তৃণমুল পর্যায়ে টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়বায়নে ‘রোল মডেল’ হিসেবে অগ্রসর হচ্ছে গয়েশপুর ইউনিয়নের ‘কাকরকাটা’ গ্রাম

টেকসই উন্নয়ন সর্বাগ্রে জনগণ-সুখ শান্তি বাস্তবায়নে অঙ্গিকারবদ্ধ মোরা টেকসই উন্নয়নে’ এই স্লোগানকে প্রতিপাদ্য করে কাজ করে যাচ্ছে পাবনা সদর উপজেলার গয়েশপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের স্থানীয় জনগণ।এই ওয়ার্ড ও পার্শ্ববর্তী অন্যান্য গ্রামবাসীর প্রচেষ্টায় টেকসই উন্নয়নের ১৭ টি Goal তৃণমুল পর্যায়ে বাস্তবায়নের জন্য কাজ চলছে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায় যে, পাবনার লক্ষ্মীপুর গ্রামের অধিবাসী ও অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী প্রফেসর ড. মো: আমজাদ হোসেন ( SDG Co-ordinator, Bangaldesh Chapter, Curtin University, Australia ) এবং কাকরকাটা গ্রামের অধিবাসী পাবনা সরকারি কলেজের সংযুক্ত কর্মকর্তা বাংলা বিষয়ের সহকারি অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, মাউশি ঢাকা) এর উৎসাহ ও পরিকল্পনায় সদর উপজেলার কাকরকাটা গ্রামের স্থানীয় জনগণ গয়েশপুর ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডকে টেকসই উন্নয়নের মডেল হিসেবে বাস্তবায়ন করার স্বপ্ন দেখছে ২০১৭ সাল থেকে। প্রাথমিক অবস্থায় ডা. আমজাদ হোসেনের পরামর্শ ও নির্দেশনায় এবং গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের গৃহীত ‘একটি গ্রাম একটি’ শহর প্রকল্পের ভাবনা সমূহকে লালন করে কাকরকাটা গ্রামকে টেকসই উন্নয়নের পাবনা মডেল হিসেবে বাস্তবায়নের জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে । তারই ধারাবাহিকতায় গ্রামবাসীর সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বিশেষ করে ছাত্র ও যুবসমাজকে সাথে নিয়ে স্থানীয় SDG কমিটি মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম এর উৎসাহে কাজ করে যাচ্ছে। ২০১৭ সাল থেকে এ গ্রামের জনগণ টেকসই উন্নয়নের ব্যানারে তৃণমূল পর্যায়ে প্রকৃত টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়নে কাজ করছে বলে স্থানীয় সূত্রে জানা যায় । এছাড়া কিছু দানশীল বড় মনের ভাল মানুষের পৃষ্ঠপোষকতায় “দারিদ্র্য বিমোচন, ক্ষুধামুক্তি, সুস্বাস্থ্য-কল্যাণ,গুনগত শিক্ষা” টেকসই উন্নয়নের এই সমস্ত উদ্দেশ্যগুলোকে সমৃদ্ধ করার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বস্ত সূত্রে খবর পেয়ে গত ২৮ আগস্ট (বুধবার) পাবনার সম্মানিত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জনাব শাহেদ পারভেজ পরিদর্শন করতে গিয়েছিলেন কাকরকাটা গ্রাম। স্থানীয় জনসাধারনের অর্থায়নে বৃক্ষরোপন কর্মসূচী এবং সমাজে বিদ্যমান সমাজ বিনষ্টকারী কার্যক্রম সমূহ (মাদক, জুয়া, বাল্য বিবাহ, যৌতুক, বন্য পশুপাখি নিধন) থেকে গ্রামটিকে মুক্ত রাখার মহতী প্রচেষ্টার তিনি প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, কাকরকাটা গ্রামকে অনুকরণ করে অন্যান্য গ্রাম এজাতীয় মহৎ উদ্দেশ্য গ্রহন করতে পারলে আমরা প্রকৃত টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়ন করতে পারব। গত বুধবারে স্থানীয় পর্যায়ে ঝউএ বিষয়ক আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পাবনা সরকারি কলেজের বাংলা বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক জনাব মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম, সরকারি এডওয়ার্ড কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক জনাব হাফিজ ইকবাল এবং পাবনা সরকারি মহিলা কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়ের সহকারী অধ্যাপক জনাব কামরুন্নাহার। স্থানীয় তৃণমূল পর্যায়ের প্রতিনিধি হিসেবে মোঃ কামরুল হাসান (পাতা), রবিউল ইসলাম ও হযরত আলী মিন্টু অত্র অঞ্চলের টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়ন প্রচেষ্টার গৃহীত পদক্ষেপ সমূহের বর্ণনা দেন এবং এই অঞ্চলের কৃষি নির্ভর পরিবার সমূহের অন্যতম একটি সমস্যার কথা তুলে ধরেন। স্থানীয় প্রতিনিধিরা জানায়, শহর কেন্দ্রীক কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি আবাদী ফসলের মাঠে মাছ চাষের প্রজেক্ট সৃষ্টি করে প্রায় ৩০০-৪০০ বিঘা জমির পানি অপসারনের বাধা সৃষ্টি করেছে। যার ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে সমস্ত ফসলের মাঠ। এর আগে উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাদের বিষয়টি অবগত করা হলেও এর থেকে মুক্তি মেলেনি এলাকার হত দরিদ্র কৃষকদের। এই বিষয়টিকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক অনৈতিক, গর্হিত ও জঘন্য কাজ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন এবং জেলা প্রশাসককে বিষয়টি অবহিত করে প্রয়োজনে সম্মানিত জেলা প্রশাসক মহোদয়কে সরোজমিন পরিদর্শনের অনুরোধ করবেন এবং সমস্যাটি আশু সমাধানের চেষ্টা করবেন বলে গ্রামবাসীকে আশ্বাস দেন।