‘আমি জোর দিয়ে বলতে পারি, আমাদের এই সম্পর্ক এত দিন আমার এফোর্টে টিকে ছিল শুধু। কিন্তু বারবার গায়ে হাত তোলার পর্যায়ে পৌঁছালে কোনো সম্পর্কই আর সম্পর্ক থাকে না। স্রেফ বিষ্ঠা হয়ে যায়।’—স্বামী শরীফুল রাজের বিরুদ্ধে গায়ে হাত তোলার অভিযোগ করে ফেসবুকে কথাগুলো লেখেন চিত্রনায়িকা পরীমণি। বছরের শেষ দিন থেকেই বিচ্ছেদের আলোচনায় রয়েছেন রাজ-পরী দম্পতি। ফেসবুকে পরীর এক পোস্টের মাধ্যমে তাদের বিচ্ছেদের গুঞ্জন শুরু হয়।
সে সময় পরী বলেন, ‘এখন আমাদের বিচ্ছেদ হয়নি। তবে আমি সম্পর্ক ছিন্ন করে রাজের বাসা থেকে বেরিয়ে এসেছি। আজ থেকে আমরা আলাদা হয়ে গেলাম। শিগিগরই বিচ্ছেদের চিঠি পাঠিয়ে দেব।’ তবে অনেকেই ভেবেছিলেন, মান-অভিমান ভুলে আবারও তারা একসঙ্গে সংসার করবেন। রাজের বাবাও বলেছিলেন, ‘শুটিং শেষ করে রাজের বাসায় ফিরতে কিছুটা দেরি হয়, যা নিয়ে পরী রাগ করে। এই বিষয়টা নিয়ে তাদের মধ্যে সামান্য ঝগড়া হয়, যার ফলে পরী এমন স্ট্যাটাস দিয়ে থাকতে পারে। তবে পরী এখন কিছুটা অভিমান করে থাকলেও তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। রাজ, পরী ও আমরা সবাই একসঙ্গে আছি। আশা করি ওদের দুজনের সম্পর্ক সুন্দর থাকবে।’
পরীও সেদিন রাতে সংবাদমাধ্যমে দেওয়া একটি মন্তব্যে জানান, মান-অভিমান ভুলে তারা আবার এক হয়েছেন। বর্তমানে রাজের সঙ্গেই আছেন তিনি। পরী বলেন, ‘আমরা একসঙ্গেই রয়েছি। বসুন্ধরায় আমাদের বাসায় আছি।’ কিন্তু রাত পেরোতে না পেরোতেই পরীর মুখে ভিন্ন সুর শোনা গেল। রীতিমতো অভিযোগ এনে ফেসবুক স্ট্যাটাস দিলেন তিনি। ফেসবুকে তিনি আরো লেখেন, ‘একটা সম্পর্কে পুরোপুরি সিরিয়াস বা খুব করে না চাইলে একটা মেয়ে বাচ্চা নেওয়ার মতো এত বড় সিদ্ধান্ত নিতে পারে না কখনোই। আমার জীবনের সবটুকু চেষ্টা যখন এই সম্পর্কটাকে ঠিকঠাক টিকিয়ে রাখা, তখনই আমাকে পেয়ে বসা হলো। রাজ্যের দিকে তাকিয়ে বারবার সব ভুলে যাই। সব ঠিক করার জন্য পড়ে থাকি। কিন্তু তাতে কি আসলেই আমার বাচ্চা ভালো থাকবে? না। একটা অসুস্থ সম্পর্ক এত কাছে থেকে দেখে দেখে ও বড় হতে পারে না। তাই আমি, রাজ্য এবং রাজের মঙ্গলের জন্যই আলাদা হয়ে গেলাম। রাজ এখন শুধু আমার প্রাক্তনই না, আমার ছেলের বাবাও। তাই রাজ্যের বাবার সম্মান রাখতে পাবলিকলি আর বাকি কিছু বলছি না। আমি আমার সন্তানের বাবাকে অসম্মান করতে চাই না।’
তিনি আরো লিখেছেন, ‘তবে আমার ওপর তার আর তার পরিবারের কোনো অসুস্থ আচরণ বা হার্মফুল কিছু করার চেষ্টা করলে আমি কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হব। সম্মানিত গণমাধ্যমকর্মী যারা রয়েছেন, আপনারা নিশ্চয়ই আমার মানসিক অবস্থা বুঝতে পারবেন আশা করছি। আমাকে একটু সময় দিন।’ তবে পরীমণি নিজেদের সম্পর্ক নিয়ে একাধিকবার কথা বললেও রাজ এই দুই দিন চুপ ছিলেন বলা চলে। তবে গতকাল গণমাধ্যমে শরীফুল রাজ বলেন, ‘আমি আসলে এসব ইস্যুতে কিছুই বলতে চাই না। কী হচ্ছে—এসবের কিছুই আমি জানিও না। জানতেও চাই না। আমি বাসায় আছি। সারা রাত ঘুমাইনি। এখন ঘুমাচ্ছি, ঘুমানোর চেষ্টা করছি।’
উল্লেখ্য, পরী-রাজের ঘনিষ্ঠ কয়েক জনের সূত্রে জানা গেছে, বিয়ের ঘোষণা প্রকাশ্যে আনার কয়েক মাস পর থেকেই দুই জনের সংসারজীবন ভালো কাটছিল না। তাদের কাছের মানুষেরা দুই জনকে বুঝিয়েছেনও। নিজেরাও নিজেদের মতো করে চেষ্টা করেছেন সম্পর্কটা এগিয়ে নিতে। কিন্তু কিছুতেই যেন তা রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। দুই জনের সম্পর্কের অবনতির কারণে নিজেদের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা পর্যন্ত ঘটে!