চাটমোহর ঐতিহাসিক শাহী মসজিদের মূল্যবান ডেক্সি বিক্রির অভিযোগ!

মোঃ নূরুল ইসলাম, চাটমোহর (পাবনা) ঃ

প্রতœতত্ত অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণাধিন পাবনার চাটমোহর উপজেলার ইতিহাস ঐতিহ্যবাহী শাহী মসজিদের ঐতিহাসিক ইতিহাসের সাক্ষী রান্না করার ড্যাক (ডেক্সি) বিক্রি করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এনিয়ে এলাকাবাসীর ও স্থানীয় মুসুল্লিদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

পাবনার চাটমোহরে ৪৪২ বছরের ঐতিহ্য নিয়ে আজও ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছে তিন গম্বুজবিশিষ্ট ‘শাহী মসজিদ’। শাহী মসজিদটি বাংলার মুসলিম স্থাপত্যে একটি নতুন অধ্যায় সংযোজন করে। চাটমোহরের তিন গম্বুজ শাহী মসজিদের শিলালিপিতে এর নির্মাতা ও নির্মাণকাল সম্বন্ধে কোনো বিতর্ক সৃষ্টি হয়নি। ওই শিলাফলকের ফার্সি লিপি থেকে জানা যায়, বিশাল এই মসজিদ, বিখ্যাত সুলতান সৈয়দ বংশীয় প্রধান সৈয়দ আবুল ফতে মুহাম্মদ মাসুম খাঁনের সময় নির্মিত হয়।

কাকশাল গোত্রের সন্তান খান মুহাম্মদ তুর্কি খান ৯৮৯ হিজরি অর্থাৎ ১৫৮১ খ্রিস্টাব্দে মসজিদটি নির্মাণ করেন। শিলালিপি পাঠ, অনুযায়ী অনুমান করা যায়, মাসুম খাঁন নিজেকে সুলতানরূপে ঘোষণা করেন। তিনি নিজে এই উপাধি গ্রহণ করেন। কিছুকালের জন্য পাবনা অঞ্চলে স্বাধীন সালতানাত প্রতিষ্ঠা করেন এবং চাটমোহরে রাজধানী স্থাপন করেন। এছাড়া ক্ষুদ্র আকৃতির যে শিলালিপি মসজিদের সামনে অবস্থিত ইঁদারার ভেতরের দেয়ালে স্থাপন করা ছিল, যা বর্তমানে মসজিদের প্রধান প্রবেশ খিলানে রাখা রয়েছে। মূল শিলালিপিটি রাজশাহীর বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাবাসীর সূত্রে জানা গেছে, মূল্যবান ডেক্সি দুইটি গত ২৪ মার্চ সকালে বিক্রির জন্য বের করে দেন মসজিদ কমিটির সদস্য বরদানগর দাখিল মাদরাসার অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মো. সেলিম হোসেন। পাবনা নিয়ে গিয়ে সেগুলো বিক্রি করা হয়েছে। এলাকাবাসীর দাবি ডেক্সি দু’টি শত বছরের অধিক পুরাতন ও প্রতœতত্ত অধিদপ্তরের সম্পদ।

এবিষয়ে মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা এসএম মোজাহারুল হক বলেন, ডেক্সি দু’টি পুরাতন নয় বা মোগল আমলেরও নয়। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশে তৈরি ডেক্সি দু’টি আমরাই ১৯৯৬ সালে কিনেছিলাম। ডেক্সি দু’টি ফুটা হয়েছিলো। ব্যবহার অনুপযোগি হওয়ায় কমিটির সিদ্ধান্ত ও রেজুলেশনের মাধ্যমে তা ২৬ হাজার নয়শত টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। সে টাকা মসজিদের একাউন্টে জমা করা হয়েছে। বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সহ কমিটির সবাই জানেন।

চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রেদুয়ানুল হালিম জানান, আমি বিষয়টি তদন্ত্র করছি।