কলাপাড়ায় মেয়র নির্বাচনে পকেট কমিটির কাউন্সিল ভোটের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন।

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: 
পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় আসন্ন পৌরসভা নির্বাচনে পৌর আওয়ামীলীগের স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে গঠিত পকেট কমিটির সদস্যদের নিয়ে সাজানো কাউন্সিল ভোটের বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন করেছেন পৌর মেয়র প্রার্থী কলাপাড়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফিরোজ সিকদার। বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টায় কলাপাড়া প্রেসক্লাবের হলরুমে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। আওয়ামীলীগের ত্যাগী ও পরীক্ষিত নেতাদের বাদ দিয়ে পৌর এলাকার বাহিরের বিভিন্ন ইউনিয়নের সদস্যদের নিয়ে একটি পকেট কমিটি করা হয়। তিনি এ পকেট কমিটির বিরুদ্ধে তীব্র সমালোচনা করেন।
সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ একটি ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যবাহী সংগঠন। অথচ কিছু কিছু নেতাদের অগঠনতান্ত্রিক, স্বেচ্ছাচারীতা ও স্বজনপ্রীতির কারনে সংগঠনটিতে আজ কালিমা লিপ্ত হতে চলেছে। ২০১৯ সালের ২৩ নভেম্বর কলাপাড়া পৌর আওয়ামীলীগের বর্ণাঢ্য সম্মেলনের মাধ্যমে বিপুল চন্দ্র হাওলাদার ও দিদার উদ্দিন আহম্মেদ মাসুমকে যথাক্রমে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে পূর্ণাঙ্গ একটি কমিটি করার দায়িত্ব দেয়া হয়। এরমধ্যে কলাপাড়া পৌর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলে দলীয় কাউন্সিল অনুষ্ঠান উপলক্ষে আমরা সেই পূর্ণাঙ্গ কমিটি দেখতে পাই। সে কমিটিতে দেখা যায়, শওকত হোসেন তপন বিশ্বাস বর্তমান লালুয়া ইউনিয়নের চেয়াম্যান ও লালুয়ার ভোটার থাকা স্বত্বেও তাকে কার্যনির্বাহী কমিটির ১০ নং সদস্য করা হয়েছে। যা কিনা সম্পূর্ন সংগঠনের আইনের পরিপন্থি একটি বিষয়। এছাড়াও, সভাপতির ছোট ভাই হীরা হাওলাদার স্বপন উপজেলা শ্রমিকলীগের সদস্য থাকলেও কাউন্সিলে ভোট পাওয়ার আশায় ১৪ নং সদস্য করা হয়েছে। এভাবে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক এ্যাড. আ: রব, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বাবু আনন্দ চন্দ্র সুকুল, শিক্ষা ও মানব বিষয়ক সম্পাদক নবাব আলী শাউগার, সহ-দফতর সম্পাদক সুমন বালা, কার্যনির্বাহী কমিটির ৩৩ নং সদস্য হান্নান হাওলাদার, ৩৫ নং সদস্য মো. নিজাম মিয়া, ৩৬ নং সদস্য মো. ফয়সাল মিয়া ও ৩৭ নং সদস্য মো. দেলোয়ার হোসেন বিভিন্ন ইউনিয়নের স্থায়ীবাসিন্দা ও ভোটার থাকা স্বত্বেও নিজস্ব স্বার্থ হাসিল করার জন্য স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে সাজানো একটি কমিটি করা হয়। এতে পৌরসভার ত্যাগী ও বঞ্চিত নেতারা উপেক্ষিত হন। এই কমিটিতে পৌর আওয়ামীলীগের ত্যাগী নেতাদের প্রতিফলন ঘটে নাই। ফলে, বঞ্চিত নেতা কর্মীরা ১৩ অক্টোবর ২০২০ একটি সংবাদ সম্মেলন করেন। যাহা বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হইলে, উপজেলা ও জেলা আওয়ামীলীগের নীতিনির্ধারকরা বঞ্চিত নেতা কর্মীদের কমিটিতে অন্তভর্ূক্ত করার আশ্বাস দেন। তিনি আরোও বলেন, বিগতদিনে পৌর আওয়ামীলীগের দুইটি কমিটিতে আমার নাম থাকলেও এই কমিটিতে আমি সদস্য পদও পাই নাই। তারপরও দলীয় বিধানের কারনে মেয়র নির্বাচনের জন্য দলীয় মনোনয়ন ফরম পূরণ করেছিলাম, কিন্তু স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে তৈরিকৃত কমিটি কালো টাকার বিনিময়ে ভোটার প্রভাবিত করায় কাউন্সিলে সুবিচার পাব না বলেই আমি মেয়র প্রার্থী হিসাবে কাউন্সিলে তামাশার ভোট বর্জন করি। তবে, তিনি এখনও আওয়ামীলীগের কেন্দ্রিয় নীতিনির্ধারকদের সচেতনতা ও সু-বিচারের অপেক্ষায় রয়েছেন। যদি কলাপাড়ার তৃনমূলের নেতা-কর্মীদের চাহিদার কথা বিবেচনা করে কেন্দ্রীয় নেতারা তাকে নৌকার প্রার্থী হিসাবে নির্বাচিত করেন তাহলে নৌকার বিজয় ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।সংবাদ সম্মেলনে মো. ফিরোজ সিকদারের সাথে আরোও উপস্থিত ছিলেন, কলাপাড়া পৌর আ.লীগের সাবেক শ্রম-বিষয়ক সম্পাদক এ.বি.এম খালেক, সাবেক পৌর মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আশ্রাফ আলী, সাবেক পৌর সদস্য হাজী মো. নাসির উদ্দিন, পৌর স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি আ: সালাম বিশ্বাস, সহ-সভাপতি মো. আমিনুল ইসলাম ও স্বেচ্ছাসেবকলীগের কলাপাড়া উপজেলা দপ্তর সম্পাদক মো. জসিম গাজী প্রমুখ।