মশাহিদ আহমদ, মৌলভীবাজার ঃ কমলগঞ্জের শ্রীপুর গ্রামে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আব্দুস সোবহানের ব্যক্তিমালিকানা জায়গার জমি জবরদখল করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর “জায়গা আছে ঘর নাই” প্রকল্পের আওতায় সরকারিভাবে ঘর নির্মাণ করলেন স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতা। অভিযোগ উঠেছে, একই গ্রামের মৃত আব্দুর রহিমের পুত্র স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা ইসমাইল মিয়া গংরা মিলে অবসরপ্রাপ্ত সেনাসদস্য মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সোবহানের খরিদা জমি জোরপূর্বক দখল করে নেন। জমি দখলে বাধা দিলে মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের নারী-পুরুষ সদস্যদের মারধর করে রক্তাক্ত জখম করা হয়। পরে দখল করে নেয়া জমিতে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় ঘর নির্মাণের উদ্যোগ নেন ঐ আওয়ামী লীগ নেতা। এ বিষয়ে বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সোবহান কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে চলতি বছরের ২৪শে জানুয়ারি লিখিত অভিযোগ করেন। উক্ত অভিযোগের আলোকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ৪ঠা ফেব্রুয়ারি কমলগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর পত্র দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশেকুল হক। কিন্তু পুলিশ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নামে সময়ক্ষেপণ করায় যোগাযোগীমূলে ইসমাইল মিয়ার নামে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের ঘর নির্মাণ করে দেয়া হয়। এ বিষয়ে অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আব্দুস সোবহান গত ৩ মার্চ সিলেটস্থ সশস্ত্র বাহিনী বোর্ড বরাবরে লিখিত আবেদন করলে বোর্ডের সচিব মেজর মো. রকিবুল হাসান তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মৌলভীবাজার আইন শৃংখলা কমিঠির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক বরাবর গত ৪ মার্চ সুবিচার নিশ্চিতকল্পে তদন্তপূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য পত্র প্রেরণ করেন। উক্ত পত্রের আলোকে সরজমিন তদন্ত পূর্বক রেকর্ডপত্র যাচাই অন্তে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের রাজস্ব মুন্সিখানা শাখা কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে পত্র দেন। এভাবে চিঠি আদান-প্রদান আর তদন্তের নামে কেটে যায় আরও ৭ মাস। মুক্তিযোদ্ধা সোবহানের জমি জোরপূর্বক দখল করে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ ‘জমি আছে ঘর নাই’ প্রকল্পের আওতায় ঘর নির্মাণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। অভিযোগে জানা যায়, কমলগঞ্জের ইসলামপুর ইউনিয়নের শ্রীপুর গ্রামের মৃত আব্দুল জব্বারের পুত্র অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আব্দুস সোবহান ১৯৯১ সালে ১৪৬৬নং দলিল মূলে শ্রীপুর মৌজায় দুই দাগে ২২ শতক জমি কিনেন। পরে ওই জমি নিজের নামে নামজারিসহ রেকর্ড সৃষ্টি করে ভোগ দখল করে আসছিলেন। চলতি বছরের প্রথমদিকে তার খরিদা ওই জমির উপর লোলপ দৃষ্টি পড়ে স্থানীয় ভূমিখেকো চক্রের। বীর মুক্তিযোদ্ধা অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য আব্দুস সোবহান বলেন- আমি খরিদা সুত্রে ঐ ভূমির মালিক। স্থানীয় প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা ইসমাইল মিয়ার কোন সম্পত্তি নেই। ইউনিয়ন ভূমি অফিসসহ সংশি¬ষ্টদের অবৈধভাবে যোগাযোগীমূলে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর “জায়গা আছে ঘর নাই” প্রকল্পের আওতায় সরকারিভাবে ঘর নির্মাণ করেছেন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেতা ইসমাইল মিয়া গংরা। তিনি আরো বলেন, আমাকে হত্যার উদ্যেশ্যে ধাওয়া করা হয়, আমি খুব শংকায় দিনপাত করছি। এরা ভয়ংকর প্রকৃতির লোক, আমার জান মালের ক্ষতি সাধন করতে পারে। তবে অভিযোগ অস্বীকার করে দখলকারী আওয়ামী লীগ নেতা ইসমাইল মিয়া বলেন, খরিদা সূত্রে ওই জমির মালিক তার চাচা আব্দুল মতলিব। চাচার জমি তিনি ভোগদখল করে সেখানে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের অধীনে ঘর নির্মাণ করে বসবাস করছেন। এ ব্যপারে জানতে চাইলে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশেকুল বলেন- ইউনিয়ন ভূমি অফিসের মতামতসহ সংশি¬ষ্টদের প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ ‘জমি আছে ঘর নাই’ প্রকল্পের আওতায় ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা ও অবসর প্রাপ্ত সেনা সদস্য ( সেনা নং- ৩৯৬২২৩) মোঃ আব্দুস সোবহান এর মালিকানা রেকর্ডীয় ভূমিতে কোন প্রকার যাচাই-বাছাই না করে আশ্রয়ণ প্রকল্প-২ ‘জমি আছে ঘর নাই’ প্রকল্পের আওতায় প্রভাবশালী নেতা কি করে ঘর নির্মাণ করলেন এম প্রশ্নের জবাব্ েতিনি কোন সঠিক জবাব দিতে পারেননি।