ইযানূর রহমান : যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে ডেঙ্গু কর্নারের শয্যা ২৬টি। অথচ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন ১০১ জন। স্থান সংকুলান না হওয়ায় বাকি রোগীদের ঠাঁই হচ্ছে বারান্দা ও মেঝেতে। ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফেরার তুলনায় প্রতিদিন প্রায় দ্বিগুন ভর্তি হওয়ায় রোগী চাপ বেড়েই চলেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত ২৫০ শয্যার এ হাসপাতালে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মোট ৪২৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন ছিলেন।
এদিকে, বুধবার সকাল ৮ থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত এ হাসপাতালে আরো ৩৪ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। এ সময়ের মধ্যে যশোর জেলায় নতুন করে ৫৪ জন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে বলে সিভিল সার্জন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে।
হাসপাতালের প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে, ডেঙ্গু রোগীদের চিকিৎসার সুবিধার্থে ডেঙ্গু কর্নার চালু করা হয়েছে। ডেঙ্গু কর্ণারের পুরুষ ওয়ার্ডে দেয়া হয়েছে ২৬টি শয্যা। আর হাসপাতালের সভাকক্ষে তৈরি করা নারী ও শিশু ওয়ার্ডে কোনো শয্যা দেয়া হয়নি। এখানকার রোগীরা মেঝেতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীদের উন্নত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করার জন্য তিনটি মনিটরিং সেলের সদস্যরা দায়িত্ব পালন করছেন।
সরেজমিনে দেখা গেছে, ডেঙ্গু কর্নারের দুটি ওয়ার্ডে মোট চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৫০ জন। এছাড়া বিভিন্ন ওয়ার্ডে আলাদা জায়গা করে রাখা হয়েছে ২০ জন রোগী। বাকি ৩০ জন ডেঙ্গু রোগী বাইরের মেঝেতে শুয়ে চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করছেন। ডেঙ্গুর পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত রোগীদেরও ঠাঁই হচ্ছে বারান্দায়। জায়গা সংকটের কারণে এ অবস্থা বিরাজ করছে।
জানা যায়, হাসপাতালের ডেঙ্গু কর্নার থেকে শুরু করে শিশু ওয়ার্ডের বারান্দা পেরিয়ে দুইতলার মডেল ওয়ার্ডের সামনে থেকে প্রায় অস্ত্রোপচার কক্ষের বারান্দা পর্যন্ত রোগীদের ঠাঁই হয়েছে। যেনো পা ফেলার জায়গা নেই।
স্বজন আতিয়ার রহমান ও জুলফিকার আলী জানান, তাদের রোগীর শ্বাস কষ্টের কারণে এ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ওয়ার্ডে জায়গা না থাকার কারণে থাকতে দেয়া হয়েছে বারান্দায়। বাধ্য হয়ে নোংরা পরিবেশে থেকে রোগীর চিকৎসা নিতে হচ্ছে।
আছিয়া খাতুন নামে একজন জানান, তার রোগীর জন্য মহিলা পেইং ওয়ার্ডে তিনদিন ধরে যোগাযোগ করেও শয্যা পাওয়া যায়নি। রোগীর চাপের কারণে শয্যা পাওয়া যেনো ভাগ্যের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জানা গেছে, ২৫০ শয্যার হাসপাতালে দ্বিগুণের বেশি রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের চিকিৎসাসেবা প্রদানে হাঁফিয়ে উঠেছেন চিকিৎসক ও সেবিকারা।
হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবুল কালাম আজাদ লিটু জানান, প্রতিদিন বেড়েই যাচ্ছে ডেঙ্গু রোগী। বৃহস্পতিবার ২২ জন ডেঙ্গু রোগীকে ছাড়পত্র দেয়া হয়েছে। নতুন করে ডেঙ্গু রোগী যোগ হয়েছে ৩৪ জন। সেই সঙ্গে ভর্তি হচ্ছেন অন্য রোগীরা। এভাবে রোগী বেড়ে যাওয়ায় তিনি নিজেও চিশ্চিন্ত। জায়গা সংকুলান না হওয়ায় রোগীদের বারান্দা ও মেঝেতে রেখে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ডেঙ্গু রোগীর চাপ কমে গেলে অন্য রোগীদেরও দুর্ভোগ লাঘব হবে।