বেনাপোল ইমিগ্রেশনে ২৪/৭ বিদ্যুৎ না থাকায় চরম দূর্ভোগে পড়ছে পাসপোর্ট যাত্রীরা

ইয়ানূর রহমান : বেনাপোল আর্ন্তজাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশনে ২৪/৭ বিদ্যুৎ ব্যবস্থা না থাকায় চরম দূর্ভোগে পড়তে হচ্ছে পাসপোর্ট যাত্রীদের। শনিবার (১৭ মে-২৫) সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত বেনাপোলে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকায় কিছুক্ষণের জন্য (প্রায় ১ ঘন্টা) বন্ধ হয়ে যায় ইমিগ্রেশনের সমগ্র কার্যক্রম। তাতেই, ইমিগ্রেশনের আগমন ও বর্হিগমন পাশে দাড়িয়ে তীব্র গরমে অতিষ্ট হয়ে পড়ে দু’দেশ যাতায়াতকারি পাসপোর্ট যাত্রীরা। চারম তাপদাহে হাসফাঁস শুরু করে বয়োঃবৃদ্ধসহ রোগীরা।

নানা অভিযোগের তীর ছোড়েন কর্তৃপক্ষের দিকে। বলেন, এখানে নেই সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। যাত্রীদের বসার জন্য নেই কোনও চেয়ারের ব্যবস্থা। না আছে সুপেয় পানির ব্যবস্থা। এমনিভাবে চার দেওয়ালের মাঝে বদ্ধ জায়গায় ফ্যান ও শিতাতপ ব্যবস্থা ছাড়া আরও ঘন্টাখানেক সময় দাড়িয়ে থাকলে হঠাৎ কেউ অসুস্থ হয়ে যেতে পারে, এমনকি হিট স্ট্রোকে মৃত্যুবরণও করতে পারে।

সরেজমিনে বেনাপোল ইমগ্রেশন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, এদিন সকাল ৯টা থেকে বিদ্যুৎ ছিলোনা। ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ প্রায় ৩ঘন্টা যাবত নিজস্ব জেনারেটরে যাত্রী সেবা দিয়েছেন। বেলা ১২ টা থেকে যান্ত্রীক দূর্ঘটনা এড়াতে প্রায় ১ঘন্টার মতো সময় জেনারেটর বন্ধ করে বিশ্রামে রাখে। সেসময়ের মধ্যে পাসপোর্টে ইমিগ্রেশনের এন্ট্রি সীল করতে না পেরে বর্হিগমন ও আগমন পাশে গরমে হাসফাঁস করছে পাসপোর্ট যাত্রীরা। সেখানে বসার ব্যবস্থা না থাকায় খুব কস্টে শুয়েবসে সময় অতিবাহিত করছে ক্যান্সারের রোগীসহ বিভিন্ন ধরণের রোগীরা। ইমিগ্রেশন পুলিশ ও কাস্টম কর্মকর্তা-কর্মচারিরা একটু স্বস্তির জন্য নিজেদের চেয়ার ছেড়ে বাইরের বাতাশ নেওয়ার চেষ্টা করছেন।

যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর ও আর্ন্তজাতিক চেকপোস্ট বেনাপোল। এপথ দিয়ে দেশ-বিদেশের সিংহভাগ পাসপোর্ট যাত্রী যাতায়ত করে থাকে। সেখানে যাত্রীদের সেবার মান বৃদ্ধি করতে এখানে নেই সপ্তাহের সাত দিন ২৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ ব্যবস্থা। যাত্রীদের বসার জন্য নেই কোনও চেয়ার। গরমে একটু সুপেয় পানি পান করবো’ সেই ব্যবস্থাও নেই।

এ বিষয়ে ভারত থেকে আসা ঢাকার পাসপোর্ট যাত্রী সুমন মাস্টার জানান, তিনি তার ক্যান্সারে আক্রান্ত স্ত্রীকে চিকিৎিসা দিতে ভারতে গিয়েছিলেন। ফিরেছেন খুব কস্ট করে। উদ্ভট গরমে জার্নি করে তারা খুবই ক্লান্ত। সেখানে দেশে ফিরে এতোবড় ইমিগ্রেশনে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা না থাকায় প্রায় ১ঘন্টা যাবত পাসপোর্টে ইমিগ্রেশন এন্ট্রি সীল করতে না পেরে দাড়িয়ে রয়েছেন। তীব্র গরম কস্ট সহ্য করতে না পেরে তার স্ত্রী মেঝেতেই শুয়ে পড়েছে। এখানে বসার জন্য নেই কোনও চেয়ার, একটু পানি খাবো, সে ব্যবস্থাও নেই।

এ বিষয়ে কথা হয় বেনাপোল ইমিগ্রেশন পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইব্রাহিম আহম্মেদের সাথে। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ চলে গেলেও তাদের জেনারেটরে ২ থেকে ৩ঘন্টা যাত্রী সেবা দেওয়া সম্ভব। তারপর অন্তত ১ ঘন্টা বিশ্রাম দিয়ে আবার কাজ শুরু করতে হয়। নইলে জেনারেটরে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। যেকারণে পাসপোর্ট যাত্রীদের সাময়িক কস্ট হচ্ছে। তবে, এখানে ২৪/৭ বিদ্যুৎ ব্যবস্থা হলে যাত্রীদের এই দূর্ভোগ পোহাতে হবেনা।

এ বিষয়ে কথা হয় বেনাপোল চেকপোস্ট বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আজিজুল হকের সাথে। তিনি বলেন, মাসে অন্তত দুই থেকে চারবার বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষ ঘোষণা দিয়ে বিদ্যুতের পুল মেরামত, ট্রান্সফারমার উন্নয়ন বা সংস্কার কাজ, গাছ ছাটা, কাটাসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজের কথা বলে ৬ থেকে ৭ঘন্টা করে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রাখে। তাতে দেশের সর্ববৃহৎ স্থলবন্দর দিয়ে দু’দেশের আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্যে মারাত্বক প্রভাব ও আর্ন্তজাতিক চেকপোস্ট ইমিগ্রেশন দিয়ে ভারত-বাংলাদেশ যাতায়াতকারি পাসপোর্ট যাত্রী সেবার কাজে ব্যাহত হয়। সরকারের হাজার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব প্রদাণকারি এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সপ্তাহের ৭দিনই ২৪ ঘন্টা বিরতিহীন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন বলে জানান তিনি।#