// ইয়ানূর রহমান : যশোর পিবিআই’র এসপি রেশমা শারমিন পরিচয়ে শার্শার এক আওয়ামীলীগ নেতার কাছে চাঁদা দাবি করার অভিযোগে স্বামী-স্ত্রীকে আটক করেছে যশোর পিবিআই। আটকৃতরা হলেন, সাতক্ষীরা জেলার কলারোয়া উপজেলার শ্রীরামপুর গ্রামের রবিউল ইসলামের ছেলে আহসান হাবিব ও তার স্ত্রী মাদারীপুর জেলার
মৈশর চর এলাকার খাদিজা।
রবিউল নিজেই মোবাইলের মাধ্যমে ভয়েজ পাল্টে মেয়ে সেজে কথা বলতেন আবার কখনো তার স্ত্রীকে দিয়ে ফোন করে বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে প্রতারণা করতেন।
বৃহস্পতিবার রাত ৩টায় মাদারীপুরের মৈশর চর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে আটক করে যশোরের পিবিআই কর্মকর্তারা। এঘটনায় শার্শা থানায় মামলা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই’র ইনসপেক্টর মো. আজিজুল হক জানান, শার্শা উপজেলার কায়বা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলামের কাছে গত বৃহস্পতিবার সকাল ৮টার দিকে ০১৩১৪-৫৪৭৪৬৬ নম্বর থেকে মোবাইল ফোন করেন এক নারী।
এ সময় তিনি তাকে বলেন,‘আমি পিবিআই যশোর জেলার এসপি রেশমা শারমিন বলছি। এখন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আছে। যশোর জেলার শার্শার কায়বা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান আলতাফ হোসেন যা করছে এটা কি ঠিক করছে ? তার চাইতে টিংকু চেয়ারম্যান ভালো ছিলো না ? আগামীতে আপনাকে চেয়ারম্যানের নমিনেশন পাওয়ার ব্যবস্থা করে দিব। আপনার প্রতিপক্ষের কিছু লোকের নাম দিন।’ তখন শরিফুল ইসলাম তাকে কিছু লোকের নাম দেন। এরপর এসপি পরিচয়দানকারী ওই নারী শরিফুল ইসলামকে বলেন,‘আমার সাব-ইনসপেক্টর রবিউল ইসলামের সাথে কথা বলেন’। এই বলে অপর প্রান্ত থেকে মোবাইল ফোনটি এক পুরুষ ব্যক্তির কাছে দেওয়া হয়। এ সময় অপরপ্রান্ত থেকে ওই পুরুষ নিজেকে এসআই রবিউল ইসলাম পরিচয়ে শরিফুল ইসলামকে
বলেন, এসপি স্যার এই বিষয়ে ঢাকায় যাবে। তাই ২ লাখ টাকা দিতে হবে। ফলে সন্দেহ হওয়ায় আওয়ামী লীগ নেতা শরিফুল ইসলাম এ বিষয়ে পিবিআই কার্যালয়ে অভিযোগ করেন। অভিযোগ পাওয়ার পর তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে অবস্থান শনাক্তের পর গত বৃহস্পতিবার রাত ৩টার দিকে মাদারীপুরের মৈশর চর এলাকায় অভিযান চালানো হয়। এসআই নুর জামালের নেতৃত্বে একটি টিম অভিযান চালিয়ে সেখান থেকে পিবিআই’র এসপি পরিচয়দানকারী খাদিজা নামে এক নারীকে নিজ পিতার বাড়ি থেকে আটক করা হয়। ওই বাড়ি থেকে তার সহযোগী এসআই রবিউল ইসলাম পরিচয়দানকারী আহসান হাবিবকে আটক করা হয়। আটকের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা পিবিআই কর্মকর্তা পরিচয়ে প্রতারণা ও চঁাদা দাবির কথা স্বীকার করেন।
তিনি জানান, আটক প্রতারকদ্বয় মাদারীপুরের হায়দার কাজী জুট মিলে চাকরি করেন। এর আড়ালে তারা প্রতারণা ও চাঁদা দাবাজির সাথে জড়িত। পিবিআই আরও জানায়, এরা মুলত বিভিন্ন লোকজনের কাছে ভুয়া পরিচয় দিয়ে নানা ভাবে প্রতারনা করে আসছে। আহসান হাবীর একজন চিহ্নিত প্রতারক। তার বিরুদ্ধে সাতক্ষীরা থানায় ১০টি এবং ফরিদপুর কোতয়ালি থানায় একটি মোট ১১টি মামলা আছে।