তিস্তার ধূ-ধূ বালুচরে ভাঁসছে মিষ্টি কুমড়া। কুমড়াসহ নানাবিধ ফসলে ভরে উঠেছে তিস্তার চরাঞ্চল। জমি জিরাত খুঁয়ে যাওয়া পরিবারগুলো চরে ফিরে চাষাবাদে ঝুঁকে পড়েছে। দীর্ঘদিন পর নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যাওয়া জমির ফসল ঘরে তুলতে পেরে খুশি কৃষকরা। গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার তারাপুর, বেলকা, হরিপুর, চন্ডিপুর, শ্রীপুর ও কাপাসিয়া ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত রাক্ষুসি তিস্তা নদী এখন আবাদি জমিতে পরিণত হয়েছে। চরাঞ্চলের হাজারও একর জমিতে এখন চাষাবাদ করা হচ্ছে নানাবিধ প্রজাতির ফসল। বিশেষ করে গম, ভুট্টা, আলু, বেগুন, মরিচ, পিঁয়াজ, রসুন, টমেটো, বাদাম, সরিষা, তিল, তিশি, তামাক, কুমড়াসহ বিভিন্ন শাকসবজি চাষাবাদ করা হচ্ছে। কথা হয় কাপাসিয়া ইউনিয়নের বাদামের চর গ্রামের কুমড়া চাষি রাজা মিয়ার সাথে। তিনি বলেন, এ বছর মিষ্টি কুমড়ার ফলন ভাল হয়েছে। তিনি নিজে ২ বিঘা জমিতে কুমড়া চাষ করেছে। প্রতি বিঘা জমিতে ছোট বড় কমপক্ষে ৯০০ হতে ১ হাজার মিষ্টি কুমড়া পাওয়া যায়। স্বল্প খরচে অধিক লাভের আশায় চরের কৃষকরা এখন কুমড়া চাষে ঝুকে পড়েছে। তিনি বলেন, কুমড়ার দামও এখন ভাল। প্রতি বিঘা জমিতে ৩৫ হাজার হতে ৪৫ হাজার টাকার কুমড়া পাওয়া যায়। প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয় ৪ হাজার হতে ৫ হাজার টাকা। কাঁচামাল ব্যবসায়ী হামিদুল ইসলাম জানান, বর্তমান বাজারে প্রতিটি কুমড়া ৬০ হতে ১০০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। দেশী কুমড়ার চাহিদা অনেক বেশি। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ১৪০ হেক্টর জমিতেমিষ্টি কুমড়া চাষ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় বেশি। কাপাসিয়া ব্লকের উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা লিটন মিয়া জানান, তাঁর ব্লকে ২৫ হেক্টর জমিতে কুমড়া চাষ হয়েছে। ভাল ফলন পাওয়ায় কৃষকরা মহাখুশি। কাপাসিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন জানান, চরাঞ্চলের জমিতে এখন নানাবিধ ফসলের ভাল ফলন হয়। সে কারণে চরের মানুষ এখন মহাখুশি। কৃষি এখন চরবাসিকে স্বাবলম্বী করে তুলেছে। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ সৈয়দ রেজা-ই মাহমুদ জানান, পলি জমে থাকার কারণে চরের জমি অনেক উর্বর। যার কারণে যে কোন প্রকার ফসলের ফলন ভাল হয়। তিনি বলেন, চরের কৃষকরা নিজে পরিজন নিয়ে জমিতে কাজ করে। সেই কারণে তারা অনেক লাভবান হয়। চরের জমি কুমড়া চাষের জন্য উপযোগী।