মশাহিদ আহমদ, মৌলভীবাজার ঃ মৌলভীবাজার শেরপুরে জমে উঠছে ঐতিহ্যবাহী মাছের মেলা। গত দুই বছর করোনার কারণে মেলা না হলেও এবার উৎসবমুখর পরিবেশে শুরু হয়েছে। গত ১৩ জানুয়ারী শুক্রবার থেকে শুরু শেষ হবে ১৫ জানুয়ারী। মৌলভীবাজার সদর উপজেলার ২নং মনুমুখ ইউনিয়নের মনুমুখ বাজারের মনু নদীর পূর্ব পাড়ের প্রতি বছর ১৪ জানুয়ারি পৌষ-সংক্রান্তি ও নবান্ন উৎসবকে কেন্দ্র করে আয়োজন করা হয়। কোনো এক কারণে এ মাছের মেলার বড় একটা অংশ ভেঙ্গে একি উপজেলার শেরপুর চলে আসে। বেশ কয়েক বছর যাবৎ শেরপুর এবং মনুমুখ মাছের মেলা চলছে একই তারিখে। শেরপুরে ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ অন্যান্য সুবিধার কারনে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন দলে দলে আসেন। মাছের আড়ৎদাররা মাছ নিয়ে এসেছেন। মজুত করে রাখা হয়েছে ছোট-বড় নানা জাতের মাছ। আছে বড় বড় বাঘাইড়, বোয়াল, আইড়, চিতল, কাতলা, রুই মাছসহ বিভিন্ন জাতের মাছ। হাকালুকি, কাওয়াদিঘি, হাইল হাওর ও মনু, ধলই, কুশিয়ারা নদীসহ বৃহত্তর সিলেটের বিভিন্ন হাওরের মাছের উপর নির্ভর করে প্রতিবছরই বসে এ মেলা। মৎসজীবিরা এই মেলায় মাছ বিক্রির জন্য ৫ থেকে ৬ মাস আগে থেকেই বড় বড় মাছ সংগ্রহ করে থাকেন। এই মাছগুলো বিশেষ ব্যবস্থায় পানিতেই বাঁচিয়ে তাজা রাখা হয়। সব মিলিয়ে এবারের মেলায় ২০ কোটি টাকার মাছ বিক্রি হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন মেলা আয়োজকরা। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দুইশ’ বছর আগে সদর উপজেলার মনোমুখ এলাকার মথুরা বাবু নামক জমিদার এ মাছের মেলা মনু ও কুশিয়ারা নদীর মিলন স্থলে শুরু করলে তার ওই ধারাবাহিকতায় প্রায় ১৫০ বছর চলে। ১৯৭২ সালে উপজেলার মনুমুখে এ মেলা নিয়ে সামাজিক দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হওয়ার পর থেকেই জেলা সদরের ২৬ কিলোমিটার দক্ষিণে শেরপুরের অদূরে ব্রাহ্মণ গ্রামের কুশিয়ারা নদীর তীরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে মেলা। দিনে দিনে বাড়তে বাড়তে বর্তমানে বিশাল আকার ধারণ করেছে। যা দেশের সর্ববৃহৎ মাছের মেলা হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। মেলাটি সনাতন ধর্মাবলম্বীর পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে শুরু হলেও বর্তমানে তা সার্বজনীন উৎসবে পরিণত হচ্ছে।