ইয়ানূর রহমান : যশোর চেম্বার অব কমার্সের নির্বাচন স্থগিত ও নোটিশ প্রাপ্তির একদিনের মধ্যে কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
বুধবার যশোরের মেসার্স পারভেজ ট্রেডার্সের প্রোপাইটার ও চেম্বার অব কমার্সের সদস্য মেহেদী হাসানের করা মামলায় এ আদেশ দিয়েছেন বিচারক। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবী রফিকুল ইসলাম।
মামলার বিবাদী করা হয়েছে, যশোর চেম্বার অব কমার্সের প্রশাসক, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক), নির্বাচন বোর্ডের আহবায়ক, দুই সদস্য, এবং আলম ট্রেডার্সের মালিক মো. আলম, সরোয়ার ট্রেডার্সের মালিক গোলাম সরোয়ার, রহিম স্টোরের মালিক আব্দুর রহিম ও যশোর কর অঞ্চলের উপকর কমিশনার। সদর সহকারী
জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক সিনিয়র সহকারী জজ সুজাতা আমিন অভিযোগের শুনানি শেষে ওই আদেশ দিয়েছেন।
মেহেদী হাসানের অভিযোগে জানা গেছে, তিনি যশোর চেম্বার অব কমার্সের সদস্য।
যার ভোটার নম্বর ৬৪২। বর্তমানে চেম্বারের সদস্য ২ হাজারের অধিক। সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে ২১ সদস্যের কমিটি নির্বাচিত হবে। নির্বাচিত ২১ সদস্যের ভোটে সভাপতি, তিনজন সহসভাপতি, সেক্রেটারি, ২ জন জয়েন্ট সেক্রেটারি, ট্রেজারার ও ১৩ জন মেম্বর নির্বাচিত হবেন। এ জন্য প্রত্যেক সদস্যের ভোট
অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
২০১১ সালে সদস্যদের প্রত্যক্ষ ভোটে চেম্বারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
এ কমিটির মেয়াদ শেষ হলে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন। চেম্বারের ২০২৩ সালের নির্বাচন উপলক্ষে নির্বাচন বোর্ড গঠন করা হয়। এ বোর্ড ২০২২ সালের ১৯ অক্টোবর চেম্বার অব কর্মাসের তফসিল ঘোষণা করেন। ২০২২ সালের ৬ জুন চেম্বার অব কমার্সের প্রশাসক সংবিধানের ধারা মতে সদস্য পদ নবায়নে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। বিজ্ঞপ্তির দ্বিতীয় দফায় উল্লেখ করা হয়, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আদেশ ক্রমে সদস্য পদ নবায়নকালে ২০২২-২০২৩ সালের ট্রেড লাইন্সের মুল কপিসহ দুইটি ফটোকপি, টিন
নম্বরসহ হালনাগাদ আয়কর প্রদানের সনদ এর মূল কপিসহ দুইটি ফটোকপি জমা দিতে হবে। অন্যথায় সদস্য পদ নবায়ন সম্ভব হবে না। চেম্বার অব কমার্সের সদস্য মেহেদী হাসান একটি চূড়ান্ত ভোটার তালিকার কপি সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে উত্তোলন করেন। পরে তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, ভোটার হালনাগারের
ক্ষেত্রে আলম ট্রেডার্সের মালিক মো. আলম, সরোয়ার ট্রেডার্সের মালিক গোলাম সরোয়ার, রহিম স্টোরের মালিক আব্দুর রহিম হালনাগাদ আয়কর প্রত্যয়নপত্র না দিয়ে ভোটার হয়েছেন। তারা অন্যের আয়কর প্রদানের সনদ সংগ্রহ করে স্ক্যানিং করে নিজেদের নামে আয়কর প্রদানের সনদ প্রস্তুত করে ফটোকপি জমা দিয়ে
বেআইনীভাবে ভোটার হয়েছেন। যার নম্বর ৯৭১, ৯৭৪ ও ৯৭৫। এছাড়াও এ ভোটার তালিকায় বেআইনীভাবে ভোটার হয়েছেন এমন তিন শতাধিক যাদের হালনাগাদ কোন আয়কর সনদ নেই।
এ অভিযোগ এনে নির্বাচন কমিশনার বরাবর অভিযোগ দিয়ে ভোটার তালিকা সংশোধনে ব্যর্থ হয়ে তিনি আদালতে এ অভিযোগ দিয়েছেন। আদালতের বিচারক অভিযোগের শুনানি শেষে বিবাদীদের নোটিশ প্রাপ্তির এক দিনের মধ্যে কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব ও আপত্তি দাখিলান্তে নিষেধাজ্ঞার শুনানি না হওয়া পর্যন্ত
স্থীতিঅবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।
চেম্বারের সাবেক সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন জানিয়েছেন, এ বারের নির্বাচনকে সামনে রেখে একটি পক্ষ ভুয়া আয়কর সনদ দিয়ে ভোটার হালনাগাদ করেছে। যা নজরে আসায় তিনজনের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে জালিয়াতির সত্যতা পাওয়া গেছে।
সঠিক ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন তিনি।
ব্যবসায়ী অধিকার পরিষদের কবু-মিজান-মিঠু প্যানেলের প্রধান এএসএম হুমায়ন কবীর কবু বলেন, আদালতে মামলা হয়েছে জানার পরে নির্বাচন পরিচালনা বোর্ডের কাছে জানতে চাইলে তারা জানান আদালতের কোনো নির্দেশনা আসেনি। ফলে আগামী ৭ জানুয়ারি নির্বাচন হবে এটা আমি ও আমার প্যানেল আশাবাদি।