ওমানের পর এবার সিলেটের বিশ্বনাথের টেংরা গ্রামের আব্দুল হক (৩০) নামের এক যুবককে আয়ারল্যান্ড পাঠানোর নামে ভারতে আটকে রেখে দেশে ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ আদায় করা হয়েছে। এ ঘটনায় মুক্তিপণ আদায়কারী আব্দুস সালাম (৪৮) ও তার ছেলে নাইমুর রহমান সাকিবকে (২৫) সিলেট থেকে গ্রেপ্তার করেছে বিশ্বনাথ থানা পুলিশ। তারা সিলেটের এয়ারপোর্ট থানাধীন আম্বরখানাস্থ ঐক্যতান পীর-মহল্লার বাসিন্ধা। মঙ্গলবার (১৮আগষ্ট) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে পিতা-পুত্র দু’জনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। আগেরদিন সোমবার রাতে নিজ বাসা থেকেই তাদের দু’জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।এজাহার সূত্রে জানাগেছে, ২০১৯ সালের ১ আগষ্ট আব্দুল হককে আয়ারল্যান্ড পাঠানোর জন্য ১২লাখ টাকায় চুক্তি করেন দালাল আব্দুস সালাম। এর পর ৬আগষ্ট ভিসা তোলার কথা বলে তাকে ভারতে পাঠান দালাল সালাম। এর ৪/৫দিস পর দালাল সালামের ছেলে সাকিব ভারতে গিয়ে আব্দুল হককে ভিসা তোলার জন্য দিল্লিতে নিয়ে যান। সখোনে অ্যাম্বেসিতে না নিয়ে তাকে একটি বাসায় তালাবদ্ধ করে রাখেন। এ বিষয়ে হানতে চাইলে আব্দুল হককে সাকিব বলেন, ১০লাখ টাকা না দিলে তোকে অ্যাম্বেসিতে তোলা যাবে না। এরপর দেশে থাকা আব্দুল হকের ভাই আব্দুর রবকে দিয়ে দালাল সালামের নিকট ১০লাখ টাকা মুক্তিপণ দেন। মুক্তিপণ আদায়ের এক মাস ২০দিন পর তাকে নয়া-দিল্লির নির্জন একটি স্থানে ফেলে দেয় দালাল চক্র। ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসের শেষের দিকে দেশে ফিরেন আব্দুল হক। এর ৬মাস পর ২০২০ সালের ১এপ্রিল সিলেটের মানবপাচার প্রতিরোধ ট্রাইব্যুনালে আব্দুল হক একটি মামলা দায়ের করেন, (মামলা নং ২)। মামলার বাকি আসামিরা হচ্ছেন, গ্রেপ্তার হওয়া আব্দুস সালামের স্ত্রী আমিরুন বেগম (৪০) ও দক্ষিণ সুরমার মামরখপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলাম (৪৪)।এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই দেবাশীষ শর্ম্মা সাংবাদিকদের বলেন, গ্রেপ্তারকৃতদের পেশাই হচ্ছে দালালি। তারা ইউরোপ পাঠানোর কথা বলে ভারতসহ বিভিন্ন দেশে তাদের দালাল চক্রের মাধ্যমে বৃহত্তর সিলেটের সহজ-সরল মানুষদের আটকে রেখে মুক্তিপণ আদায় করে। তাদের বিরুদ্ধে মামলার প্রেক্ষিতে গ্রেপ্তারের পর জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। তাছাড়া বাকি আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত আছে বলেও জানান তিনি।