ইকবাল কবীর রনজু, চাটমোহর (পাবনা)
পাবনার চাটমোহরের কৃষকেরা আগাম বোরো চাষ শুরু করেছেন। পৌষের তীব্র শীত উপেক্ষা করে কেউ জমি চাষ করছেন, কেউ মই দিয়ে জমি সমান করছেন। কেউ চারা উত্তোলন করছেন আবার কেউবা জমিতে চারা রোপণ করছেন। সেচ যন্ত্রের মালিকরা ব্যস্ত জমি গুলোতে সেচ দিতে। এ চিত্র চাটমোহরের বোয়াইলমারী এলাকার।
চাটমোহর উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি বোরো চাষ মৌসুমে চাটমোহরের ১১ ইউনিয়নে ৯,২০০ (নয় হাজার দুইশত) হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কিছু মাঠে সবে মাত্র চারা রোপণের কাজ শুরু হয়েছে। এ এলাকায় সাধারণত ব্রীধান-২৮, ২৯, ৫০. ৫৮, ৬৪, ৮১, ৮৪, ৮৯, ৯২, ৯৬ জাতের ধান চাষ হয়। এ তালিকায় নতুন যুক্ত হয়েছে বঙ্গবন্ধু ধান-১০০ জাতটি। এছাড়া হাইব্রিড ইস্পাহানী, এসএল ৮ এইচ, তেজ গোল্ড, দোয়েল, টিয়া ও ব্রাক জাতের ধান চাষ হয়।
উপজেলার বরদানগর গ্রামের কৃষক রতন হোসেন জানান, দীর্ঘ দিন যাবত বোরো ধানের চাষ করে আসছেন তিনি। চারা উৎপাদন, জমি প্রস্তুত, মই দিয়ে জমি সমান করা, চারা রোপন, সার, কীটনাশক, আগাছা পরিষ্কার এবং কাটা বাবদ প্রতি বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষে প্রায় ১৩ হাজার টাকা খরচ হয়। ধান ভাল হলে প্রায় ২৫ মন হারে ফলন পাওয়া যায়। কোথাও পাঁচ ভাগের এক ভাগ আবার কোথাও চার ভাগের এক ভাগ ধান জমি থেকেই সেঁচযন্ত্রের মালিককে দিয়ে আসতে হয়। যারা অন্যের জমি লীজ নিয়ে চাষ করেন তাদের প্রতিবিঘায় অতিরিক্ত আরো ৮ হাজার টাকা খরচ হয়। ধানের দামের সাথে পাল্লা দিয়ে কৃষি উপকরণের দাম বাড়ায় খুব একটা লাভ হয়না। আবার জমিও অনাবাদি রাখা যায়না। অনেক কৃষক গবাদীপশু পালন করেন। খড়ের প্রয়োজনেই বোরো ধান আবাদ করতে হয় তাদের।
চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ.এ মাসুম বিল্লাহ জানান, চলতি মৌসুমে সবেমাত্র নিচু জমিগুলোতে আগাম ধানের চারা রোপণ শুরু হয়েছে। যেসকল জমিতে মাঘী সরিষা রয়েছে সেসব জমিতে আরো অন্তত এক মাস পর বোরো ধানের চারা রোপণ করবেন কৃষকেরা। এখন পর্যন্ত ৪৩০ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরী হয়েছে। এ কার্যক্রম চলমান আছে। বর্তমান সময়ে ধানের ভাল দাম থাকায় কৃষক লাভবান হচ্ছেন।