ঈশ্বরদীতে থার্টি ফাস্ট নাইটে পিকনিকে গিয়ে স্কুল ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু

ঈশ্বরদী (পাবনা) সংবাদদাতাঃ
ঈশ্বরদীতে থার্টি ফাস্ট নাইটে বনভোজন থেকে ফিরে রোহান হোসেন (১৬)  নামে এক স্কুল ছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার দিবাগত রাত ১টা ৪০ মিনিটে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তাঁর মৃত্যু হয়। রোহান হোসেন সাঁড়া ইউনিয়নের ঝাউদিয়া থানা পাড়া এলাকার মিন্নু মিয়ার ছেলে। সে সাঁড়া ঝাউদিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র। এই মৃত্যু স্বাভাবিক নাকি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড বা অন্য কোন ঘটনা এই নিয়ে এলাকায় ব্যাপক আলোচনা চলছে। তবে থার্টি ফাস্টের রাতে ওই স্থানে একধিক পিকনিক পার্টি সাউন্ড বক্স বাজিয়ে নাচ-গান-হুল্লোরে মেতে ছিলো। এসময় দু’পক্ষের মধ্যে মারামারির ঘটনাও ঘটে।

স্থানীয়রা জানান, শনিবার দিবাগত রাতে বাড়ির পাশে বন্ধুদের সাথে পিকনিকে অংশ নেয় রোহান। পাশাপাশি আরো কয়েকটি পিকিনিক পার্টির আয়োজন ছিল। সাউন্ড বক্স বাজানো কেন্দ্র করে একপর্যায়ে রাত ১২টা ২০ মিনিটের দিকে দু’পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। এরই কিছুক্ষণ পর রোহান বাড়িতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালে পৌছানোর আগেই তার মুত্যু হয় বলে চিকিৎসকরা নিশ্চিত করেন।

বনভোজনে অংশ নেয়া আসিফ (২০) নামের এক  যুবক জানান, মারামারির ঘটনার সঙ্গে রোহান জড়িত নয়। মারামারির সময় রোহান ঘটনাস্থলে ছিল না। তার মৃত্যুর বিষয়টি বুঝতে পারছি না।

রোহানের ভগ্নিপতি তরিকুল ইসলাম জানান, আমাদের ধারণা রোহানকে যারা রাতে পিকনিকের জন্য ডেকে নিয়ে গিয়েছিল, তারা তাকে বিষাক্ত কিছু খাইয়েছিল। রোহান রাত ১২টা ২০ মিনিটে যখন বাড়িতে আসে, তখন সে বমি করছিল। হাসপাতালে নেয়ার সময় থেকে মৃত্যুর পূর্ব মুহুর্তে তার মুখ দিয়ে ফেনা উঠছিল। রোহান কখনো সিগারেটও খাইনি। তাকে নেশা জাতীয় কোন কিছু খাইয়ে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) শফিকুল ইসলাম শামীম জানান, রোহানের শরীরে আঘাতের কোন চিহৃ ছিল না। তাৎক্ষনিক তার মৃত্যুর কারণ জানা যায়নি। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

সাঁড়া ইউপি’র চেয়ারম্যান এমদাদুল হক রানা সরদার জানান, আমি নিজে দেখেছি রোহানের শরীরে আঘাতের কোন চিহৃ নেই। কোন কিছুর আঘাতে মারা গেলে শরীরে অবশ্যই চিহৃ থাকতো। বিষয়টি নিশ্চিত হতে হাসপাতালের চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলেছি, তারাও জানিয়েছে আঘাতের কোন চিহৃ দেখা যায়নি। কিভাবে তার মৃত্যু হলো বুঝতে পারছি না।

ঈশ্বরদী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) অরবিন্দ সরকার জানান, রোহানের শরীরের আঘাতের কোন চিহৃ পাওয়া যায়নি। এমন কিছু সে খেয়েছিল, যেকারণে মূখ দিয়ে ফেনা ওঠে। মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে চেষ্টা চলছে। মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে।