মোঃ ইমাম উদ্দিন সুমন, নোয়াখালী প্রতিনিধিঃ মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি, পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সাবেক বিরোধী দলীয় নেতা ও বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের সাবেক স্পীকার আবদুল মালেক উকিলের ৩২ তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ (১৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার)। নানা কর্মসূচির মধ্যদিয়ে পালিত হয়েছে। নোয়াখালীতে আওয়ামীলীগ সহ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দিনটি পালন করা হয় ।
এসব কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা অর্ধনমিতকরণ এবং কালো পতাকা উত্তোলন, সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মরহুমের করব জিয়ারত, দোয়া ও ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন। বিকেলে জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল, এছাড়া বাধেরহাট আব্দুল মালেক উকিল ডিগ্রি কলেজ, আব্দুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ, মাইজদী গার্লস একাডেমি হাট স্কুল, মোহামেডান স্পোটিং ক্লাবে আলোচনা ও মিলাদ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে।
আব্দুল মালেক উকিল ১৯২৪ সালের ১ অক্টোবর নোয়াখালী সদর উপজেলার রাজাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
আবদুল মালেক (১৯২৪ -১৯৮৭) আইনজীবী ও রাজনীতিক। ১৯২৫ সালের ১ অক্টোবর নোয়াখালী জেলার সদর উপজেলার রাজাপুর গ্রামে তাঁর জন্ম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৫১ সালে এম.এ এবং ১৯৫২ সালে এল.এলবি ডিগ্রি লাভ করে তিনি নোয়াখালীতে আইন ব্যবসা শুরুকরেন। ছাত্রজীবনেই তিনি রাজনীতিতে যোগ দেন। তিনি পূর্ব বাংলা মুসলিম ছাত্রলীগের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহি কমিটির সদস্য (১৯৬৪-৭২), কমনওযয়েলথ পার্লামেন্টারি অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি (১৯৬৫-৬৯), ঢাকা হাইকোর্ট বার কাউন্সিলের সদস্য (১৯৬৬-৬৯) ছিলেন। তিনি ১৯৬৬ সালে লাহোরে অনুষ্ঠিত বিরোধীদলীয় সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। তিনি ১৯৭৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন।
আবদুল মালেক উকিল ১৯৫৬, ১৯৬২ ও ১৯৬৫ সালে পরপর পূর্ব পাকিস্তান প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৬৫ সালে তিনি প্রাদেশিক পরিষদে আওয়ামী লীগ সংসদীয় দলের ও সম্মিলিত বিরোধী দলের নেতা ছিলেন। ছয়দফা আন্দোলনকালে নিরাপত্তা আইনে তিনি কারাবরণ করেন। ১৯৭০ সালে নোয়াখালী-৪ আসন থেকে তিনি পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৭১ সালে তিনি প্রবাসী মুজিবনগর সরকারের সাহায্য ও পুনর্বাসন কমিটির সদস্য ছিলেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে বিশ্বজনমত সৃষ্টির লক্ষ্যে এক সংসদীয় দলের সদস্য হিসেবে তিনি নেপাল সফর করেন।
মালেক উকিল বাংলাদেশের সংবিধান প্রণয়ন কমিটির সদস্য ছিলেন। ১৯৭২ সালে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মন্ত্রিসভায় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা মন্ত্রী ছিলেন। ১৯৭৩ সালে তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং নতুন মন্ত্রিসভায় তাঁকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়া হয়। ১৯৭৫ সালে তিনি জাতীয় সংসদের স্পীকার নির্বাচিত হন। ১৯৮৬ সালের নির্বাচনে তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য এবং সংসদে বিরোধীদলীয় উপনেতা নির্বাচিত হন। তিনি ১৯৮৭ সালের ১৭ অক্টোবর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন।