ভাঙ্গুড়ায় টাকা নিয়ে ঘর না দিয়ে উল্টো মারধর

‘জমি আছে ঘর নেই’ প্রকল্পের ঘর দেয়ার কথা বলে একজন ভিক্ষুকের কাছ থেকে টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেন আওয়ামী লীগ কর্মী শাহজাহান আলী।  ঘর ও টাকা ফেরত না পেয়ে প্রতিবাদ করায় ওই ভিক্ষুকের স্বজনদের পিটিয়ে আহত করেন অভিযুক্ত শাহজাহান আলী। গতকাল মঙ্গলবার পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ ইউনিয়নের রমনাথপুর গ্রামে এই মারধরের ঘটনা ঘটে। শাজাহান ওই গ্রামের মৃত তাজের আলীর ছেলে। 

অভিযুক্ত শাহজাহান আলী


অনুসন্ধানে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে ‘জমি আছে ঘর নেই’ প্রকল্পে উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নে দুস্থ ও অসহায় পরিবারকে সরকারিভাবে ঘর তৈরি করে দেয়ার তালিকা করা হয়। এতে খানমরিচ ইউনিয়নে পাঁচটি ঘর বরাদ্দ দেয়া হয়। ওই তালিকায় নাম অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলে গত বছরের জানুয়ারি মাসে রমনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা ও আওয়ামী লীগ কর্মী শাহজাহান আলী রমনাথপুর গ্রামের ফেরদৌস আলীর স্ত্রী ভিক্ষুক কমলা খাতুনের কাছ থেকে ১০ হাজার টাকা চান। কমলা খাতুনের স্বামী দীর্ঘদিন ধরে নিখোঁজ থাকায় ও দুই পুত্র সন্তান ভাত-কাপড় না দেওয়ায় মেয়ে জামাই সাইফুল ইসলাম তাকে দেখাশোনা করেন। সাইফুল ইসলাম একই গ্রামের বাসিন্দা। পরে কমলাা বিষয়টি জামাইকে জানালে দিনমজুর সাইফুল ইসলাম গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে শাহজাহানকে ৫ হাজার টাকা দেন। এরপরে ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে সরকারি ঘর তৈরি করে দেয়া হলেও কমলা খাতুন ঘর পাননি। এ অবস্থায় বেশ কিছুদিন ধরে কমলার জামাই সাইফুল ও তার পরিবারের লোকজন  শাহজাহানের কাাছ থেকে টাকা ফেরত চান। কিন্তু শাহজাহান টাকা ফেরত না দিয়ে নানা টালবাহানা করছেন। এক পর্যায়ে গতকাল মঙ্গলবার সকালে সাইফুল ও তার বৃ্ৃদ্ধ বাবা গফুর আলী শাহজাহানের বাড়িতে গিয়ে টাকা ফেরত চাইলে বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে শাহজাহান তার ভাই আজহার ও ছেলে রাকিব মিলে গফুর ও সাইফুলকে মারধর করে। এসময় বাবা ছেলেকেে রক্ষা করতে গিয়ে গফুরের স্ত্রী সাকেরা (৫০) ও বোন রোমেলা (৪৫) মারধরের শিকার হন। পরে প্রতিবেশীরা তাদেরকে উদ্ধার করে।
এদিকে আহত অবস্থায় গফুর আলী সহ পরিবারের সদস্যরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ জানাতে উপজেলা পরিষদে আসেন। তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে না পেয়ে তারা উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আজীদা পারভীন পাখির কাছে অভিযোগ দেন। এসময় ভাইস চেয়ারম্যান তাদেরকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হতে পরামর্শ দেন।


অভিযোগের বিষয়ে আওয়ামী লীগ কর্মী শাহজাহান আলী বলেন, ভিক্ষুক কমলাকে ঘর পাইয়ে দেয়ার কথা বলে তিনি কোনো টাকা-পয়সা নেননি। মিথ্যা অভিযোগ তুলে কমেলা খাতুনের জামাই ও বিয়াই তার বাড়িতে গিয়ে গালিগালাজ করে। তাই তাদেরকে চড় থাপ্পড় দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়। 
খানমরিচ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি চেয়ারম্যান আসাদুর রহমান বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে অভিযোগের বিষয়ে সত্যতা পাওয়া গেলে অভিযুক্ত শাহজাহানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 
ভাঙ্গুড়া থানার এসআই রমজান আলী বলেন, বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।