// নাটোর প্রতিনিধি
ভাত ছাড়া যেন বাঙালির চলেই না। দুপুরে বাঙালির প্লেটে ভাত থাকবে না তা হতেই পারে না। মাছ, মাংস না থাকলে খাবারের তালিকায় ভাত থাকতেই হবে। ভাতের বিকল্প হিসেবে বাঙালিদের কাছে খাবারের তালিকায় স্থান পায়নি। ভাত খায় না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুবই দুষ্কর। তবে এমনই একজন বিচিত্র মানুষের সন্ধান পাওয়া গেছে নাটোরে।
নাম তার কুদ্দুস প্রামানিক। বয়স ৭৫ বছর। নাটোর সদর উপজেলার রাজিবপুর এলাকার মৃত কাঁচু প্রামানিকের ছেলে তিনি।
কুদ্দুস প্রামানিক দীর্ঘ ৪৫ বছর ধরে ভাত খান না, সহ্য করতে পারেন না ভাতের গন্ধ। শুধু তাই নয়, ভাতের সঙ্গে মাছ-মাংসের সঙ্গেও আড়ি তার। অবাক হওয়ার মতো হলেও একথাই সত্যি। বেঁচে থাকার জন্য কুদ্দুস ভাতের বদলে মুড়ি, রুটি, দুধ ও কলা বেছে নিয়েছেন। ভাত খেলেই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এভাবেই ভাত না খেয়ে দীর্ঘ সময় পার করেছে তিনি।
কুদ্দুসের পরিবার জানান, ছোটবেলায় অভাব আর ক্ষুধার কষ্ট নিয়ে বড় হয়েছেন তিনি। অভাবে বাড়িতে মুড়ি আর রুটি খেয়ে দিন পার করতেন। সেই সঙ্গে দেখা দেয় পেটের অসুখ। একসময় ভাত খাওয়া শুরু করলেও ৩০ বছর বয়স থেকে আর মুখে ভাত তুলেনি এই বৃদ্ধ। সেই সঙ্গে খাবারের পাতে তুলেন না মাছ কিংবা মাংস। এরপর থেকে কুদ্দুস প্রতিদিন দুই বেলা মুড়ি ও রুটি, দুধ আর কলা দিয়ে চলছে দীর্ঘ ৪৫ বছর। সমাজের আট-দশজনের মতো স্বাভাবিক দিব্বি কাজকর্ম করছেন তিনি।কুদ্দুসের দুই মেয়ে বলেন, আমরা ছোট থেকে দেখছি, আব্বা ভাত খায় না। যদিও খায় সঙ্গে সঙ্গে বর্মি ও পেটে ব্যাথা শুরু হয়। সেজন্য আব্বা ভাত-মাছ, মাংস কিছুই খায় না। শুধু মুড়ি, রুটি আর দুধ, কলা খায়। এসব খাবার খেয়ে আব্বা সুস্থ্য আছেন।
কুদ্দুস প্রামানিক বলেন, ছোটবেলায় পরিবারে অভাব থাকায় নিয়মিত ভাত খেতে পেতাম না। মুড়ি, রুটি খেয়েই দিন পার করতাম। এক পর্যায়ে পেতে ভাত সয্য হতো না। পেটে সমস্যার কারণে আমি ৪৫ বছর থেকে ভাত খেতে পারি না। সেই সাথে মাছ-মাংসও খেতে পারি না। তাই আমি প্রতিদিন মুড়ি, রুটি, কলা আর দুধ খেয়ে বেঁচে আছি।