বগুড়ায় সততার জোরে পুনরায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ডা: মকবুল

সঞ্জু রায়, বগুড়া: সততার জোরে বগুড়া জেলা পরিষদ নির্বাচনে আনারস প্রতীকে ৮৭৪টি ভোট পেয়ে পুনরায় চেয়ারম্যান পদে জয় লাভ করেছেন প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা ডা. মকবুল হোসেন। এদিকে জেলে বসেও আওয়ামী লীগ নেতাদের মাথায় চিন্তার ভাঁজ ফেলে দিয়েছিলেন চেয়ারম্যান পদে একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আব্দুল মান্নান আকন্দ। মোটরসাইকেল প্রতীকে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে মান্নান আকন্দ নির্বাচনে ভোট পেয়েছেন ৭২১টি।
সোমবার সকাল ৮ টা থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত বগুড়ার ১২টি কেন্দ্রে এই ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। বেসরকারি ফলাফলে নির্বাচনে ডা. মকবুল হোসেনের বিজয়ের ঘোষণা নিশ্চিত করেছেন সহকারী রিটার্নিং অফিসার এ এস এম জাকির হোসেন। এ নিয়ে ডা: মকবুল হোসেন ২য় বারের মতো চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পেলেন।
এ এস এম জাকির হোসেন জানান, জেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোট গণনার হার শতকরা ৯৮ দশমিক ৫৮ শতাংশ। বগুড়ার ১২ উপজেলার ১২ টি কেন্দ্রে মোট ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৬২৩ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ হাজার ২৪০ জন এবং নারী ৩৮৩ জন। এর মধ্যে গণনায় ১ হাজার ৫৯৫টি ভোট বৈধ ঘোষণা করা হয়। অবৈধ ঘোষণা করা হয় ৫টি ভোট।
নির্বাচনে ১২ কেন্দ্রে ডা. মকবুল হোসেন আনারস প্রতীক নিয়ে মোট ভোট পেয়েছেন ৮৭৪টি।

নির্বাচন অফিস সূত্র জানায়, বগুড়ার ১২ ওয়ার্ডে এবার মোট ৩৪ জন সাধারণ সদস্য প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বীতা করেন। আর সংরক্ষিত ৪ টি ওয়ার্ডের মোট প্রার্থী ছিলেন ১৬ জন। এর মধ্যে ৪ ও ৫ নম্বর ওয়ার্ডে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় সদস্য প্রার্থী নির্বাচিত হন।
সাধারণ সদস্য পদে ভোটে বিজয়ীরা হলেন- ১ নম্বর ওয়ার্ডে তালা প্রতীকে ছামছুন্নাহার বানু , ২ নম্বর ওয়ার্ডে তালা প্রতীকে সৈয়দ সার্জিল আহমেদ টিপু, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে তালা প্রতীকে মোছা. নাছরিন রহমান, ৬ নম্বর ওয়ার্ডে অটোরিকশা প্রতীকে মো. মুকুল, ৭ নম্বর ওয়ার্ডে তালা প্রতীকে একেএম আসাদুর রহমান দুলু, ৮ নম্বর ওয়ার্ডে হাতি প্রতীকে মোস্তাফিজার রহমান, ৯ নম্বর ওয়ার্ডে হাতি প্রতীকে এএমএম ফজলুল হক, ১০ নম্বর ওয়ার্ডে হাতি প্রতীকে আব্দুল্লাহেল বাকী, ১১ নম্বর ওয়ার্ডে উটপাখি প্রতীকে আব্দুর রশিদ ফরাজি, ১২ নম্বর ওয়ার্ডে উটপাখি প্রতীকে আবুল হাসান মো. আশরাফুদ্দৌলা।
সংরক্ষিত ওয়ার্ডে বিজয়ীরা হলেন- ১ নম্বর ওয়ার্ডে হরিণ প্রতীকে মোছা. মাহফুজা খানম, ২ নম্বর ওয়ার্ডে ফুটবল প্রতীকে শামীমা আক্তার মুক্তা, ৩ নম্বর ওয়ার্ডে দোয়াত কলম প্রতীকে সুমাইয়া খানম, ৪ নম্বর ওয়ার্ডে মাইক প্রতীকে আসমা বেগম।

বগুড়ায় অত্যন্ত সুষ্ঠু পরিবেশে সম্পন্ন হওয়া এই নির্বাচনে ১২ কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার ছিলেন ১২ জন। সহকারি প্রিজাইডিং অফিসার হিসেবে ২৪ জন, পোলিং অফিসার হিসেবে ৪৮ জন এবং ভোটগ্রহণকারী কর্মকর্তা হিসেবে ৮৪ জন দায়িত্ব পালন করেন।
এ ছাড়াও জেলা পরিষদের এ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রতি কেন্দ্রে একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট, জেলা পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ, র‍্যাব, আনসার ও বিজিবি দায়িত্ব বাহিনী দায়িত্ব পালন করছে।
উল্লেখ্য, আব্দুল মান্নানকে গত ২১ সেপ্টেম্বর মারপিট ও হত্যাচেষ্টা মামলায় কারাগারে পাঠায় আদালত। কারাগারে থেকে তিনি নির্বাচনে অংশ নেন। আবার ডা. মকবুল হোসেন বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি। ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত তিনি বগুড়া জেলা পরিষদে প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০১৭ সালে জেলা পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী হিসেবে ভোট করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। মেয়াদ শেষে ২০২২ সালে আবারো প্রশাসকের দায়িত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা