দ্বিতীয় বিয়ে করা স্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রথম স্বামীর আইনি প্রতিকার


মুসলিম পারিবারিক আইন অনুযায়ী, প্রথম স্বামীর সঙ্গে দাম্পত্য সম্পর্ক বিদ্যমান থাকাবস্থায় স্ত্রী যদি পুনরায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন, তাহলে সেই দ্বিতীয় বিয়ে অবৈধ, অকার্যকর ও বাতিল বলে গণ্য হবে। স্ত্রী দ্বিতীয় বিয়ে করতে ইচ্ছুক হলে তাঁকে আবশ্যিকভাবে আগে প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধন ছিন্ন করতে হবে। ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ অনুসারে প্রথম স্বামীকে তালাকের নোটিশ প্রদানপূর্বক ৯০ দিন পর তালাক কার্যকর হওয়া সাপেক্ষে নির্দিষ্ট ইদ্দতপালন শেষে দ্বিতীয় স্বামী গ্রহণ করা যেতে পারে। এই বিধান লঙ্ঘন করে প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিয়ে বলবৎ থাকাবস্থায় স্ত্রী যদি স্বামীর জিম্মা থেকে পালিয়ে গিয়ে অন্য কাউকে বিয়ে করেন সেক্ষেত্রে প্রথম স্বামী সেই স্ত্রীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করতে পারেন। সেক্ষেত্রে অভিযুক্ত স্ত্রী বাংলাদেশের ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৪৯৪ ধারা অনুযায়ী সর্বোচ্চ ৭ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড পেতে পারেন। সঙ্গে অর্থদণ্ডেও দণ্ডিত হবেন।

তবে দণ্ডবিধির ৪৯৪ ধারার এই বিধানের ব্যতিক্রম হতে পারে যদি সেই স্ত্রী তার পূর্বের স্বামীর সাত বছর যাবত কোনো খোঁজ-খবর না পান, অথবা তিনি জীবিত থাকতে পারেন এমন কোনো তথ্য যদি জানা না যায়, তাহলে পরবর্তী স্বামীকে আসল ঘটনা জানিয়ে তাঁর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হতে পারেন। অর্থাৎ এই ব্যতিক্রমী ক্ষেত্রে স্ত্রীর দ্বিতীয় বিয়ে শাস্তিযোগ্য হবে না।

বিয়ে সংক্রান্ত প্রতারণার ঘটনা বর্তমানে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে। এর মধ্যে স্বামী কিংবা স্ত্রী বর্তমান থাকা অবস্থায় পরবর্তী বিয়ের অভিযোগও পাওয়া যাচ্ছে। এসব প্রতারণামূলক ঘটনা থেকে বিভিন্ন সামাজিক অস্থিরতা, পারিবারিক জটিলতা ও সহিংসতা্র সৃষ্টি হয় যা বেশিরভাগ সময় আদালতে মোকদ্দমায় গড়ায়। বাংলাদেশে বিয়ে ও বিয়ে-বিচ্ছেদ পারিবারিক ধর্মীয় আইন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। কিন্তু বিয়ে সংক্রান্ত ফৌজদারি অপরাধ সংঘটনের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রীয় দণ্ডবিধি প্রযোজ্য হয়।