ভাতে ক্যালোরির পরিমাণ বেশি থাকায় যাদের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি রয়েছে অথবা যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত তাদেরকে ডাক্তাররা সবসময় ভাত কম খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। এ নিয়ে অনেকেই শঙ্কায় থাকেন ভাত কি পরিমাণ খাবেন তা নিয়ে।
কিন্তু শ্রীলংকার বিজ্ঞানীরা ভাত রান্নার এক নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন। রান্নার এই পদ্ধতিতে ভাতে ক্যালরির পরিমাণ কমিয়ে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করা সম্ভব।
পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষের প্রধান খাদ্য ভাত। কিন্তু যারা ভাত খান তাদের মধ্যে ডায়াবেটিস আক্রান্ত হবার ঝুঁকি বেশি থাকে। কারণ বিজ্ঞানীরা বলেন, বিশেষ করে সাদা ভাতে যে ক্যালরি পাওয়া যায়, তা দেহে শর্করা এবং মেদের পরিমাণ বাড়িয়ে থাকে। বিজ্ঞানীদের মতে, এরকম এককাপ ভাতে প্রায় ২০০ ক্যালরি পাওয়া যায়।
শ্রীলংকার দুজন বিজ্ঞানী সুদাহির জেমস এবং ড. পুষ্পরাজা তাবরাজা সেদেশের কলেজ অব কেমিক্যাল সায়েন্সে এই গবেষণাটি করেছেন। গবেষণা শেষে তারা বলছেন, এই নতুন পদ্ধতিতে ভাত রান্না করা হলে এর ক্যালরির পরিমাণ অর্ধেক কমিয়ে আনা সম্ভব।
সম্প্রতি আমেরিকান কেমিক্যাল সোসাইটির জাতীয় সভায় তারা এই গবেষণার প্রাথমিক ফল প্রকাশ করেন।
কি সেই পদ্ধতি?
গবেষক সুদাহির জেমস বলছেন, ‘প্রথমে পাত্রে পানি ফোটাতে হবে, এরপর তাতে যে পরিমাণ চাল রান্না করবেন তার প্রায় তিন শতাংশ পরিমাণ নারকেল তেল দিতে হবে। এরপর সেই ফুটন্ত পানিতে চাল ঢেলে দিতে হবে। ভাত হয়ে গেলে তা ফ্রিজে ১২ ঘন্টা রেখে ঠান্ডা করতে হবে।’
ড. পুষ্পরাজা বলেন, নারকেল তেল দিয়ে ভাত রান্না এবং তারপর তা ১২ ঘন্টা ধরে ঠান্ডা করার ফলে ভাতের ভেতর যে স্টার্চ বা শ্বেতসার আছে – তার রাসায়নিক প্রকৃতি বদলে যায় এবং তার ক্যালরির পরিমাণ কমিয়ে দেয়।
তিনি আরও বলেন, ক্যালরির পরিমাণ কমে যাওয়া মানেই সেই ভাতের ডায়াবেটিসের ঝুঁকিও কমে যাওয়া।
তারা এ পর্যন্ত শ্রীলংকার ৩৮ প্রজাতির চাল নিয়ে এ পরীক্ষা চালিয়েছেন। এখন তাদের লক্ষ্য বাকি প্রজাতির চালের ওপর এই পরীক্ষা চালানো এবং নারকেল তেল ছাড়া অন্য তেল দিয়েও এই সুফল পাওয়া সম্ভব কিনা তাও বের করা। সূত্র: বিবিসি