিভিন্ন বাজারে প্রতিদিন, (সরকারি ছুটির দিন শুক্র শনিবারেও) অভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি।