বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ক্যাম্পাসে ছাত্র রাজনীতি থাকার দরকার নেই বলে মনে করছেন বুয়েট শিক্ষক সমিতি। আজ মঙ্গলবার বুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক এ কে এম মাকসুদ এ মন্তব্য করেন। আবরার হত্যার ঘটনায় এক লিখিত বক্তব্য শেষে এ মন্তব্য করেন তিনি।
এর আগে বুয়েট শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদকে পিটিয়ে হত্যার প্রেক্ষাপটে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার কথা বলেছেন ছাত্র কল্যাণ উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান। আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার শিক্ষার্থীদের আন্দোলনস্থলে গিয়ে তিনি একথা বলেন।
অধ্যাপক মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমাদের দেশে বর্তমানে যে পরিস্থিতি, তাতে আমার মনে হয় না যে কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র রাজনীতি থাকার দরকার আছে। বুয়েটে ছাত্র রাজনীতি থাকার কোনো প্রয়োজন নেই।’
তবে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপের কথা না বলায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখান আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে মিজানুর রহমান বলেন, ‘আমি উপাচার্যকে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করার কথা বলতে পারি। এখানে ছাত্র রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে।’ লিখিত বক্তব্যে বুয়েট প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে বুয়েট শিক্ষক সমিতির অভিযোগ করেছে।
গত ৬ অক্টোবর রাতে শেরে বাংলা আবাসিক হলের ছাত্র আবরার ফাহাদকে নির্মমভাবে হত্যার ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন শিক্ষার্থী নির্যাতনের শিকার হবে এবং মৃত্যুবরণ করবে তা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। শিক্ষকেরা বলেন, একাডেমিক ভবন, আবাসিক হলসহ সমগ্র ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। আবরারকে হত্যা প্রমাণ করেছে, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কর্তৃপক্ষ সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে।
তারা বলেন, অতীতে বিভিন্ন সময়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ঘটে যাওয়া নির্যাতন ও র্যাগিংয়ের ঘটনায় দোষীতদের শাস্তি প্রদানে কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তায় আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটেছে। যার ফলশ্রুতিতে আবরার হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, এর দায় কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না। আবরারকে হত্যায় জড়িত শিক্ষার্থীদের দ্রুততম সময়ের মধ্যে চিহ্নিত করে সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করার জোর দাবি জানান শিক্ষকেরা। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান তারা।
পরে বুয়েট শিক্ষক সমিতির সভাপতি সভাপতি অধ্যাপক ড. এ কে এম মাসুদ শিক্ষার্থীদের ৮ দফা দাবির সঙ্গে একাত্মতা পোষণ করেন। আবরার হত্যায় জড়িতদের শাস্তির জোরালো দাবি জানান তিনি।
উল্লেখ্য, রোববার (৬ অক্টোবর) দিবাগত মধ্যরাতে বুয়েটের সাধারণ ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আবরারকে শেরেবাংলা হলের দ্বিতীয় তলা থেকে অচেতন অবস্থায় উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে যান। সোমবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।