গুরুদাসপুরে কর্মসৃজন প্রকল্পে লুটপাট !

নাটোর প্রতিনিধি.
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের অতিদরিদ্রদের কর্মসংস্থানের জন্য ৪০ দিনের কর্মসৃজন প্রকল্পের কাজে ব্যাপক অনিয়ম এবং সংশ্লিষ্ট প্রকল্প সভাপতি ও ইউপি সদস্যদের বিরুদ্ধে পকেট ভারী করার অভিযোগ উঠেছে ।৪০ দিনের কাজে শ্রমিক অনুপস্থিতি, তদারকির অভাব ও অনুপস্থিত শ্রমিকদের হাজিরা দেখিয়ে মজুরির টাকা সংশ্লিষ্টরা হরিলুট করে নিচ্ছেন ।
অতি দরিদ্রদের নিয়মিত কর্মসংস্থানের মাধ্যমে রাস্তাঘাট, ব্রিজ, কালভার্টের আশপাশ, স্কুল, কলেজ, ধর্মীয়সহ সব সরকারি প্রতিষ্ঠান ও জনসাধারণের চলাচলের সুবিধার্থে মাটি ভরাট কাজ বাস্তবায়নে প্রকল্পটি বর্তমানে চলমান রয়েছে। তেমনি নাটোরের প্রতিটি ইউনিয়নে চলছে এ প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের অর্থ হাতিয়ে নিতে নানা অনিয়ম করছেন ।চাপিলা ইউনিয়নের তিনটি ওয়ার্ডে প্রকল্পটি চলমান থাকলেও তালিকায় যে শ্রমিক থাকার কথা, কোথাও কোথাও তার অর্ধেক শ্রমিক দিয়ে কাজ করানো হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থী ও প্রভাবশালীদের নাম শ্রমিকের তালিকায় অন্তভুক্ত করে দীর্ঘদিন যাবৎ টাকা আত্মসাতের ঘটনা ঘটছে । সরকারী ছুটি না থাকলেও শ্রমিকের টাকা আত্মসাতের জন্য বিভিন্ন সময় চলমনা কার্যক্রমে ৫-৬ দিন শ্রমিকদের ছুটি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। ববৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত উপজেলার চাপিলা ইউনিয়নের ৭টি ওয়ার্ডে সরেজমিনে গিয়ে অভিযোগের সত্যাতা পাওয়া যায় ।
চাপিলা ইউপির ২নং ওয়ার্ডের তেলটুপি গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, তালিকাভুক্ত ৪১ জন শ্রমিকের মধ্যে ২৬ শ্রমিক দিয়ে কাজ করাচ্ছেন প্রকল্পের সভাপতি সংশ্লিষ্ট ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম। তালিকা ভুক্ত বাকি শ্রমিক কোথায় এমন প্রশ্ন করলে, ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম কথা না বলে সেখান থেকে চলে যান। এছাড়া শ্রমিকদের হাজিরা খাতা দেখাতে পারেননি। ৭,৮,৯ নং ওয়ার্ডেও একই অবস্থা। তালিকা ভুক্ত ৬০ জন শ্রমিক থাকার কথা থাকলেও সেখানে প্রকল্প সভাপতি ইউপি সদস্য আব্দুল হান্নান উপস্থিত থেকে ৩৬ জন শ্রমিক দিয়ে কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন। শ্রমিক কম থাকার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, শ্রমিকরা খেতে গিয়েছেন। অথচ ৩৬ জন শ্রমিক কাজ করছিলেন সেই সময়ে।
এ দিকে ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ডের কাজেও চলছে ব্যপক অনিয়ম। প্রকল্পের সভাপতি সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য নাজমা আক্তার হলেও ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য গোলাম হোসেন ও ৫ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আব্দুর রহমান ভুয়া শ্রমিকের নাম দিয়ে বিভিন্ন সময় টাকা উত্তোলন করে থাকেন। তিনটি ওয়ার্ডের সমন্বয়ে ৬০ জন শ্রমিক দিয়ে কাজ করার কথা থাকলেও কাজ করানো হচ্ছে ৩৫ জন শ্রমিক দিয়ে।
সংরক্ষিত নারী ইউপি সদস্য প্রকল্প সভাপতি নাজমা আক্তার বলেন, তার জানা মতে সব গুলো শ্রমিক কাজের সময় উপস্থিত থাকেন। কম থাকার কথা নয়।
চাপিলা ইউপি চেয়ারম্যান মোঃ মাহাবুবুর রহমান জানান, শুরুর দিকে শ্রমিক ঠিক ছিলো। টাকা না পাওয়ার কারণে দুই এক জন শ্রমিক কম হতে পারে। বেশি কম হওয়ার কথা না। তারপরও শ্রমিক কম থাকলে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আব্দুল হান্নান বলেন, তালিকা ভুক্ত সকল শ্রমিক কাজ করছে। যদি কোন শ্রমিক কাজ না করে তাহলে তাকে হাজিরা খাতায় অনুপস্থিত দেখানো হয়। যে শ্রমিক গুলো কাজ করবে না তাদের টাকা দেওয়া হবে না। এছাড়াও সরেজমীনে গিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।