হাসান মাহমুদ, আলীকদম (বান্দরবান) প্রতিনিধি
যোগদানের পর থেকে কোন কোন প্রকার ডিউটি ছাড়াই বেতন নিচ্ছেন আলীকদম হাসপাতালের ডাঃ ইফতেখারুল ইসলাম। গত ৬ ফেব্রুয়ারী আলীকদম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যোগদানের পর থেকেই দেখা মিলেনি এই ডাক্তারের। হালে চিকিৎসক সংকটে রোগীরা সেবা বঞ্চিত হচ্ছে বলে একান ওকান জুড়ে রয়েছে নানা কথা। একজন ডাক্তারের উপর আলীকদম উপজেলার ৮০ হাজার মানুষের চিকিৎসাভার।
বিশ্বস্থ সূত্রে জানা যায়, ডাঃ ইফতেরখারুল ইসলাম আলীকদম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ শহিদুর রহমানের সাথে অনৈতিক সুবিধা বিনিময়ের মাধ্যমে এই সুবিধা নিয়ে আসছে দীর্ঘ সাত মাস যাবত। অতিরিক্ত আয়ের জন্য তিনি বর্তমানে চট্টগ্রাম ডেলটা হাসপাতালে চেম্বার করছেন তিনি। একদিকে সরকারী বেতন অন্যদিকে প্রাইভেট চেম্বারের বর্ধিত আয়। যার কিছু অংশ পাচ্ছেন আলীকদম উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা।
গত ২২ সেপ্টেম্বর আলীকদমে কর্মরত সংবাদিকরা এবিষয়ে জানতে চাইলে শহিদুর রহমান সাংবাদিকদের কোন তথ্য প্রদান করতে চায়নি। দীর্ঘ দুই ঘন্টা সাংবাদিকদের সাথে বাক বিতন্ডার পর বান্দরবান সিভিল সার্জন অংশৈপ্রু মার্মার নির্দেশে তিনি সাংবাদিকদের সাথে এবিষয়ে কথা বলতে রাজি হন। এক পর্যায়ে তিনি ছোট একটি চিরকুকে করে সাংবাদিকদের তথ্য প্রদান করেন। তার দেওয়া তথ্যমতে ডাক্তার ইফতেখারুল ইসলাম সাত মাসের মধ্যে সিএল ও ইএল মিলে তিন মাস ছুটি ভোগ করেন। সর্বশেষ গত ০৯ সেম্পেম্বর আরো এক মাসের ইএল দেখানো হয়েছে ওই ডাক্তারকে। যা আগামী ০৮ অক্টোবর শেষ হবে। অবশিষ্ঠ তিন মাসও তিনি কোন প্রকার অনুমোদন ছাড়াই ছুটি কাটাচ্ছেন বলে জানা গেছে গোপন সূত্রে।
এদিকে আলীকদম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ১১ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও বর্তমানে পোষ্টেড রয়েছেন ৪ জন ডাক্তার। যার মধ্যে একজন ডেপুটেশনের লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমেপ্লক্সে রয়েছে, দুই জন ডাক্তার কর্মরত আছেন আর অপরজন ডাক্তার ইফতেখার। কর্মরত দুই জন ডাক্তারের মধ্যে একজন ডাক্তার বেশিরভাগ সময় ছুটি, বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় প্রোগ্রাম, মিটিং ও ট্রেনিং করতে করতেই দিনে শেষ হয়ে যায়। মোদ্দা কথা একজন ডাক্তারের উপর আলীকদমের ৮০ হাজার মানুষের চিকিৎসাভার।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ডাঃ ইফতেখারুল ইসলাম বলেন, আমার বাড়ি চট্টগ্রাম। বাড়ি থেকে যাতায়াত করেই আমাকে চাকুরী করতে হয়। তার জন্য আমার পক্ষে নিয়মিত দায়িত্ব পালন করা সম্ভব হয়না। বর্তমানে আমি চট্টগ্রাম ডেলটা হাসপাতালে চেম্বার করছি। তবে ইউএইচএন্ডএফপিও’কে মুঠোফোনে বারবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এবিষয়ে জানতে চাইলে বান্দরবান সিভিল সার্জন অংশৈপ্রু মার্মা বলেন, সরকার আমাদেরকে বেতন দেয় মানুষের সেবার জন্য। সরকারী বেতন নিয়ে দয়িত্ব অবহেলা করার সুযোগ নেই। কেউ দায়িত্ব পালন করতে না চাইলে চাকুরী ছেড়ে চলে যেতে পারে। আমি বিষয়টি দ্রুত তদন্ত করে দেখবো এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।