লালপুর (নাটোর) প্রতিনিধি ঃ
নাটোরের লালপুরের নর্থ বেঙ্গল সুগার মিলে আখ সরবরাহ করতে যন্ত্র চালিত আখ মাড়াইকল জব্দ সাঁড়াশি অভিযানের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছে এলাকাবাসী।
শনিবার (১৪ জানুয়ারি ২০২৩) দুপুরে প্রশাসনের স্বেচ্ছাচারিতায় ক্ষতিগ্রস্ত দিলালপুরের ক্ষুদ্র শিল্প (গুড়) ব্যবসায়ীদের উপর অমানবিক নির্যাতনের প্রতিকার চেয়ে উপজেলার দিলালপুর গ্রামে এ সংবাদ সম্মেলন করে প্রধান মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত ব্যাক্তিরা।
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ওই গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শামসুল হক। বক্তব্য রাখেন, আখ মাড়াইকল সমিতির সভাপতি মো. রবিউল ইসলাম, লালপুর গুড় ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষে মো. জিল্লুর রহমান, কৃষকদের পক্ষে মো. আবুল কালাম আজাদ, আড়বাবের হামিদুল ইসলাম, দিলালপুরের নজরুল ইসলাম, মামুন হোসেন, শাহরিয়ার আলম প্রমুখ।
বক্তারা জানান, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশনের (বিসিক) নিবন্ধন ও ট্রাকিং আইডি, বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশনের (বিএসটিআই) অনুমোদন, স্থানীয় সরকার কর্তৃক ইউনিয়নের ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে তাঁরা ব্যবসা পরিচালনা করছেন। সরকারের ভ্যাট ট্যাক্স পরিশোধ করা সত্ত্বেও কাগজপত্র না দেখে দফায় দফায় প্রশাসনের কর্মকর্তারা সুসজ্জিত বাহিনী নিয়ে গুড় তৈরির কারখানায় অভিযান চালিয়ে ৩০টি আখ মাড়াইকল, যন্ত্রাংশ জব্দ, কড়াই ও চুলা ভাংচুর করেন। এতে কৃষকদের ২৫ লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেন।
মিলের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে কৃষকেরা বলেন, নবেসুমির মিলের নিজস্ব জমিতে মিল কর্তৃপক্ষ আখ চাষ না করে ওই জমি জনসাধারণকে লিজ দিয়ে অন্য আবাদ করে আসছে, যার কারণে তাদের আখ সরবরাহ সংকটে পরায় সাধারণ আখ চাষিদের বিরুদ্ধে নির্যাতন চালিয়ে আসছে। তারা আরো বলেন মিলে আখ সরবরাহ করে ১৮০ টাকা মণ দেওয়া হলেও ভোগান্তিতে পড়তে হয় সাধারণ কৃষকদেরকে। পূর্জি বিলম্ব, আখের মূল্যে পরিশোধে বিলম্বসহ নানা জটিলতার সৃষ্টি হয়। আপর দিকে মাড়াইকলে আখের মূল্য ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা মণ দরে পরিশোধ করছে। তাছাড়া মিল কর্তৃপক্ষ এক মাস দেরিতে মাড়াই শুরু করায় আখ কেটে রবি শস্য করা সম্ভব হয় নাই ফলে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আবার অগ্রিম মিল বন্ধ করে দেওয়ায় মুড়ি (দ্বিতীয় বার) আখ উৎপাদন ব্যাহত হয়। নবেসুমির প্রশাসনের দুর্নীতির কারণে মিলের লোকসানের দায় কৃষকদের ওপর চাপিয়ে নির্যাতন, জুলুম ও শোষণের মুখে ফেলে দেওয়া হচ্ছে।
মিলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনিসুল আজম বলেন, সুগার মিল এলাকায় মিল চলাকালীন সময়ে পাওয়ার কাসার দ্বারা আখ মাড়াই নিষদ্ধ আছে। যেহেতু মিলটি শিল্পমন্নালয়ের অধীনে, শিল্প আইন আনুসারে পরিচালিত। মিলটি রক্ষার্থে এলাকার আখ চাষিরা মিলে আখ সরবরাহ করবে। মিল না থাকলে আখ চাষীরা আখের নায্য মূল্য পাবে না।তাই শিপ্লায়নটিকে বাচাতে এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। চলতি মৌসুমে পর্যাপ্ত আখ উৎপাদনে চাষিদের সার-বীজ দিয়ে সহায়তা দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও আখ সরবরাহ না করায় মাড়াই কার্যক্রম বন্ধ করতে হচ্ছে। এলাকার মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নের কথা ভেবে চাষিরা আগামীতে পর্যাপ্ত আখ মিলে সরবরাহ করবেন বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।