বগুড়া ফুলতলায় প্রকাশ্যে ফোরকান হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের, গ্রেপ্তার ১

বগুড়া জেলা প্রতিনিধি: বগুড়া ফুলতলায় আলোচিত ফোরকান হত্যার ঘটনায় ফোরকানের মা শাহানা বেওয়া বাদী হয়ে বগুড়া পৌরসভা নির্বাচনে ১৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থী নাদিম প্রামানিক(৩৫) কে প্রধান আসামী এবং ফুলতলার মৃত শুকুর আলীর দুই ছেলে মো: নান্টু (৩৭) ও মো: ঝন্টু (৩৯) সহ এজাহার নামীয় মোট ১৩ জন এবং অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জনকে আসামী করে শাজাহানপুর থানায় মামলা দায়ের করেছেন।
বুধবার দিবাগত রাতে শাজাহানপুর থানায় উপস্থিত হয়ে তিনি এজাহারটি দায়ের করেন। এদিকে এজাহার দায়েরের পর পুলিশের কঠোর অভিযানে এজাহারের ১২নং আসামী, উপজেলার আশেকপুর ইউনিয়নের শাবরুল গ্রামের গোলাম হোসেনের ছেলে এবং এই মামলার প্রধান আসামী নাদিম প্রামানিকের ফুফাতো ভাই সাগর (৩২) কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই ওয়াহিদুজ্জামান জানান, বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উপজেলার শাবরুল এলাকা থেকে মামলার এজাহারভুক্ত আসামী সাগরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সাগর অস্ত্র, চাঁদাবাজি, মাদক ও দ্রুত বিচার আইন সহ ৮টি বিচারাধীন মামলার আসামী।
এবিষয়ে শাজাহানপুর থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন মামলা দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, সকল আসামীদের গ্রেপ্তারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রেফতারকৃত সাগরকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
উল্লেখ্য, গত সোমবার (২২ ফেব্রুয়ারী) বিকেলে পারিবারিক শত্রুতার জের ধরে এবং পৌর নির্বাচনকে সামনে রেখে শাজাহানপুর উপজেলাধীন বগুড়া পৌরসভার ১৩ নং ওয়ার্ডের ফুলতলা এলাকার মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সাত্তারের ছেলে সন্ত্রাসী ফোরকানকে ধাওয়া করে প্রতিপক্ষের একদল সন্ত্রাসী। দৌড়ে পালানোর সময় ফুলতলা এলাকায় রাস্তায় পড়ে গেলে সন্ত্রাসীরা ফোরকানকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সকালে তিনি মারা যান। ভোটের আগে এ ঘটনায় ফুলতলা এলাকাসহ পুরো শহরজুরে এক আলোচনা ও বিতর্কের জন্ম দেয়।
স্থানীয় এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বগুড়া শহরের এক সময়ের শীর্ষ সন্ত্রাসী শাহীনের মামাতো ভাই হচ্ছে ফোরকান ও সন্ত্রাসী মজনুর ভাতিজা হচ্ছে নাদিম প্রাং। পরবর্তীতে এই পারিবারিক শত্রুতা ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পৌর নির্বাচনে নাদিমের প্রতিদ্বন্দী প্রার্থীর হয়ে ফোরকানের কাজ করার বিষয়ে ক্ষোভে এই হত্যাকান্ড বলে জানান অনেকে। উল্লেখ্য, নাদিম এবং ফোরকান যুবলীগের রাজনীতির সাথে জড়িত থাকলেও তাদের মধ্যে পারিবারিকভাবে বিরোধ দীর্ঘদিনের।