প্রশাসনকে বৃদ্ধা আঙ্গুল দেখিয়ে নদীতে সোঁতি জাল দিয়ে মাছ শিকার

পাবনার চাটমোহরে বিভিন্ন নদীতে বাঁশের বেড়া (বানা) নির্মাণ করে অবৈধ সোঁতি জাল দিয়ে মাছ শিকার করা হচ্ছে। বেড়ার কারণে আবাদি জমি থেকে পানি নামতে দেরি হচ্ছে। ফলে সরিষা ও রসুনের আবাদ পিছিয়ে পরার আশঙ্কা করছে কৃষকরা। রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রচ্ছায়ায় কয়েকজন ব্যক্তি সোঁতি জাল পেতে মাছ ধরছে বলে অভিযোগ করেছে কৃষকরা।

প্রশাসনের জাল উচ্ছেদ অব্যহত থাকলেও পুলিশ প্রশাসন গিয়ে জাল উচ্ছেদ করে আসলে তার কয়েক ঘন্টা পরই জাল মেরামত করে শুরু হয় মাছ ধরা। এতে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

জানা যায়, চাটমোহর গুমানী নদীর ধরমগাছা, মুনিয়াদীঘি কৃষি কলেজের পাশে, চিনাভাতকুর কবরস্থান ও কিনু সরকারের জোলার পাশে এবং কাটা নদীর পাইকপাড়া পয়েন্টে সোঁতি জাল পেতে মাছ ধরা হচ্ছে।

কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, সোঁতি জালের বেড়ার কারণে আবাদি জমি থেকে পানি নামতে অনেক দেরি হচ্ছে। ফলে সরিষা ও রসুনের আবাদ পিছিয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা তাদের। আর সরিষা-রসুনের আবাদ পেছালে বোরো ধানের আবাদও পেছাবে। এতে ফলন অনেক কম হবে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করছে তারা। এ ছাড়া বেড়ার কারণে পানির স্বাভাবিক প্রবাহ বাধাগ্রস্থ হচ্ছে, সৃষ্টি হচ্ছে তীব্র স্রোত। ফলে বেড়াসংলগ্ন এলাকার বসতবাড়ি ও আবাদি জমি ভাঙ্গনের মুখে পড়েছে।

প্রশাসনের বিরুদ্ধে কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, প্রশাসনের অভিযান লোক দেখানো। অভিযানের সময় বেড়ার দুই-একটা বাঁশ আর জালের কিছু অংশ কেটে দেওয়া হয়। কিন্তু পুরো বেড়া অপসারণ করা হয় না কিংবা জালের পুরা অংশ কাটা বা উঠানো হয় না। অভিযানকারীরা ঘটনাস্থল ত্যাগের তিন-চার ঘন্টা পরই জাল মেরামত করে আবার মাছ ধরা শুরু হয়।

উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, সোঁতি জাল দিয়ে মাছ শিকার মৎস্য আইনে নিষিদ্ধ। এর শাস্তি সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা বা দুই বছরের জেল। সোঁতি জাল দিয়ে মাছ ধরা চলনবিল এলাকার মানুষের ঐতিহ্য। প্রতিবছরই এটা ঘটে। আমরা অভিযান চালাচ্ছি। অভিযান অব্যহত থাকবে। সোঁতি জাল জড়িতদের সাঙ্গে কোনো আপস করা হবে না।

উপজেলা সকারী কমিশনার (ভূমি) ইকতেখারুল ইসলাম জানান, আগামী উপজেলা আইন-শৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভায় সোঁতি জাল দিয়ে মাছ ধরার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করা হবে।