শরীয়ত মতে নাসির-তামিমার বিয়ে কি বৈধ?

জাতীয় দলের তারকা ক্রিকেটার নাসির হোসেন বিয়ের রেশ যেতে না যেতেই বিপাকে পড়েছেন। কেবিন ক্রু তামিমা তাম্মির সঙ্গে তাঁর বিবাহবন্ধনের ছবি অন্তর্জালে বেশ উষ্ণতা ছড়িয়েছে। কিন্তু সপ্তাহ না পেরোতেই নাসিরপত্নীর ‘সাবেক স্বামী’র দাবি, বিবাহবিচ্ছেদ ছাড়াই বিয়ের পিঁড়িতে বসেছেন নবযুগল। শনিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩টা ৩৬ মিনিটে মুঠোফোনে তামিমার প্রথম স্বামী রাকিব হাসান দাবি করেন, আইনগতভাবে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ ছাড়াই নাসিরের সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধেছেন তামিমা। এ ব্যাপারে তামিমাকে ফোন করে কোনো সাড়া না পেয়ে উত্তরা পশ্চিম থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন রাকিব।

গত ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালোবাসা দিবসে রাজধানীর উত্তরার এক রেস্তোরাঁয় বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারেন নাসির। ১৭ ফেব্রুয়ারি ছিল এ যুগলের গায়েহলুদ। এর একদিন পর জাঁকজমকপূর্ণভাবে হয় তাঁদের বিবাহোত্তর সংবর্ধনা। সেই আনন্দের রেশে তাল কাটেন তামিমার প্রথম স্বামী রাকিব। এরই মধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে নাসির ও রাকিবের কথোপকথনের অডিও ক্লিপ। ওই কথোপকথনে তামিমার প্রথম বিয়ের সত্যতা মেলে। নাসিরও স্বীকার করেন, সবকিছু জেনেই তামিমাকে বিয়ে করেছেন তিনি।

এ বিষয়ে বিশিষ্ট ইসলামিক স্কলার ও আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশন এর চেয়ারম্যান শায়খ আহমাদুল্লাহ তার ইউটিউব চ্যানেল ও ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও পোস্ট করেছেন। সেখানে তিনি ইসলামি শরীয়তের আলোকে বিষয়টি ব্যাখা করেছেন।

তিনি বলেছেন, নাসিরের বর্তমান স্ত্রী তামিমার সঙ্গে তার পূর্বের স্বামীর যদি শরীয়তসম্মতভাবে ছাড়াছাড়ি না হয়ে থাকে, তাহলে কোনভাবেই নাসিরের সাথে তার এই বিয়ে বৈধ নয়। তবে এর জন্য এখানে আমাদের দুটি বিষয় নিশ্চিত করতে হবে।

প্রথম বিষয় হলো, তামিমার সাথে তার প্রথম স্বামীর ছাড়াছাড়িটা ইসলামী শরীয়ত সম্মতভাবে হয়েছে কি-না। আর ডিভোর্স লেটার পাঠানো এবং সেই ডিভোর্স লেটারটি ইসলামী শরীয়ত সম্মতভাবে বিয়ে বিচ্ছেদ হওয়া পর্যন্ত পৌঁছেছে কি-না, এই বিষয়টি বিবেচনা করতে হবে।

আর দ্বিতীয় বিষয় হলো, যদি তার (নাসিরের স্ত্রী তামিমা) শরীয়ত সম্মতভাবে ছাড়াছাড়ি বা বিচ্ছেদ হয়ে থাকে, তবুও তাকে তিন মাস অথবা তিন পিরিয়ডের সময় পর্যন্ত ইদ্দত পালন করতে হবে। সেটা হয়েছে কি-না নিশ্চিত করতে হবে।

এই দুটি বিষয়ের কোন একটি বিষয় যদি অনুপস্থিত থাকে, তাহলে নাসিরের বিয়ে শুদ্ধ হবে না। বরং এটি একটি অবৈধ বিয়ে।

এখন তাদের জন্য করণীয় হলো, যদি তারা ঘর সংসার করতে চায়, তাহলে আমরা যে দুটি শর্তের কথা বলেছি-এই দুটি শর্ত মেনে তারপর তাদের বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হতে হবে। অন্যথায় এটি বিয়ে তো হবেই না বরং এটি যিনা-ব্যভিচার হিসেবে সাব্যস্ত হবে।

এর আগে তামিমার সাবেক স্বামী রাকিব বৃহস্পতিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাতে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি জিডি করেন। উত্তরা পশ্চিম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাও (ওসি) শাহ মো. আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস জিডির বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চত করেন।

জিডি সূত্রে জানা যায়, ২০১১ সালে তামিমা তাম্মিকে বিয়ে করেন রাকিব। দাম্পত্য জীবনে তাদের একটি মেয়ে রয়েছে। এর মধ্যেই তামিমা অন্য এক ছেলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ায়। সেখানে ছয় মাস সংসার করার পর ফিরে আসে। পরে রাকিবের সঙ্গে ক্ষমা চেয়ে পার পায়। কিন্তু গত ১৪ ফেব্রুয়ারি নতুন করে ক্রিকেটার নাসিরের সঙ্গে ছবি ভাইরাল হলে রাকিব জানতে পারেন, তামিমা আবার বিয়ে করেছেন।